ইউরিক অ্যাসিডকে বলুন 'টাটাবাইবাই'! ঘরে মেনে চলুন কিছু জিনিস, ওষুধ খেতে হবে না আর!

নতুন খাদ্যাভ্যাস ও জীবনধারার পরিবর্তনের ফলে আজকাল অনেকেই ইউরিক অ্যাসিডের সমস্যায় ভুগছেন। এতে গাঁটে ব্যথা, গাউটের সমস্যা দেখা যায়। পায়ের বুড়ো আঙুলে ফোলা ও ব্যথা, হাঁটুর সন্ধিতে অস্বস্তি—এসবই ইউরিক অ্যাসিড বেড়ে যাওয়ার লক্ষণ।

কিছু ক্ষেত্রে কিডনিতে স্টোনও তৈরি হয়। কিন্তু ঘরোয়া কিছু উপায়ে এই ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা সহজেই নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়। কোনো রকম ওষুধ ছাড়াই কীভাবে এই সমস্যার মোকাবিলা করা যায়, দেখে নিন—

১. শসা শসা ইউরিক অ্যাসিড নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। এতে পুরিনের পরিমাণ কম এবং জলীয় অংশ প্রায় ৯৫ শতাংশ। শসায় থাকা উপাদানগুলি শরীর থেকে ইউরিক অ্যাসিড ও বর্জ্য পদার্থ বের করে দেয়। ফলে কিডনি ভালোভাবে রক্ত ফিল্টার করতে পারে এবং ইউরিক অ্যাসিড মূত্রের মাধ্যমে শরীর থেকে বেরিয়ে যায়।

কী ভাবে খাবেন: কাঁচা শসা খেতে পারেন। লেবু-নুন মিশিয়ে স্যালাড হিসেবে খাওয়া যায়। অথবা শসার স্লাইস, লেবুর রস আর কিছু পুদিনা পাতা এক গ্লাস জলে ভিজিয়ে রেখে, পরদিন সকালে খালি পেটে সেই জল খেলে ভালো ফল মিলবে।

২. ভিটামিন সি সমৃদ্ধ ফল ভিটামিন সি ইউরিক অ্যাসিডকে নিউট্রালাইজ করে। এটি অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট হিসেবে কাজ করে এবং শরীরের বর্জ্য মূত্রের মাধ্যমে বের করে দেয়। আমলকি, কমলালেবু, লেবু ও পেয়ারা—এই সব ফল ভিটামিন সি-তে ভরপুর। এগুলি শরীর ডিটক্স করে, রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় ও সুস্থ রাখে।

৩. যব (বার্লি) আয়ুর্বেদে যবের একটি বিশেষ স্থান আছে। যাঁরা গাউট বা গাঁটে ব্যথায় ভুগছেন, তাঁদের জন্য যব অত্যন্ত উপকারী। এর মধ্যে থাকা পুষ্টিগুণ শরীর থেকে ইউরিক অ্যাসিড দূর করে এবং শরীরকে ডিটক্সিফাই করে।

কীভাবে খাবেন: যব ভিজিয়ে রেখে সেই জল সকালে খালি পেটে খান। অথবা সেদ্ধ করে পোরিজ বা খিচুড়ি বানিয়ে খেতে পারেন।

৪. জল যদি শরীরে ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা বেশি হয়, তাহলে জল বেশি করে খাওয়া উচিত। এতে কিডনির কার্যকারিতা ভালো হয়। ফলে রক্ত দ্রুত ফিল্টার হয় এবং ইউরিক অ্যাসিড মূত্রের মাধ্যমে বেরিয়ে যায়। বিশেষজ্ঞরা বলেন, ইউরিক অ্যাসিডের সমস্যায় দিনে কমপক্ষে ২-৩ লিটার জল খাওয়া উচিত। টিপস: চিনি ছাড়া লেবুর রস মিশিয়ে জল খাওয়া যেতে পারে। এটি অ্যালকালাইন হিসেবে কাজ করে ও ইউরিক অ্যাসিড নিয়ন্ত্রণে রাখে।

ইউরিক অ্যাসিড শরীরে তৈরি হয় কীভাবে? কিছু খাবারে পুরিন নামে একটি যৌগ থাকে—বিশেষ করে প্রোটিনযুক্ত খাবারে। শরীরে এই পুরিন ভেঙে ইউরিক অ্যাসিড নামে একটি বর্জ্যপদার্থ তৈরি হয়। স্বাভাবিক অবস্থায় এই অ্যাসিড মূত্রের মাধ্যমে শরীর থেকে বেরিয়ে যায়। কিন্তু শরীরে ইউরিক অ্যাসিডের পরিমাণ অতিরিক্ত বেড়ে গেলে গাউট, গাঁটে ব্যথা ও কিডনিতে পাথরের মতো সমস্যা দেখা দেয়।

জীবনযাপনে সামান্য পরিবর্তন ও ঘরোয়া খাবার নিয়ম করে খেলেই ওষুধ ছাড়াই ইউরিক অ্যাসিডের দাপট কমানো সম্ভব। শরীরের ভারসাম্যই আসল চাবিকাঠি।