TRENDING:

India News: আকাশ থেকে ওঁত পেতে ছিল আমেরিকা, পুরোই ধোঁকা দিয়েছিল ভারত! পোখরানে ভারতের পরমাণু বোমা পরীক্ষা কীভাবে হয়েছিল জানেন? আব্দুল কালামের সেই গোপন গল্প শুনে রোমকূপ দাঁড়িয়ে যাবে

Last Updated:
India News: আগে থেকেই ড. চিদাম্বরমের মেয়ের বিয়ের দিন স্থির হয়ে ছিল ২৭ এপ্রিল। বিয়ে কিছুদিনের জন্য পিছিয়ে দিতে হয়েছিল, কারণ বিয়েতে কনের বাবা হাজির না হলেই এরকম একটা সন্দেহ ছড়িয়ে পড়ত যে, খুব বড় কিছু হতে চলেছে।
advertisement
1/28
ওঁত পেতে ছিল আমেরিকা,পুরোই ধোঁকা দিয়েছিল ভারত!পোখরানে ভারতের পরমাণু বোমা পরীক্ষা কীভাবে হয়
এটা সেই সময়ের কথা, যখন অটল বিহারী বাজপেয়ী মাত্র কিছুদিন আগে প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন। প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী নরসিমহা রাও দেখা করলেন নতুন সরকার প্রধানের সঙ্গে। রাও নতুন প্রধানমন্ত্রীকে বলেছিলেন, “সব তৈরি। আপনি এগোতে পারেন।“ সংসদে আস্থা ভোটে জেতার দিন পনেরোর মধ্যে বাজপেয়ী ডেকে পাঠালেন ডিফেন্স রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন বা ডিআরডিও-র ড. এপিজে আব্দুল কালাম ও আণবিক শক্তি কমিশনের ড. আর চিদাম্বরমকে। নির্দেশ দিলেন পারমাণবিক অস্ত্র পরীক্ষার প্রস্তুতি শুরু করার।
advertisement
2/28
পরবর্তী কালে ভারতের রাষ্ট্রপতি এপিজে আব্দুল কালাম সেই সময়ে ছিলেন ডিআরডিও-র প্রধান ও প্রতিরক্ষা মন্ত্রীর বৈজ্ঞানিক পরামর্শদাতা। ড. আর চিদাম্বরম ছিলেন আণবিক শক্তি কমিশন এবং আণবিক শক্তি দফতরের চেয়ারম্যান। তৎকালীন রাষ্ট্রপতি কেআর নারায়নান ২৬ এপ্রিল থেকে ১০ মে পর্যন্ত দক্ষিণ আমেরিকার দেশগুলিতে সফরের জন্য প্রস্তুত হচ্ছিলেন। তাকে গোপনে জানানো হল, তিনি যেন তার সফর কিছুদিনের জন্য পিছিয়ে দেন।
advertisement
3/28
এদিকে আগে থেকেই ড. চিদাম্বরমের মেয়ের বিয়ের দিন স্থির হয়ে ছিল ২৭ এপ্রিল। বিয়ে কিছুদিনের জন্য পিছিয়ে দিতে হয়েছিল, কারণ বিয়েতে কনের বাবা হাজির না হলেই এরকম একটা সন্দেহ ছড়িয়ে পড়ত যে, খুব বড় কিছু হতে চলেছে। ড. কালাম পরামর্শ দিয়েছিলেন বিস্ফোরণটা বুদ্ধ পূর্ণিমার দিনেই হোক। ১৯৯৮ সালে বুদ্ধ পূর্ণিমা পড়েছিল ১১ মে।
advertisement
4/28
ভাবা এটমিক রিসার্চ সেন্টার, বার্ক-এর বিজ্ঞানীদের ২০ এপ্রিলের মধ্যেই জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল যে পরীক্ষামূলক পারমাণবিক বিস্ফোরণ ঘটানো হচ্ছে। তাদের ছোট ছোট দলে ভাগ করে পোখরানে পাঠানো শুরু হল। তাদের কেউ বাড়িতে স্ত্রীদের বলেছিলেন দিল্লিতে যাচ্ছেন, কেউ বলেছিলেন একটা সম্মেলনে যোগ দিতে যাচ্ছেন, যেখানে পরবর্তী ২০ দিন টেলিফোনেও যোগাযোগ করা যাবে না।
