সর্ষে, তিল, বাদাম...! শীতে স্বাস্থ্যের জন্য 'সেরা' কোন তেল জানেন? 'ভুল' তেল খেলে ছুটতে হবে হাসপাতাল!

শীতকাল এলে শরীরকে ভিতর থেকে উষ্ণ রাখা, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা শক্তিশালী করা এবং ত্বককে শুষ্কতা থেকে রক্ষা করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। শীতকাল হল সেই সময় যখন বাড়তে থাকে হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি। আর সেই কারণেই এই সময় সুস্বাস্থ্য রক্ষা করার জন্য সঠিক তেল নির্বাচন করা অত্যন্ত জরুরি।

সর্ষের তেল, তিলের তেল এবং বাদাম তেল, যা সাধারণত আমাদের রান্নাঘরে ব্যবহৃত হয়, এর প্রতিটির বিশেষ বৈশিষ্ট্য এবং উপকারিতা রয়েছে। আসুন জেনে নেওয়া যাক কোন উপায়ে এগুলো কার্যকর হয় এবং এর মধ্যে কোন তেলটি শীতকালে সবচেয়ে উপকারী।

পুষ্টিবিদ এবং ওজন কমানোর বিশেষজ্ঞ লিমা মহাজন ২৬শে সেপ্টেম্বরের তাঁর ইনস্টাগ্রাম পোস্টে জনপ্রিয় ভারতীয় রান্নার তেলের রেট দিয়েছেন এবং প্রকাশ করেছেন কোন তেলগুলি প্রতিদিনের ব্যবহারের জন্য সত্যিই স্বাস্থ্যকর। শীতে কোন তেলে খেলে সুস্থ্য থাকবেন।

শীতকালে রান্নায় সর্ষের তেল ব্যবহার করলে শরীরের প্রাকৃতিক উপকারিতা পাওয়া যায়। কারণ এই তেলের অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট বৈশিষ্ট্য রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় দুর্দান্ত ভাবে।

অন্যদিকে ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড হৃদরোগজনিত সমস্যা থেকে রক্ষা করে। সর্ষের তেল শরীরের রক্ত ​​সঞ্চালন উন্নত করে, শরীরে ঠান্ডা কমায় এবং শরীরের উষ্ণতা বৃদ্ধি করে।

শীতকালে চুল পড়া এবং ত্বক কালো হয়ে যাওয়ার মতো সমস্যার জন্যও এই তেলটি খুবই উপকারী। তবে, একই তেল অতিরিক্ত গরম করে বারবার ব্যবহার করা স্বাস্থ্যের জন্য কিন্তু ভয়ঙ্কর ক্ষতিকর হতে পারে।

তিলের তেলের কথা বলতে গেলে, আয়ুর্বেদ কেন এটিকে 'শীতের তেল' বলে তা সহজেই বোঝা যায়। তিলের তেল শরীরকে ভিতর থেকে উষ্ণতা প্রদান করে। এটি জয়েন্টের ব্যথা, শক্ত হয়ে যাওয়া এবং পিঠের ব্যথার মতো সমস্যাগুলির জন্য প্রাকৃতিক উপশম প্রদান করে।

তিলের তেল দিয়ে ম্যাসাজ করলে শরীর শক্তি পায় এবং রক্ত ​​সঞ্চালন উন্নত হয়। এতে উপস্থিত ক্যালসিয়াম, জিঙ্ক এবং ম্যাগনেসিয়াম হাড়কে শক্তিশালী রাখে। এই তেল ত্বকের শুষ্কতা কমাতে খুবই কার্যকর হয়, বিশেষ করে শীতকালে।

শীতের রান্নায় বাদাম তেল গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এটি কেবল শরীরকে প্রয়োজনীয় শক্তিই সরবরাহ করে না, বরং ভিতরে উষ্ণতার অনুভূতিও বজায় রাখে। এর হাই স্মোক পয়েন্ট এটিকে ডিপ ফ্রাইয়ের জন্য খুবই উপযুক্ত করে তোলে।

ভিটামিন ই, উদ্ভিজ্জ প্রোটিন এবং ভাল চর্বি থাকায় এটি হৃদরোগের ঝুঁকি এড়ানোর জন্যও খুব উপকারী প্রমাণিত হয়েছে। অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ক্ষতিকারক ফ্রি র‍্যাডিক্যাল থেকে শরীরকে রক্ষা করে বাদাম তেল। তবে, বাদামের অ্যালার্জি থাকা ব্যক্তিদের এই তেল সম্পূর্ণরূপে এড়িয়ে চলাই উচিত।

শীতকালে কোন তেল ব্যবহার করবেন? এটি আপনার শরীরের চাহিদা এবং স্বাস্থ্যের অবস্থার উপর নির্ভর করে। হৃদরোগের সমস্যা থাকলে সর্ষের তেল সবচেয়ে ভাল ও উপকারী প্রমাণিত হবে।

আবার শুষ্ক ত্বকের সমস্যা বা জয়েন্টে ব্যথা থাকলে তিলের তেল খুবই ভাল ও কার্যকরী হবে। বাড়িতে ভাজা খাবার যেমন ভাতের সঙ্গে টুকটাক ভাজাভুজি, মুড়ুক্কু, নিমকির মতো স্ন্যাক্স, লুচি পরোটা রান্না করলে চিনাবাদাম তেল সবচেয়ে ভাল ও কার্যকরী হবে।

তবে, মনে রাখবেন, কেবল একটি নির্দিষ্ট তেল নয়। তিনটি তেল সুষমভাবে ব্যবহার করলেই শীতকালে শরীরের সামগ্রিক স্বাস্থ্য নিশ্চিত হবে।

উদাহরণস্বরূপ, সর্ষের তেলে শাকসবজি, তিলের তেলে মিষ্টি এবং চিনাবাদাম তেলে খাবার রান্না স্বাস্থ্যের জন্য ভাল হবে অব আর একই সঙ্গে এই ভাবে ব্যবহার রান্নার স্বাদ বাড়ায়। প্রতিদিনের খাবার হবে আরও বেশি সুস্বাদুও!