TRENDING:

ফরিদাবাদে ৩৫০ কেজি অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট উদ্ধার! এই রাসায়নিকটি কী এবং তা কেন বিপজ্জনক!

Last Updated:
advertisement
1/7
ফরিদাবাদে ৩৫০ কেজি অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট উদ্ধার! এই রাসায়নিকটি কী এবং তা কেন বিপজ্জনক!
দিল্লির কাছাকাছি এলাকায় বিপুল পরিমাণে বিস্ফোরক বাজেয়াপ্ত হওয়ার পর ফের প্রশ্ন উঠছে বিশ্বের সবচেয়ে কড়া নজরদারির আওতায় থাকা এক রাসায়নিক পদার্থ — অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট (Ammonium Nitrate) নিয়ে। রবিবার রাতে ফরিদাবাদ থেকে প্রায় ৩৫০ কিলোগ্রাম অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট উদ্ধার হয়, সঙ্গে পাওয়া যায় একটি অ্যাসল্ট রাইফেল, গুলি ও বিস্ফোরক টাইমার।
advertisement
2/7
এই উদ্ধার অভিযানটি শুরু হয়েছিল শ্রীনগর থেকে, যখন নওগাম এলাকায় কিছু পোস্টার দেখা যায় যাতে দোকানদারদের কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে ব্যবসা না করার হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছিল। সেই ঘটনার সূত্রে পাওয়া CCTV ফুটেজ পুলিশকে নিয়ে যায় সহারানপুরে, যেখানে কাশ্মীরি বংশোদ্ভূত এক চিকিৎসক ডা. আদিলকে গ্রেফতার করা হয়। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, ফরিদাবাদে তাঁর সহযোগী ডা. মুজ্জামিল বিপুল পরিমাণ বিস্ফোরক পদার্থ মজুত করে রেখেছেন। সেখানে তল্লাশি চালিয়ে পুলিশ উদ্ধার করে অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট-সহ বিস্ফোরক তৈরির অন্যান্য উপকরণ।
advertisement
3/7
অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট কী?অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট একটি সাদা, গন্ধহীন স্ফটিকের মতন পদার্থ, যার রাসায়নিক সংকেত NH₄NO₃। এটি অ্যামোনিয়া ও নাইট্রিক অ্যাসিড মিশিয়ে তৈরি করা হয়, ফলে এতে প্রচুর নাইট্রোজেন থাকে। এটি একটি লবণজাত পদার্থ, তাই সহজেই জলে দ্রবণীয়, এবং কৃষিক্ষেত্রে সার হিসেবে ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়।বিশ্বজুড়ে এটি বিপুল পরিমাণে উৎপাদিত হয় এবং তুলনামূলকভাবে সস্তা। কৃষিক্ষেত্রের বাইরে এর অক্সিজেনসমৃদ্ধ গঠন এটিকে খনি বা পাথর ভাঙার কাজে ব্যবহৃত নিয়ন্ত্রিত বিস্ফোরণের জন্য মূল্যবান উপাদান করে তুলেছে।সংক্ষেপে বললে, এটি এমন এক রাসায়নিক যার বৈধ শিল্প ও কৃষি ব্যবহার আছে, কিন্তু ভুলভাবে পরিচালিত হলে তা ভয়াবহ ক্ষতির কারণ হতে পারে।
advertisement
4/7
কেন এটি বিপজ্জনক হতে পারে?বিশুদ্ধ অবস্থায় অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট রাসায়নিকভাবে স্থিতিশীল ও সহজে দাহ্য নয়। এটি নিজে থেকে বিস্ফোরণ ঘটাতে পারে না; সাধারণত বাহ্যিক ডিটোনেটর বা উচ্চ তাপমাত্রা প্রয়োজন হয়। তবে এটি একটি অক্সিডাইজার, অর্থাৎ এটি অন্য পদার্থের দহনকে তীব্রতর করে।নিরাপদে সংরক্ষণ করলে এটি তেমন ঝুঁকি তৈরি করে না। কিন্তু দূষণ, অতিরিক্ত গরম বা বায়ু চলাচলের অভাব এটিকে অস্থিতিশীল করে তুলতে পারে। আর বিপুল পরিমাণে জমা থাকলে ঝুঁকিও বেড়ে যায়।সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এটি আর্দ্রতা শোষণ করে শক্ত পিণ্ডে পরিণত হয়, যা আগুন লাগলে আরও তীব্রভাবে জ্বলে এবং নিয়ন্ত্রণ করা প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়ে।অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট সাধারণত দুইভাবে বিস্ফোরণ ঘটাতে পারে —আগুন বা দূষিত পদার্থের সংস্পর্শে এলে,অথবা জ্বালানি বা অন্য কোনো বিস্ফোরক উপাদানের সঙ্গে মেশানো হলে।জ্বালানি তেলের সঙ্গে মিশলে এটি তৈরি করে ANFO (Ammonium Nitrate Fuel Oil) — খনন ও নির্মাণকাজে ব্যবহৃত একটি শক্তিশালী কিন্তু সস্তা শিল্প বিস্ফোরক। তবে সঠিক নিয়ন্ত্রণ না থাকলে একই মিশ্রণ মারণাস্ত্র বা বোমা হিসেবেও ব্যবহৃত হতে পারে।এটি এমনকি চিনি বা অন্য দাহ্য পদার্থের সঙ্গেও প্রতিক্রিয়া করতে পারে, যদি তাপ ও চাপ উপস্থিত থাকে। একবার বিস্ফোরণ শুরু হলে এর অক্সিডাইজিং প্রকৃতি বিক্রিয়াকে বজায় রাখে এবং বিশাল পরিমাণে শক্তি ও তাপ উৎপন্ন করে।
advertisement
5/7
১৯৯০-এর দশকে IRA (Irish Republican Army) এটি ব্যবহার করে লন্ডনে বিস্ফোরণ ঘটায়।১৯৯৫ সালে ওকলাহোমা সিটি হামলায় টিমোথি ম্যাকভে দুই টন অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট ব্যবহার করেন, যাতে ১৬৮ জনের মৃত্যু হয়।২০০২ সালের বালি নাইটক্লাব হামলাতেও এটি ব্যবহার করা হয়, যাতে ২০০-র বেশি মানুষ প্রাণ হারান।আফগানিস্তানে মার্কিন সেনাদের বিরুদ্ধে ব্যবহৃত বহু IED (Improvised Explosive Device)-এও এই রাসায়নিক ছিল।
advertisement
6/7
ভারতে কীভাবে নিয়ন্ত্রিত হয় অ্যামোনিয়াম নাইট্রেটভারত অ্যামোনিয়াম নাইট্রেটের ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ করে Explosives Act, 1884-এর অধীনে, এবং ২০১২ সালে এর জন্য বিশেষ বিধি প্রণয়ন করা হয়।যে কোনো মিশ্রণ যেখানে ৪৫% বা তার বেশি অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট থাকে, সেটিকে বিস্ফোরক হিসেবে শ্রেণিবদ্ধ করা হয়।এর উৎপাদন, সংরক্ষণ, পরিবহন ও বিক্রির জন্য লাইসেন্স প্রয়োজন, এবং জনবহুল এলাকায় সংরক্ষণ নিষিদ্ধ। আমদানি ও রফতানিও কড়া নিয়ন্ত্রণে থাকে, যাতে অপব্যবহার রোধ করা যায়। এই বিধিগুলোর উদ্দেশ্য হল, রাসায়নিকটি যেন কেবল অনুমোদিত কৃষি ও শিল্প ক্ষেত্রে, এবং লাইসেন্সপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের মাধ্যমেই ব্যবহৃত হয়।
advertisement
7/7
কেন ফরিদাবাদ উদ্ধার অভিযানটি উদ্বেগজনকঅ্যামোনিয়াম নাইট্রেট নিজে অবৈধ নয়, এবং এটি নিজের থেকে বিস্ফোরিতও হয় না। কিন্তু এর সঙ্গে যদি বিস্ফোরক টাইমার, অস্ত্র ও গুলি পাওয়া যায়, তবে তা গুরুতর নিরাপত্তা উদ্বেগ সৃষ্টি করে।৩৫০ কিলোগ্রাম অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট যথেষ্ট পরিমাণে বিপজ্জনক, যা সামান্য পরিবর্তনে বিস্ফোরক মিশ্রণে পরিণত হতে পারে।তার উপর, ফরিদাবাদ দিল্লি এনসিআর অঞ্চলের অংশ, ফলে এমন রাসায়নিকের অনিয়ন্ত্রিত ব্যবহার বা ভুল সংরক্ষণ মারাত্মক পরিণতি ডেকে আনতে পারত।
বাংলা খবর/ছবি/দেশ/
ফরিদাবাদে ৩৫০ কেজি অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট উদ্ধার! এই রাসায়নিকটি কী এবং তা কেন বিপজ্জনক!
দেশের সব লেটেস্ট খবর ( National News in Bengali ) এবং বিদেশের সব খবর ( World News in Bengali ) পান নিউজ 18 বাংলায় ৷ দেখুন ব্রেকিং নিউজ এবং টপ হেডলাইন নিউজ 18 বাংলার লাইভ টিভিতে ৷ ডাউনলোড করুন নিউজ 18 বাংলার অ্যাপ অ্যান্ড্রয়েড এবং আইওএস-এ ৷ News18 Bangla-কে গুগলে ফলো করতে ক্লিক করুন এখানে ৷
Open in App
হোম
খবর
ফটো
লোকাল