advertisement
5/28
মিশনটাকে পুরোপুরি গোপনীয় রাখতে বিজ্ঞানীরা নিজেদের নাম বদল করে যাত্রা করেছিলেন। কেউই সরাসরি পোখরান যাননি। অনেক ঘুরে ঘুরে তারা পৌঁছেছিলেন ভারতীয় সেনা বাহিনীর পোখরান টেস্টিং রেঞ্জে। বার্ক এবং ডিআরডিও থেকে প্রায় ১০০ জন বিজ্ঞানী জড়ো হয়েছিলেন পোখরানে। সেখানে পৌঁছানোর পর সবাইকে সেনাবাহিনীর পোশাক দেওয়া হয়েছিল। থাকার ব্যবস্থা হয়েছিল ছোট ছোট ঘরে। কাঠের পার্টিশন দেওয়া ওই ঘরগুলোতে একটাই মাত্র খাট রাখার জায়গা ছিল। বিজ্ঞানীদের অবশ্য সেনাবাহিনীর ইউনিফর্ম পরতে বেশ অসুবিধা হচ্ছিল। ওই ধরনের পোশাক পরতে যে তারা অভ্যস্ত নন।
advertisement
6/28
পরমাণু বোমাগুলির কোড নাম দেওয়া হয়েছিল ‘ক্যান্টিন স্টোর্স’। বিস্ফোরণ ঘটানোর সবুজ সঙ্কেত পাওয়ার পরে মুম্বইয়ের একটা ভূগর্ভস্থ ভল্ট থেকে কীভাবে বোমাগুলি পোখরানে আনা হবে, সেটাই ছিল সবথেকে বড় চ্যালেঞ্জ। ওই ভল্টগুলি ৮০-র দশকে বানানো হয়েছিল। প্রতিবছর বিশ্বকর্মা পুজোর দিন একবার করে খোলা হত ভল্ট। বিজ্ঞানী আর কর্মচারীরা ভল্টের দরজায় পুজো দিতেন। কখনও প্রধানমন্ত্রীরা বার্ক সফরে এলে তাদেরও ভল্ট খুলে বোমাগুলি দেখানো হত।
advertisement
7/28
একবার সেনা প্রধান জেনারেল সুন্দরজীকেও ভল্ট খুলে দেখানো হয়েছিল। টেনিস বলের থেকে কিছুটা বড় আয়তনের ছয়টা প্লুটোনিয়াম বোমা ওই ভল্টে রাখা থাকত। বলের আকৃতির একেকটা বোমার ওজন ছিল তিন থেকে আট কিলোগ্রাম। সব বোমাগুলি একটা কালো রঙের বাক্সে রাখা হত। বাক্সটা দেখলে মনে হবে আপেলের বাক্স।
advertisement
8/28
ভেতরে এমনভাবে প্যাকিং করা হয়েছিল বোমাগুলি, যাতে পোখরান নিয়ে যাওয়ার সময়ে কোনভাবে ফেটে না যায়। নিজেদের নিরাপত্তা কর্মীদের এড়িয়ে কীভাবে ওই বোমাগুলি পোখরানে নিয়ে যাওয়া হবে, সেটাই ছিল বার্কের বিজ্ঞানীদের মাথাব্যথার কারণ। শেষমেশ নিরাপত্তা কর্মীদের বলা হয় দক্ষিণ ভারতের অন্য একটা পারমাণবিক পরীক্ষাগারের পাঠানোর জন্য কিছু গুরুত্বপূর্ণ যন্ত্র বার করতে হবে। রাতের বেলায় বিশেষ একটা দরজা দিয়ে চারটি সেনা ট্রাক পৌঁছেছিল বার্কের ওই ভল্টে।
advertisement
9/28
মুম্বাইতে মাঝরাতের পরেও প্রচুর যানবাহন চলাচল করতে থাকে। তাই ঠিক হয় যে ট্র্যাফিক জ্যাম থেকে বাঁচতে আর কারও মনে যাতে কোনওরকম সন্দেহের উদ্রেক না হয়, তাই ভোর দুটো থেকে চারটের মধ্যে ট্রাকগুলিকে আনা হবে। সিনিয়র সাংবাদিক রাজ চেঙ্গাপ্পা তার বই ‘ওয়েপন্স অফ পিস, দ্য সিক্রেট স্টোরি অফ ইন্ডিয়াজ কোয়েস্ট টু বি আ নিউক্লিয়ার পাওয়ার’-এ লিখেছেন, “পয়লা মে ভোররাতে চারটি ট্রাক চুপিসারে বার্কে পৌঁছেছিল। প্রতিটা ট্রাকে পাঁচজন করে সশস্ত্র সৈন্য ছিল।“
