ধন্বন্তরি এই ৪ 'শাক'...! মেলে মাত্র ৪ মাস, হাড়ের যত্নে 'ওষুধ' সমান, লিভারের অসুখে 'যম', নাম নোট করে এখনই ছুটুন বাজার

শাক খেতে ভালবাসেন অনেকেই। কিন্তু জানেন কী শাক শুধু স্বাদের জন্যই নয়, স্বাস্থ্যের জন্যও মোক্ষম হতে পারে আমাদের গ্রাম বাংলার মাঠে ঘাটে পুকুরের ধরে জন্মানো কিছু সবুজ শাক সবজি। কিছু কিছু শাক সস্তা বলে আমরা বাজারে দেখেও দেখি না, কিন্তু আয়ুর্বেদের মতো এমনই অচেনা কিছু শাকেই আছে অব্যর্থ পুষ্টিগুণ!

আজ এই প্রতিবেদনে এমন কিছু শাকের হদিস শেয়ার করা যাক যা হাড়ের জন্য ধন্বন্তরি। আয়ুর্বেদের মতে, প্রতিদিন এই শাক খেলে ক্যালসিয়াম ট্যাবলেট খাওয়ার প্রয়োজন হবে না।

রাঁচির আয়ুর্বেদিক চিকিৎসক ভি কে পাণ্ডে তাঁর পরামর্শে বলেন, বিশেষ করে মহিলাদের বেশি করে এই শাক খাওয়া উচিত। এই শাক হাড়কে খুব শক্তিশালী করে এবং মেরুদণ্ডকেও চাঙ্গা করে তোলে। শুধু নির্দিষ্ট কয়েক মাসই পাওয়া যায় এই শাক।

গ্রাম বাংলায় পরিচিত একটি ঔষধি গুণ সম্পন্ন শাক হল ফুটকল শাক। এই শাকের প্রভাব এতটাই শীতল যে আপনার যদি জন্ডিসের মতো রোগ থাকে, তাহলে এটি তাও নিরাময় করতে পারে। আপনি যদি এই শাকটি নিয়মিত খান, তাহলে গ্যারান্টি দিয়ে বলা যায় আপনার জীবনে লিভারের কোনও সমস্যা হবে না।

এই অদ্ভুত গুণের শাকটি পেটের তাপ কমায় এবং লিভারকে বিষমুক্ত করে। এটি আপনার মুখে প্রাকৃতিক উজ্জ্বলতা আনবে এবং আপনার শরীরে রক্ত ​​সঞ্চালনও ঠিক থাকবে। এতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ই এবং সি রয়েছে যা দৃষ্টিশক্তি উন্নত করে।

আরেকটি অপূর্ব স্বাস্থ্যগুণের আধার হল, ঘেনারী শাক। এতে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম পাওয়া যায়। মনে রাখবেন আপনার যদি মাঝেমাঝেই শরীরে হাড় ফাটার শব্দ হয় অথবা উঠতে বসতে হাঁটু কটকট করে তবে তা হল হাঁটুতে ক্ষয় এবং মেরুদণ্ডে ব্যথার সমস্যার লক্ষণ।

এই ধরণের সমস্যায় কিন্তু এই ঘেনারী শাক ১০০% সমাধান। তবে মনে রাখবেন, শুধু হাড়ের সমস্যা হলেই এটি খাওয়া শুরু করবেন, তা না, বরং হাড়ের সুস্বাস্থ্যের জন্য আগে থেকেই আপনার খাদ্যতালিকায় অন্তর্ভুক্ত করুন এই শাকটি।

এছাড়াও, এতে পটাশিয়াম, জিঙ্ক, ম্যাগনেসিয়ামের মতো প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদান রয়েছে, যা হাড় থেকে শুরু করে পেশী পর্যন্ত সবকিছুকে শক্তিশালী করে। একজন ব্যক্তি প্রতিদিন এটি খেতে পারেন।

পুঁই শাকের কথা বলতে গেলে, এতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এবং খনিজ পদার্থ রয়েছে। এতে ভিটামিন এ বি সি ডি-র মতো সব ধরণের পুষ্টি উপাদান রয়েছে। আর সেই কারণেই এটি দৃষ্টিশক্তি থেকে পেশী শক্তি, শরীরের শক্তি থেকে রক্তের অভাব পর্যন্ত প্রতিটি সমস্যা দূর করে দেয় শরীর থেকে।

এই শাকের আরেকটি ভাল দিক হল, আপনি এই শাকটি দিয়ে মুচমুচে পাকোড়া তৈরি করেও খেতে পারেন, আবার এই শাক ভাত পাতেও খেতে পারেন। এতো সুস্বাদু এই শাক যে এটি দিয়ে পেটের ভাত খেয়ে নেওয়া যায়।

সুস্বাস্থ্যের জন্য এটি খুবই কার্যকর একটি শাক। তবে খুব বেশি তেল এবং মশলা মিশিয়ে এটি না খাওয়ার চেষ্টা করুন। সাদামাটা ভাবে খেলেই আপনি এই শাকের সমস্ত পুষ্টি উপাদান পাবেন।

আরও একটি দুর্দান্ত ঔষধি গুণের শাক হল কৈরি শাক। পুষ্টির বিচারে এই শাক পালং কলমির মতো শাককেও দিতে পারে দশ দশ গোল। বিশেষ করে বর্ষাকালে পাওয়া যায় এই শাকটি।

গ্রামের আদিবাসী মহিলারা বন বাদার থেকে খুঁজে খুঁজে এগুলো তুলে নিয়ে আসেন এই শাকের স্বাস্থ্যগুণের জন্য। শহরের বাজারেও নিয়ে এসে বসেন অনেক শাকওয়ালী। শহুরে এলাকাতেও কিছু জায়গায় এটি পাবেন। তবে দেখলেই আর দেরি না করে অবিলম্বে এটি কিনে ফেলুন।

প্রচুর পরিমাণে আয়রন এবং ওমেগা ফ্যাটি অ্যাসিড রয়েছে এই কৈরী শাকে। আপনার মস্তিষ্ককে শক্তিশালী করে এবং মস্তিষ্কের কোষগুলিকে সক্রিয় করে তোলে এই শাকটি। আপনার খাদ্যতালিকায় এই সবুজ শাকসবজির যে কোনও একটি অন্তর্ভুক্ত করুন তাহলেই কিন্তু আপনি পেতে পারেন অসাধারণ উপকারিতা।