কোন পোকার ডাক শুনে তাপমাত্রা মাপা যায়, রইল অবাক করা তথ্য
- Published by:Sudip Paul
Last Updated:
তাপমাত্রা মাপার জন্য বর্তমান সময়ে নানা ব্যবস্থা রয়েছে। তবে আমাদের অনেকেরই অজানা প্রকৃতিতে এমন এক প্রাণী আছে, যার ডাক শুনেই তাপমাত্রা মাপা যায়। যা জানলে অবাক হবেন আপনিও।
advertisement
1/10

তাপমাত্রা মাপার জন্য বর্তমান সময়ে নানা ব্যবস্থা রয়েছে। জ্বর মাপার জন্য ব্যবহার করি থার্মোমিটার। এছাড়া রাসায়নিক দ্রবণ বা যেকোনো দিনের তাপমাত্রা পরিমাপের জন্য আছে থার্মোকাপল, থার্মিস্টার, পাইরোমিটার, ইনফ্রারেড থার্মোমিটারসহ আরও নানা ধরনের যন্ত্র।
advertisement
2/10
তবে আমাদের অনেকেরই অজানা প্রকৃতিতে এমন এক প্রাণী আছে, যার ডাক শুনেই তাপমাত্রা মাপা যায়। পোকাটি কতবার ডাকলো সেই সংখ্যা হিসাব করেই বের করা যায় পরিবেশের তাপমাত্রা। এ জন্য অবশ্য একটুখানি গণিত দরকার হবে। পোকাটির নাম ঝিঁঝিঁ পোকা।
advertisement
3/10
নিঃশব্দ রাতে ঝিঁঝি পোকার ডাক বহু দূর থেকেও শোনা যায়। এ জন্যই ওরা সংগীতের জন্য রাতকে বেছে নিয়েছে। বেশি গরমে এদের খাদ্য বিপাক-প্রক্রিয়া বাড়ে, আর সেই সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ে পাখা ঝাপ্টানোর গতি। এই পারস্পরিক সম্পর্কটি এত নিখুঁত যে, ঝিঁঝি পোকার ডাকের গতি শুনে তাপমাত্রা কত তা বলে দেওয়া যায়।
advertisement
4/10
ঝিঁঝি পোকা কিন্তু মুখে ডাকে না। সাধারণত দুই পাখার মধ্যে বিশেষ কায়দায় ঘর্ষণে এরা শব্দ তৈরি করে। একটি পাখা ৪৫ ডিগ্রি কোণে মেলে ধরে আর তার খসখসে তলের ওপর দিয়ে অন্য পাখার প্রান্ত বিশেষ কায়দায় টেনে নিয়ে যায়। এই ঘর্ষণে শব্দ সৃষ্টি হয়।
advertisement
5/10
প্রথম ঝিঁঝিঁ পোকার ডাকের সঙ্গে তাপমাত্রার সম্পর্ক খুঁজে পেয়েছিলেন নরওয়ের বিজ্ঞানী অ্যামোস ইয়ারসন ডলবিয়ার। পরিবেশের তাপমাত্রা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ঝিঁঝিঁ পোকার ডাকের হার বৃদ্ধি পায়। আবার তাপমাত্রা কমলে পোকাটির ডাকের হারও কমে যায়।
advertisement
6/10
শুধু তাই নয়, ঝিঁঝিঁ পোকার ডাকার হার ধ্রুব। অর্থাৎ একই তাপমাত্রা এবং অনুকূল পরিবেশে ঝিঁঝিঁ পোকা নিদিষ্ট সময়ে সবসময় একই পরিমাণ ডাকে। গবেষণার মাধ্যমে বিজ্ঞানী ডলবিয়ার বুঝেছিলেন, ঝিঁঝিঁ পোকার এই ধ্রুব ডাককে কাজে লাগিয়ে গণিতের সাহায্যে তাপমাত্রা পরিমাপ করা সম্ভব।
advertisement
7/10
প্রায় ১২৫ বছর আগে, ১৮৯৭ সালে ঝিঁঝিঁ পোকার ডাককে কাজে লাগিয়ে এ বিষয়ে প্রথম একটি সমীকরণ প্রকাশ করেন ডলবিয়ার। সমীকরণটি ব্যবহার করে মিনিটে একটি ঝিঁঝিঁ পোকা কতবার ঝিঁঝিঁ ডাকলো, তার মান বসিয়ে সহজেই ফারেনহাইট স্কেলে সম্ভাব্য তাপমাত্রা বের করা যায়। ওই বিজ্ঞানীর নামানুসারে এই সমীকরণকে বলা হয় ডলবিয়ার'স ল বা ডলবিয়ারের সূত্র। সূত্রটা এরকম: T=50+[(N-40)/4]
advertisement
8/10
সূত্রটি বুঝতে রকেট সায়েন্স বা গণিতের অধ্যাপক হওয়ার দরকার নেই। একটু ভালো করে খেয়াল করলেই বোঝা যাবে। এখানে T হলো তাপমাত্রা এবং N হলো এক মিনিটে একটি ঝিঁঝিঁ পোকার ডাকের সংখ্যা। একটি স্টপ ওয়াচের সাহায্যে বা হাতঘড়ি ব্যবহার করে মিনিটে একটি ঝিঁঝিঁ পোকার ডাক গণনা করতে পারলেই হলো।
advertisement
9/10
শব্দ দিয়ে ঝিঁঝিঁ পোকারা আমাদের বলে দেয় শীত অথবা উষ্ণতার মাত্রা। যখন তারা খুব দ্রুত ডাকে তখন খুব গরম। যখন ধীরে ধীরে ডাকে তখন ঠান্ডা। ১৫ সেকেন্ডে একটি ঝিঁঝি পোকা কতবার ডাকল, তা গুনে নিন এবং এর সঙ্গে ৪০ যোগ করুন। এই যোগফলকেই ওই সময়ের আবহাওয়ার তাপমাত্রা (ফারেনহাইটে) বলে ধরে নেওয়া যায়।
advertisement
10/10
প্রজাতিভেদে ঝিঁঝিঁ পোকার ডাকের হার বাড়ে বা কমে। ফলে সব জায়গায় এই সমীকরণ ব্যবহার করা যায় না। যার জন্য আরও কয়েকজন বিজ্ঞানী নতুন কয়েকটি সমীকরণ দাঁড় করিয়েছেন৷ যেমন ওয়িক্যান্টাস ফুল্টনি (Oecanthus fultoni) প্রজাতির ঝিঁঝিঁ পোকার মাধ্যমে তাপমাত্রা বের করতে চাইলে ব্যবহার করতে হবে এই T=50+[(N-92)/4.7] সূত্রটি। আরেক প্রজাতির ঝিঁঝিঁ পোকার সাহায্যে তাপমাত্রা মাপতে চাইলে T=60+[(N-19)/3] সূত্রটি ব্যবহার করতে হবে।