advertisement
10/28
“ট্রাকে আর্মার্ড প্লেট লাগানো ছিল যাতে কোনও বোমা হামলা প্রতিরোধ করা যায়। দুটো কালো বাক্সকে খুব দ্রুত অন্যান্য নানা জিনিসের সঙ্গেই ট্রাকে চাপিয়ে দেওয়া হয়। ডিআরডিও-র সিনিয়র বিজ্ঞানী উমঙ্গ কাপুরের মুখ দিয়ে বেরিয়ে এসেছিল, ‘হিস্ট্রি ইজ নাও অন দ্য মুভ’, ইতিহাসের পথ চলা শুরু হল।
advertisement
11/28
চারটি ট্রাক দ্রুতগতিতে মুম্বই বিমানবন্দরের দিকে চলতে শুরু করল। যাত্রাপথটা ছিল মাত্রই তিরিশ মিনিটের। বিমানবন্দরে সব জরুরি ছাড়পত্র নিয়ে রাখা হয়েছিল আগে থেকেই। ট্রাকগুলো সরাসরি রানওয়েতে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে অপেক্ষা করছিল এ এন ৩২ পরিবহণ বিমান।
advertisement
12/28
বিমানে মাত্র চারজন সেনা সদস্য ছিলেন। এমন একটা আভাস দেওয়া হয়েছিল যেন ওটা সেনাবাহিনীর একটা রুটিন পরিবহণ বিমান। কারও ধারণা ছিল না যে ওই বিমানে যা রাখা ছিল, তা মুম্বই শহরটাকে কয়েক মূহুর্তের মধ্যে ধুলোয় মিশিয়ে দিতে পারে। ভোররাতেই এ এন ৩২ বিমানটি রওনা হয়ে দুঘন্টার মধ্যেই রাজস্থানের জয়সলমীর বিমানবন্দরে অবতরণ করল। সেখানেও অপেক্ষা করছিল কয়েকটি ট্রাক। প্রতিটা ট্রাকেই ছিলেন সশস্ত্র সেনারা। কিন্তু তারা যখন ট্রাক থেকে নামলেন, তখন তাদের হাতে থাকা অস্ত্রগুলো তোয়ালে দিয়ে মুড়ে নিয়েছিলেন।
advertisement
13/28
জয়সলমীর বিমানবন্দর থেকে যখন পোখরানের দিকে ট্রাকগুলো রওনা হল, তখন ভোরের আলো ফুটে গেছে। রাজ চেঙ্গাপ্পা লিখছেন, “পোখরানে পৌঁছানোর পরে ট্রাকগুলোকে সরাসরি 'প্রেয়ার হল' বা প্রার্থনা কক্ষে নিয়ে যাওয়া হল। সেখানেই বোমাগুলি অ্যাসেম্বল করা হয়েছিল। প্লুটোনিয়াম বলগুলো সেখানে পৌঁছানোর পরে আণবিক শক্তি কমিশনের চেয়ারম্যান ড. আর চিদাম্বরমের ধড়ে যেন প্রাণ এল।
advertisement
14/28
তার মনে পড়ছিল প্রথম পারমাণবিক বিস্ফোরণের কথা। সেবার পারমাণবিক বোমাগুলো নিজে সঙ্গে করে পোখরানে নিয়ে এসেছিলেন তিনি। পরীক্ষামূলক বিস্ফোরণের কিছুদিন আগেই বার্ক-এর পরিচালক অনিল কাকোদকরের বাবা মারা যান। শেষকৃত্যের জন্য তাকে পোখরান ছাড়তে হয়, কিন্তু দুদিনের মধ্যেই তিনি ফিরে আসেন।
advertisement
15/28
