শীতেও চকচক করবে জবাগাছের পাতা...! ফুলে ফুলে, কুঁড়িতে কুঁড়িতে ছেয়ে যাবে গাছ, শিঁকড়ে ঢেলে দিন 'জাদুকরী' জল, এক 'কায়দাতেই' ম্যাজিক!

শীতের শুরুতে বাগানের জবা গাছগুলি কেমন ফ্যাকাশে হয়ে যায়। গ্রীষ্ম এবং শরৎকালে প্রচুর পরিমাণে ফুল ফোটানোর পর শীত পড়তেই যেন গাছটি হঠাৎ ফুল ফোটা বন্ধ করে দেয়। কুঁড়িও আসতে চায় না।

পারদ নামতে না নামতেই জবা গাছের পাতাও কেমন ফ্যাকাসে, রংহীন হয়ে যায়, আগের ঔজ্জ্বল্য আর ধরে রাখে না। কখনও কখনও, পাতাগুলি হলুদ হয়ে যায় এবং ঝরে পড়তে শুরু করে, যা দেখে আপনিও আঁতকে ওঠেন, গাছটা মরে না যায়।

কিন্তু সত্যি হল, একটু সঠিক যত্ন এবং বিশেষ এক জল দিলে, জবা গাছটি কয়েকদিনের মধ্যেই আবারও প্রচুর পরিমাণে বৃদ্ধি পেতে পারে ম্যাজিকের মতো। এই প্রসঙ্গে প্রত্যন্ত গ্রামের এক সামান্য কৃষক, ভাগীরথ প্যাটেল ব্যাখ্যা করেন এক দারুণ রেমেডি।

কৃষকের কথায়, যে কোনও গ্রীষ্মমন্ডলীয় গাছের যত্নে মূলত সূর্যালোক এবং উষ্ণতা কি-ফ্যাক্টর। শীতকাল আসার সঙ্গে সঙ্গে গাছটি নেতিয়ে পরে, এই সময় শক্তি সংরক্ষণের জন্য গাছটি তার বৃদ্ধি ধীর করে দেয়। তবে, এই গাছটি শীতকালেও ম্যাজিকের মতো ফুল ফোটাতে পারবে! কিন্তু কীভাবে…?

শীতকালে জবা গাছের পাতা হলুদ হয় কেন?শীতকালে জবাগাছের পাতা সামান্য হলুদ হয়ে যাওয়া সাধারণ ব্যাপার। তবে অতিরিক্ত হলুদ হয়ে যাওয়া যত্নের অভাবকে নির্দেশ করে। এর অনেক কারণ আছে। ঠান্ডার কারণে শিকড় সঙ্কুচিত হয় এবং পুষ্টি শোষণ করতে অক্ষম হয়।

যদি কম রোদ থাকে, তাহলে গাছের ক্লোরোফিল কমে যায়, যার ফলে পাতা হলুদ দেখাতে শুরু করে। শীতকালে মাটি ধীরে ধীরে শুকিয়ে যায়। এমন পরিস্থিতিতে অতিরিক্ত জল দিলে ছত্রাকের সংক্রমণও হতে পারে।

গাছে কুঁড়ি আসা বন্ধ হয়ে যায় এবং পুরোনো পাতা নিজে থেকেই ঝরে পড়তে শুরু করে, তাই আতঙ্কিত হবেন না, ঘাবড়াবেন না, একটু যত্ন নিলেই গাছটি আবার শক্তিশালী হয়ে উঠবে।

শীতকালে সূর্যের আলো সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ:জবা গাছ সবসময় উজ্জ্বল সূর্যালোক পছন্দ করে। গ্রীষ্মকালে, এমনকি আংশিক সূর্যালোকও যথেষ্ট, তবে শীতকালে এর জন্য কমপক্ষে ৬-৭ ঘণ্টা সরাসরি সূর্যালোক প্রয়োজন। গাছটিকে এর জন্য দক্ষিণ বা দক্ষিণ-পূর্ব দিকে রাখার চেষ্টা করুন।

গাছটিকে এমন বারান্দায় রাখা এড়িয়ে চলুন যেখানে কম সূর্যালোক থাকে। যদি প্রতিদিন সূর্যালোক না পাওয়া যায়, তাহলে অবশ্যই সপ্তাহে ২-৩ বার ২-৩ ঘণ্টার জন্য এটিকে রৌদ্রোজ্জ্বল জায়গায় স্থানান্তর করুন।

অচিরেই সূর্যালোক পেয়ে, গাছটি তার পুরনো শক্তি ফিরে পাবে এবং ধীরে ধীরে নতুন কুঁড়ি তৈরি করতে শুরু করে। আর ফুলে ফুলে ভরে যাবে গাছ! বাগানে মুহূর্তে আসবে চমক!

অল্প পরিমাণে জল দিন, কিন্তু সঠিক সময়ে।শীতকালে মাটি দ্রুত শুকিয়ে যায় না, তাই জল সবসময় বিচক্ষণতার সঙ্গে দেওয়া উচিত। সপ্তাহে মাত্র ১-২ বার জল দিন। মাটির উপরের অংশ ২ ইঞ্চি পর্যন্ত শুকিয়ে গেলে সর্বদা জল দিন।

অতিরিক্ত জল শিঁকড়ের ক্ষতি করে এবং পাতা হলুদ করে দেয়। কিন্তু এখন এই কাজে এক বিশেষ জলের উপযোগিতা জেনে নেওয়া যাক যা জাদু দেখাবে নিমেষে। আসুন জেনে নেওয়া যাক কী ভাবে বানাবেন এই বিশেষ জল যা এমনকি বড় বড় বাগানীরাও ব্যবহার করেন।

৪. গাছের গোড়ায় এই বিশেষ জল যোগ করুন, গাছটি ফুল ফোটবে:শীতকালে জবা গাছের একটু বিশেষ পুষ্টিকর জলের প্রয়োজন হয়। এই জল গাছকে দ্রুত শক্তি দেয় এবং গাছের নতুন কুঁড়ি তৈরি করতে সাহায্য করে।

এক বালতি জলে এক মুঠো সর্ষের খোসা ১২ ঘণ্টা ভিজিয়ে রাখুন। সকালে, এই জলটি ফিল্টার করুন এবং ১ ভাগ দ্রবণ ২ ভাগ পরিষ্কার জলের সঙ্গে মিশিয়ে নিন। মাসে মাত্র দুবার এই দ্রবণ দিয়ে গাছে জল দিন।

এই দ্রবণটি গাছে নাইট্রোজেন, ফসফরাস এবং পটাসিয়াম সরবরাহ করে, যার কারণে গাছের পাতাও চকচকে সবুজ থাকবে এবং গাছ শীতকালেও ফুল দেওয়ার জন্য প্রস্তুত হয়ে যাবে। তারপরেই ফুটবে ফুলের পর ফুল।