Vitamin: কোন 'ভিটামিন'-এর অভাবে 'ডার্ক সার্কল' হয়? চোখের তলায় 'কালি' পড়ে? দামি ক্রিম-লোশন নয়, জেনে নিন কী কী খেলে সমস্যা মিটবে

চোখের তলায় কালি? ডার্ক-সার্কল? কমবেশি সবাই-ই এই সমস্যায় ভুগে থাকেন। কিন্তু বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ডার্ক সার্কল শুধুমাত্র সৌন্দর্য সংক্রান্ত সমস্যা নয়। বা শুধুমাত্র ঘুমের অভাবে চোখের তলায় কালি পড়ে না। এর নেপথ্যে রয়েছে বড় কারণ। ডার্ক সার্কল-এর মূল কারণ নিহীত শরীরের অন্দরে। একাধিক গবেষণায় দেখা গিয়েছে, শরীরে নির্দিষ্ট কিছু ভিটামিনের ঘাটতি হলে চোখের তলায় কালি পড়ে।

বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, শরীরে ভিটামিন ডি, ভিটামিন কে, ভিটামিন ই ও নির্দিষ্ট কিছু ভিটামিন বি-র পরিমাণ কমে গেলে চোখের তলায় কালি পড়ে, দেখা দেয় ডার্ক সার্কল। কাজেই পার্লারে ছুটে কিংবা হাজার হাজার টাকার ক্রিম-লোশন মেখে এই সমস্যার সমাধান হবে না। ডার্ক সার্কল রুখতে শরীরের ভিতর থেকে ভিটামিনের ঘাটতি মেটাতে হবে। কী কী খাবারে এই সমস্যা মেটে?

ভিটামিন-ডি-- এটি একটি স্নেহপদার্থে দ্রবণীয় ভিটামিন। অনেকসময়-ই একে বলে ‘সাইশাইন ভিটামিন’। তৈলাক্ত মাছে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন ডি থাকে। পাশাপাশি, মানুষের ত্বক রোদের সংস্পর্শে এলে শরীরে ভিটামিন ডি উৎপন্ন হয়। সামুদ্রিক মাছ, দুগ্ধজাত খাদ্য ও ডিমে ভিটামিন-ডি পাওয়া যায়।

হাড় শক্তিশালী করতে এবং পেশির যত্ন নিতে ভিটামিন ডি অপরিহার্য। গবেষণা জানাচ্ছে, ভারতের মোট জনসংখ্যার প্রায় ৭৬ শতাংশই ভিটামিন ডি-র অভাবে ভোগেন। শুধু হাড় মজবুত করতেই নয়, অস্থিসংক্রান্ত নানা রোগ, অস্টিয়োপোরেসিস-এর মতো রোগের ঝুঁকি কমায়। তা ছাড়া রোগ প্রতিরোধেও ভিটামিন ডি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

ভিটামিন কে--প্রাকৃতিকভাবে ভিটামিন কে পাওয়া যায় সবুজ শাক, সবজি, ডিমের কুসুম, মাংসের মেটে ও চিজ-এ।

অতিরিক্ত ভিটামিন-ডি যাতে শরীরের ক্ষতি না করতে পারে তার জন্য বিশেষজ্ঞরা অনেক সময় এই ভিটামিনের সঙ্গে ভিটামিন-কে খাওয়ার পরামর্শ দেন। ভিটামিন-ডি যেখানে রক্তে ক্যালসিয়ামের মাত্রা বৃদ্ধি করে সেখানে ভিটামিন-কে হাড়ে ক্যালসিয়াম সঞ্চয়ের হার বৃদ্ধি করে। ফলে রক্তে ক্যালসিয়ামের মাত্রা কমে যায়। কমে হৃদরোগের ঝুঁকিও।

ভিটামিন-ই-- এটি এক জাতীয় ফ্যাটে দ্রবণীয় ভিটামিন যা অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট হিসাবে কাজ করে। ভিটামিন ই হার্টের অসুখ, অনেক ধরণের ক্যানসার ও মস্তিষ্কের সমস্যা রোধ করে। ভিটামিন ই-র একটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ হল, রক্তনালীতে রক্ত জমাট বাঁধতে না দেওয়া।

কোন কোন খাবারে পাওয়া যায় ভিটামিন-ই? তেলের মধ্যে সয়াবিন তেল, সানফ্লাওয়ার তেল, উইট জার্ম অয়েল, কর্ন অয়েল। বাদাম ও বীজের মধ্যে সূর্যমুখীর বীজ, কাঠবাদাম, পিনাট বাটার। ফলের মধ্যে কিউই, আম, টোম্যাটো। সবজির মধ্যে পালং শাক, ব্রকোলি।

ত্বক ও চুলের নানা সমস্যার সমাধান করতে পারে ভিটামিন-ই। ত্বকের আর্দ্রতা ধরে রাখতে, চোখের তলায় কালি তুলতে ইদানীং অনেকেই ভিটামিন-ই ক্যাপসুল ব্যবহার করছেন। এমনকী শীতকালে শুষ্ক ত্বকের সমস্যা থেকে মুক্তি পেতেও ফেস মাস্কের সঙ্গে ভিটামিন-ই ক্যাপসুল মিশিয়ে মুখে মাখা যায়।

রোজ কতটা ভিটামিন-ই নিরাপদ? বিশেষজ্ঞদের মতে, প্রতিদিন ১৫ মিলিগ্রাম ভিটামিন-ই খাওয়া যায়।

ভিটামিন ডি, ভিটামিন কে, ভিটামিন ই ও নির্দিষ্ট কিছু ভিটামিন বি-র ঘাটতি ছাড়াও আরও কিছু স্বাস্থ্যগত কারণে চোখের তলায় কালি পড়ে। যেমন, অ্যালার্জি, শরীর শুষ্ক হয়ে যাওয়া, অ্যানেমিয়া, থাইরয়েড ও কিডনির সমস্যা। অনেক সময় জেনেটিক কারণেও ডার্ক সার্কল হয়।