যেদিন ‘কুম্ভকর্ণ’ নামের কূপটি খোঁড়া হচ্ছে, একজন সেনা সদস্যের হাতে বিছে কামড়িয়ে দেয়। কিন্তু তিনি টুঁ শব্দটি করেননি। নিজের কাজ করে যাচ্ছিলেন। কিন্তু বিষক্রিয়ায় হাত ফুলে উঠলে সবার নজরে পড়ে, তাকে চিকিৎসকের কাছে পাঠানো হয়। আবার ‘তাজমহল’ নামের কূপটি খোঁড়ার সময়ে বুলডোজারের ধাক্কা লাগে একটা বড় পাথরে। মুহূর্তে পাথরটি গড়িয়ে যেতে শুরু করে কূপের মুখের দিকে।
advertisement
16/28
প্রায় ১৫০ মিটার গভীর কূপে পাথরটি পড়ে গেলে ভেতরে থাকা বৈজ্ঞানিক যন্ত্রপাতি, তার সব নষ্ট হয়ে যেত। কিন্তু একজন সেনা সদস্য ঝাঁপিয়ে পড়েন পাথরটির সামনে। সঙ্গে সঙ্গে আরও কয়েকজন সৈন্য এগিয়ে আসেন। গায়ের সব শক্তি দিয়ে তারা পাথরটাকে আটকে দেন।
advertisement
17/28
তৃতীয় কূপটির নাম দেওয়া হয়েছিল 'হোয়াইট হাউস'। একদিন যখন কপিকল দিয়ে কূপের ভেতরে কয়েকজন বিজ্ঞানীকে নামানো হচ্ছিল, তখন বিদ্যুৎ চলে যায়। বেশ কয়েক ঘণ্টা তাদের সেখানেই আটকে থাকতে হয়। তারা সেই সময়টা জোকস বলে হাসি মস্করা করে কাটিয়েছিলেন। বারেবারে বিদ্যুৎ বিভ্রাট কাজের সমস্যা তৈরি করছিল। আবার বিদ্যুৎ থাকলেও ভোল্টেজের ওঠা নামার কারণেও কাজে বাধা আসছিল। এতে যন্ত্রপাতি জ্বলে যাওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিচ্ছিল। তাই একটা বড় জেনারেটর আনা হল। তার কোড নাম দেওয়া হয়েছিল ‘ফার্ম হাউস’।
advertisement
18/28
পোখরানের আবহাওয়া নিয়েও সমস্যায় পড়তে হয়েছিল বিজ্ঞানীদের। একরাতে সমানে বাজ পড়তে শুরু করল আর তার সঙ্গে প্রবল ঝড়। বিজ্ঞানীরা তখন সবে 'প্রেয়ার হল' অর্থাৎ যে হল ঘরে পারমানবিক বোমাটা এসেম্বল করা হচ্ছিল, সেখান থেকে নিজেদের থাকার জায়গায় ফিরেছেন। বিজ্ঞানী এস কে সিক্কা এবং তার দলের সদস্যদের চিন্তা ছিল যে প্রেয়ার হলের ওপরে যদি বাজ পড়ে, তাহলে শুধু যে যন্ত্রপাতির ক্ষতি হতে পারে তা নয়, হঠাৎ করেই বিস্ফোরণও হয়ে যেতে পারে।
advertisement
19/28
'প্রেয়ার হল'-এ যাতে কোনও ভাবে আগুন না লাগে, তার জন্য শীতাতপ যন্ত্রও বসানো হয়নি। গরমের মধ্যে ঘর্মাক্ত কলেবরেই কাজ করতে হত বিজ্ঞানীদের। সহযোগী কর্মীর সংখ্যাও ইচ্ছে করেই কম রাখা হয়েছিল। তাই সিক্কার মতো সিনিয়র বিজ্ঞানীকেও স্ক্রুড্রাইভার দিয়ে স্ক্রু টাইট করতে হত।
advertisement
20/28
একদিকে যখন পোখরানে বৈজ্ঞানিকরা কাজ করছেন, তখন দিল্লিতে প্রধানমন্ত্রী বাজপেয়ী ডেকে পাঠালেন তার অর্থমন্ত্রী যশোবন্ত সিন্হাকে। সিন্হা তার আত্মকথা ‘রেলেন্টলেস’এ লিখেছেন, “অটল বিহারী বাজপেয়ী আমাকে তার অফিসে নয়, বাড়িতে যেতে বললেন। তার শোওয়ার ঘরে নিয়ে যাওয়া হল আমাকে। তখনই বুঝতে পেরেছিলাম খুব গুরুত্বপূর্ণ আর অত্যন্ত গোপনীয় কোনও তথ্য দিতে চলেছেন তিনি। আমি বসতেই তিনি বললেন যে ভারত পারমাণবিক পরীক্ষার প্রস্তুতি নিচ্ছে।
