Kalimpong offbeat Destination: ৩৬০ ডিগ্রি কাঞ্চনজঙ্ঘা ভিউ, প্রকৃতির আঁচলে লুকিয়ে অফবিট 'এই' পাহাড়ি গ্রাম, পুজোর ছুটিতে ঘুরে আসুন কাগে

*দার্জিলিং, ঋত্বিক ভট্টাচার্য: শহরের কোলাহল, ব্যস্ততা আর যান্ত্রিক জীবন থেকে মুক্তি খুঁজতে গেলে পাহাড়ের কোলে লুকিয়ে থাকা কাগে নামের ছোট্ট গ্রামটি হতে পারে এক আদর্শ গন্তব্য। প্রকৃতির নিভৃত আশ্রয় যেন এখানে ছড়িয়ে আছে প্রতিটি বাঁকে, প্রতিটি সবুজে।

*দার্জিলিং জেলার লেপচাজগত থেকে কয়েক কিলোমিটার দূরেই কাগে। পাহাড়ের ঢালে সাজানো ধাপ চাষ, সারি সারি চা বাগান, আর নির্জনতার শান্ত মাধুর্য মিলেমিশে এই গ্রামকে করেছে অনন্য। গ্রামে ঢুকতেই চোখে পড়বে কাঠ আর টিনে তৈরি ছোট ছোট বাড়ি। লাল ছাদের নীচে সাদামাটা ঘরগুলো যেন পাহাড়ি জীবনের সহজ সরলতাকে ফুটিয়ে তোলে।

*যাঁরা শহরের ব্যস্ত জীবন থেকে কিছুটা শান্ত সময় কাটাতে চান, তাঁদের জন্য কাগে হতে পারে উপযুক্ত জায়গা। ভিড়ভাট্টা থেকে দূরে, এখানে নেই গাড়ির হর্ন বা কোলাহল। বরং আছে ঝিঁঝিঁ পোকার ডাক, পাহাড়ি হাওয়ার শীতল ছোঁয়া আর পাখির কলতান। সকালে চোখ মেলে তাকালে দূরের তুষারশৃঙ্গ আর মেঘে ঢাকা পাহাড়ি ঢাল মনে এনে দেয় অন্য রকম প্রশান্তি।

*এখনও খুব বেশি পরিচিত নয় কাগে। তাই ভিড়ের পর্যটন কেন্দ্রের মতো নয় এই গ্রাম। তবে ধীরে ধীরে হোমস্টে তৈরি হচ্ছে, যেখানে পর্যটকরা থাকেন এবং স্থানীয় পাহাড়ি খাবারের স্বাদ নিতে পারেন। এখানকার মানুষ অতিথিপরায়ণ, তাঁরা চা-বাগান ঘুরিয়ে দেখান, পাহাড়ি পথ হাঁটিয়ে নিয়ে যান। পর্যটকদের উপস্থিতি স্থানীয় অর্থনীতিরও সম্ভাবনা বাড়াচ্ছে।য়ে দেখান, পাহাড়ি পথ হাঁটিয়ে নিয়ে যান। পর্যটকদের উপস্থিতি স্থানীয় অর্থনীতিরও সম্ভাবনা বাড়াচ্ছে।ছবি ও তথ্য : ঋত্বিক ভট্টাচার্য

*কাগে ঘুরতে এলে কাছেই লেপচাজগত, লামাহাট্টা বা তাকদার মতো সুন্দর জায়গাও ঘুরে দেখা যায়। চারপাশের বন, ঝর্ণা আর সবুজ প্রান্তর ভ্রমণপিপাসুদের জন্য এক অন্যরকম অভিজ্ঞতা।

*ট্রেন: প্রথমে নিউ জলপাইগুড়ি (NJP) স্টেশনে নামতে হবে। ফ্লাইট: নিকটবর্তী বিমানবন্দর হলো বাগডোগরা। রাস্তা: শিলিগুড়ি থেকে দার্জিলিংমুখী রাস্তায় গাড়ি বা শেয়ার ট্যাক্সি পাওয়া যায়। লেপচাজগত থেকে কাগে মাত্র ৬-৭ কিলোমিটার দূরে। ছোট গাড়ি বা জিপে সহজেই পৌঁছনো যায়। ভ্রমণে গেলে স্থানীয় ড্রাইভার নিলে সুবিধা হয়, কারণ রাস্তা সরু ও বাঁকানো। এছাড়া থাকতে চাইলে পাহাড়ি হোমস্টেগুলোই সেরা পছন্দ, যেখানে স্থানীয় খাবারের স্বাদও পাওয়া যায়।

*আজকের দিনে যখন প্রকৃতির সঙ্গে মানুষের দূরত্ব ক্রমেই বাড়ছে, তখন কাগে যেন হয়ে উঠছে এক টুকরো শান্তির আশ্রয়। প্রকৃতির কোলে ক’দিন কাটিয়ে আবার নতুন শক্তি নিয়ে ফিরে আসা যায় শহরের জীবনে। তাই যারা প্রকৃতিকে ভালবাসেন, তাদের জন্য কাগে হতে পারে এক অনন্য গন্তব্য।