Durga Puja 2025: 'সহজ পাঠ' থিমে গ্রামীণ বাংলার রূপ পুজো মণ্ডপে, অনন্য উপহার অগ্রদূতের

পুরুলিয়া জেলার আদ্রা শহরের 'অগ্রদূত সর্বজনীন দুর্গাপুজো' প্রতি বছরের মতো এবারও একটি বিশেষ থিম মণ্ডপে সেজে উঠেছে। এবছর ৫১ তম বর্ষে পদার্পণ করা এই পুজোর থিম 'সহজ পাঠ'। থিমের মধ্য দিয়ে সহজ পাঠের প্রতিটি দৃশ্য ও অনুভূতিকে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে মণ্ডপে। (ছবি ও তথ্য: শান্তনু দাস)

থিমের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে প্রতিমার নির্মাণেও এবার অভিনবত্বের ছোঁয়া স্পষ্টভাবে প্রতিফলিত হয়েছে। প্রতিমার রূপে ও সাজে নতুনত্ব দর্শনার্থীদের আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছে। এবারের দুর্গাপূজার মোট বাজেট প্রায় সাড়ে তিন লক্ষ টাকা, যা থিম ও প্রতিমা-উভয় ক্ষেত্রেই নিখুঁত পরিকল্পনার পরিচয় বহন করছে। (ছবি ও তথ্য: শান্তনু দাস)

সহজ পাঠ বাংলা সাহিত্যের এক অনন্য গ্রন্থ, যেখানে শিশুমনকে স্পর্শ করার জন্য সহজ, সাবলীল ও প্রাণবন্ত ভাষায় গ্রামবাংলার প্রকৃতি, জীবনধারা ও সাধারণ মানুষের কথা তুলে ধরা হয়েছে। অগ্রদূতের পুজো মণ্ডপের থিমে কুমোর পাড়ার গরুর গাড়ির গুরুত্বপূর্ণ চিত্রটি তুলে ধরা হয়েছে। যেখানে ওকুমোর তার গরুর গাড়ি নিয়ে পাড়ায় ঢুকছে। সেই গাড়ির উপর সাজানো রয়েছেমাটির হাঁড়ি-পাতিল, কলসির মতো নানান রকমের মাটির তৈজসপত্র। গরুর গাড়ির কঠিন অথচ ধীর গতির চলা, সেই সঙ্গে কুমোরের শান্ত-সন্তুষ্ট মুখচ্ছবি, সব মিলিয়ে গ্রামীণ জীবনের এক সুন্দর ও সরল চিত্র ফুটে উঠেছে। (ছবি ও তথ্য: শান্তনু দাস)

এবারের থিমে উল্লেখযোগ্যভাবে প্রতীকী ভাবে তুলে ধরা হয়েছে একাধিক কবিতার লাইন, যেমন, ‘কুমোর পাড়ার গরুর গাড়ি বোঝাই করা কলসি হাড়ি’, ‘হাট বসেছে শুক্রবারে, বক্সিগঞ্জের পদ্মার পারে’, এমন কিছু মধুর লাইন, যা সহজ পাঠের চরিত্র ও চিত্রনাট্যকে জীবন্ত করে তুলেছে। (ছবি ও তথ্য: শান্তনু দাস)

অন্যদিকে থিমের মাধ্যমে প্রতীকীভাবে আরও তুলে ধরা হয়েছে কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এবং আবদুল মাঝির অবদান। তাদের চিন্তা-ধারা এবং মানবিক দৃষ্টিভঙ্গির গভীরতা এখানে প্রতিফলিত হয়েছে। (ছবি ও তথ্য: শান্তনু দাস)

পাশাপাশি, কলম ও স্লেটকেও প্রতীক হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে, যা শিক্ষা ও জ্ঞানের অমূল্য উপকরণ হিসেবে তুলে ধরা হয়েছে। কলম এবং স্লেটের মধ্যে দ্বান্দ্বিক সম্পর্কটি বুদ্ধি ও সৃজনশীলতার মেলবন্ধন, যা আজও আমাদের শিক্ষার সাথে গভীরভাবে সম্পর্কিত। (ছবি ও তথ্য: শান্তনু দাস)

পুজো কমিটির সভাপতি মনোজ মুখার্জী জানিয়েছেন, "প্রতিবছরই আমরা দর্শনার্থীদের জন্য কিছু নতুন উপহার দেওয়ার চেষ্টা করি। এবছরও সেই প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে এক অনন্য থিম মণ্ডপ তৈরি করা হয়েছে। এবারের পুজো আমাদের ৫১ তম বর্ষে পদার্পণ করল। এবারের বাজেট প্রায় সাড়ে তিন লাখ টাকা।" (ছবি ও তথ্য: শান্তনু দাস)

পুজো কমিটির অন্যতম সদস্য গোবিন্দ চক্রবর্তী বলেন, "প্রতিবছরই আমরা আদ্রা তথা পুরুলিয়া জেলাবাসীকে নতুন কিছু উপহার দেওয়ার চেষ্টা করি। তারই অংশ হিসেবে এবার আমাদের ছোট্ট প্রয়াস 'সহজ পাঠ'।" (ছবি ও তথ্য: শান্তনু দাস)

পুজো কমিটির অন্যতম সদস্য গোবিন্দ চক্রবর্তী বলেন, "প্রতিবছরই আমরা আদ্রা তথা পুরুলিয়া জেলাবাসীকে নতুন কিছু উপহার দেওয়ার চেষ্টা করি। তারই অংশ হিসেবে এবার আমাদের ছোট্ট প্রয়াস 'সহজ পাঠ'।" (ছবি ও তথ্য: শান্তনু দাস)

অগ্রদূত সার্বজনীন দুর্গাপুজো কমিটির এবারের পুজো শুধু একটি আধ্যাত্মিক উৎসব নয়, বরং এটি একটি সাংস্কৃতিক উদযাপন যেখানে শিক্ষা, সাহিত্য এবং সংস্কৃতির মিশেল স্পষ্ট। (ছবি ও তথ্য: শান্তনু দাস)