advertisement
21/28
“তিনি বলেছিলেন, বিশ্বের কিছু শক্তি হয়তে এজন্য ভারতের ওপরে অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা জারি করে দেবে, তাই সব প্রতিকূলতার মোকাবিলা করার জন্য আমাদের প্রস্তুত থাকতে হবে। তাই আমার মনে হল আপনাকে আগে থেকেই সতর্ক করে দিই, যাতে এরকম পরিস্থিতি এলে আপনি আগে থেকে তৈরি থাকতে পারেন,” লিখেছেন প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী যশোবন্ত সিন্হা।
advertisement
22/28
পোখরানে বিজ্ঞানীরা শুধুমাত্র রাতেই কাজ করছিলেন, যাতে তাদের ওপর দিয়ে উড়তে থাকা কৃত্রিম উপগ্রহগুলো তাদের দেখতে না পায়। রাজ চেঙ্গাপ্পা লিখছেন, “এক রাতে একটা উপগ্রহ দেখতে পেলেন বিজ্ঞানী কৌশিক। তিন ঘণ্টার মধ্যে তিনি আরও চারটে উপগ্রহ ঘুরতে দেখলেন। বিষয়টি তিনি ডিআরডিও-র কর্নেল বি বি শর্মাকে জানালেন, ‘স্যার, মনে হচ্ছে ওরা কিছু সন্দেহ করছে, নাহলে এক রাতেই কেন এতগুলো উপগ্রহ ওপরে ঘোরাঘুরি করছে?’। শর্মা বললেন, আমাদের আরও সাবধানে কাজ করতে হবে।“
advertisement
23/28
১৯৯৫ সালে যখন নরসিমহা রাও পারমাণবিক পরীক্ষা চালানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন, সেটা আমেরিকার উপগ্রহে ধরা পড়ে গিয়েছিল। সেই সময়ে বিস্ফোরণের পরে কূপগুলি বুজিয়ে ফেলার জন্য প্রচুর পরিমাণে যে বালি জমা করা হয়েছিল, সেই ছবি যুক্তরাষ্ট্রের উপগ্রহগুলো পেয়ে যায়। সেখানে বড় সংখ্যায় গাড়ি চলাচলও ধরা পড়েছিল আমেরিকার উপগ্রহে।
advertisement
24/28
১৯৯৮ সালে সিআইএ পোখরানের ওপরেই চারটে উপগ্রহ রেখেছিল, কিন্তু পরীক্ষার কিছুদিন আগে মাত্র একটা উপগ্রহই পোখরানের ওপরে নজরদারি চালাত, সেটাও সকাল ৮টা থেকে বেলা এগারোটা পর্যন্ত। পরীক্ষামূলক বিস্ফোরণের একদিন আগে উপগ্রহ থেকে পাওয়া ছবি বিশ্লেষণের জন্য আমেরিকায় মাত্র একজন বিজ্ঞানী ডিউটিতে ছিলেন। তিনি ভেবেছিলেন পরের দিন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের বিষয়টি জানাবেন। কিন্তু যখন পরের দিন কর্মকর্তাদের সামনে ওই ছবিগুলি এল, ততক্ষণে অনেক দেরি হয়ে গেছে।
advertisement
25/28
১১ মে পরীক্ষামূলক বিস্ফোরণের দিন সকালে এপিজে আব্দুল কালাম প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনে ফোন করে জানালেন, বাতাসের গতি বেশ কমে এসেছে, তাই পরবর্তী এক ঘণ্টার মধ্যে বিস্ফোরণ ঘটানো যেতে পারে। প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনে ভারতের প্রথম জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ব্রজেশ মিশ্রকে বেশ নার্ভাস লাগছিল। বাজপেয়ীর সচিব শক্তি সিন্হা প্রধানমন্ত্রীর কাছে কিছু জরুরি ফাইল নিয়ে এসেছিলেন। সেদিন ছিল শক্তি সিন্হার জন্মদিন। তাকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানাতে যারা ফোন করছিলেন, তাদের কলগুলো তিনি ইচ্ছা করেই রিসিভ করছিলেন না।
advertisement
26/28
ওদিকে পোখরানে আবহাওয়া দফতরের রিপোর্ট এসে পৌঁছেছিল। ঠিক ৩টে ৪৫ মিনিটে মনিটরে লাল ‌আলোর আভা দেখা গেল, আর এক সেকেন্ডের মধ্যেই তিনটে মনিটরেই চোখ ধাঁধিয়ে দেওয়া আগুনের ছবি দেখা গেল। হঠাৎই সব মনিটরেই ছবি স্থির হয়ে যায়। তার থেকেই বোঝা গেল যে কূপের ভেতরে বসানো ক্যামেরাগুলি বিস্ফোরণে নষ্ট হয়ে গেছে। ভূগর্ভের তাপমাত্রা এক লাখ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেডে পৌঁছে গিয়েছিল। ড. কালামের মুখ থেকে যখন কথা বেরলো, তিনি বললেন, “আমরা বিশ্বে পরমাণু শক্তির দেশগুলোর প্রভুত্ব সমাপ্ত করলাম। একশো কোটি মানুষের দেশকে এখন থেকে আর অন্য কেউ বলতে পারবে না যে আমাদের কী করা উচিত। এখন আমরাই ঠিক করব যে আমরা কী করব।“
advertisement
27/28
‘তাজমহল’ নামের কূপটি থেকে বিস্ফোরণের ফলে একটা হকি মাঠের সমপরিমাণ বালি উঠে এসেছিল। সেই সময়ে ডিআরডিও-র কর্নেল উমঙ্গ কাপুর একটা হেলিকপ্টারে চেপে নজর রাখছিলেন বিস্ফোরণ স্থলের দিকে। তিনি দেখেছিলেন ধুলোকণার একটা বন্যা যেন মাটি থেকে উঠে আসছে। বিজ্ঞানীরা অনুভব করছিলেন যে তাদের পায়ের তলায় মাটি প্রবলভাবে কেঁপে উঠছে। পোখরানে তো বটেই, সারা দেশের সব সিস্মোগ্রাফই ভয়ঙ্কর ভাবে কেঁপে উঠেছিল।
advertisement
28/28
বাঙ্কারে অপেক্ষারত বিজ্ঞোনীরা দৌড়ে বাইরে বেরিয়ে এসেছিলেন। বালির পাহাড় একবার উঠে যাওয়া আর আবার ভূপৃষ্ঠে নেমে আসার ওই অসাধারণ দৃশ্য সবাই নিজের চোখে দেখতে চাইছিলেন। নিরাপদ দূরত্বে পাহারায় থাকা সেনা সদস্যরা যখনই ওই বিশাল বালির পাহাড় উঠতে দেখলেন, সবাই ‘ভারত মাতা কি জয়’ বলে উঠেছিলেন।
বাংলা খবর/ছবি/দেশ/
India News: আকাশ থেকে ওঁত পেতে ছিল আমেরিকা, পুরোই ধোঁকা দিয়েছিল ভারত! পোখরানে ভারতের পরমাণু বোমা পরীক্ষা কীভাবে হয়েছিল জানেন? আব্দুল কালামের সেই গোপন গল্প শুনে রোমকূপ দাঁড়িয়ে যাবে
দেশের সব লেটেস্ট খবর ( National News in Bengali ) এবং বিদেশের সব খবর ( World News in Bengali ) পান নিউজ 18 বাংলায় ৷ দেখুন ব্রেকিং নিউজ এবং টপ হেডলাইন নিউজ 18 বাংলার লাইভ টিভিতে ৷ ডাউনলোড করুন নিউজ 18 বাংলার অ্যাপ অ্যান্ড্রয়েড এবং আইওএস-এ ৷ News18 Bangla-কে গুগলে ফলো করতে ক্লিক করুন এখানে ৷
Open in App
হোম
খবর
ফটো
লোকাল