Heart Attack Reason: খারাপ জীবনযাত্রা ও এক্সারসাইজের অভাব শুধু নয়, হার্ট অ্যাটাকের জন্য দায়ী এই 'মামুলি' কারণগুলিও! এখনই জানুন...

হার্টের যত্ন নেওয়া শুরু হয় ছোট ছোট পরিবর্তনের মাধ্যমে—আর এটি বোঝা খুব জরুরি যে হার্টকে আসলে কী কী প্রভাবিত করে।

আমরা প্রায়ই মনে করি হার্ট ফেইলিউর কেবল তাদেরই হয় যারা খারাপ খাবার খান বা এক্সারসাইজ করেন না। কিন্তু CK Birla Hospital, Delhi-র কার্ডিওলজি বিভাগের পরামর্শদাতা ডঃ সঞ্জীব কুমার গুপ্তর মতে, এর পেছনে আরও অনেক কারণ রয়েছে, যেগুলো আমরা প্রায়ই এড়িয়ে যাই।

ঠিকমতো না ঘুমালে হার্টের ঝুঁকি বাড়ে রাতে দেরি করে ঘুমানো বা ঘুম ঠিকঠাক না হওয়া হার্টের ওপর খারাপ প্রভাব ফেলে। ডঃ গুপ্ত বলেন, “চিরকালীন ঘুমের ঘাটতি কোনো বাহাদুরি নয়; বরং এটি হার্ট ফেইলিউর, স্ট্রোক ও হঠাৎ হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি বাড়ায়।” তাই প্রতিদিন ভালো ঘুম পাওয়া অত্যন্ত জরুরি।

দূষণ শুধু ফুসফুস নয়, হার্টকেও ক্ষতি করে দূষিত বাতাসে নিঃশ্বাস নেওয়া যেমন ফুসফুসের ক্ষতি করে, তেমনই এটি হার্টের ধমনিগুলোকেও শক্ত করে তোলে। ডঃ গুপ্তর মতে, “প্রতিদিন যানজট বা বায়ু দূষণের সংস্পর্শে এলে আর্টারির শক্ত হওয়া ও অ্যাথেরোস্ক্লেরোসিসের ঝুঁকি বাড়ে।” শহরে থাকলে দূষণ কম সময় ব্যবহার করার চেষ্টা করুন, ঘরে এয়ার ফিল্টার ব্যবহার করুন।

স্ট্রেস বা মানসিক চাপ হার্টের বড় শত্রু অনেকেই চাপ সামলে নেওয়ার চেষ্টা করেন, কিন্তু এতে শরীরের ক্ষতি হয়। “চিরকালীন মানসিক চাপ কর্টিসলের মাত্রা বাড়িয়ে দেয়, যা উচ্চ রক্তচাপ ও ইনফ্ল্যামেশনের কারণ হয়,” বলেন ডঃ গুপ্ত। তাই হাঁটাহাঁটি, লিখে আবেগ প্রকাশ, অথবা কারও সঙ্গে কথা বলা মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য ভালো এবং হার্টেরও উপকার করে।

মুখের যত্ন মানেই হার্টের যত্ন আপনি যদি মনে করেন দাঁতের যত্ন কেবল দাঁতের জন্যই দরকার, তাহলে ভুল ভাবছেন। “গাম ডিজিজ বা মাড়ির রোগ সিস্টেমিক ইনফ্ল্যামেশন বাড়ায়, যা হার্ট অ্যাটাকের কারণ হতে পারে,” বলেন ডঃ গুপ্ত। তাই নিয়মিত দাঁতের যত্ন ও ডেন্টাল চেকআপ করা আবশ্যক।

সবাই কিন্তু সহজে স্বাস্থ্যকর খাবার পান না যাঁরা “ফুড ডেজার্ট”-এ থাকেন, মানে যেখানকার আশেপাশে স্বাস্থ্যকর খাবার পাওয়া যায় না, তাদের জন্য ভালো খাওয়া অনেক কঠিন। ডঃ গুপ্ত বলেন, “সবার খাবার বেছে নেওয়ার সুযোগ সমান নয়, এবং এটি হার্টের স্বাস্থ্যে প্রভাব ফেলে।” তাই শহর পরিকল্পনায় সুস্থ খাবার সহজে পাওয়ার সুযোগ থাকা উচিত।

গাট হেলথ বা পেটের স্বাস্থ্য হার্টের উপর প্রভাব ফেলে পেট আর হার্ট আলাদা বিষয় মনে হলেও, আসলে তারা পরস্পর সংযুক্ত। “গাট হেলথের প্রভাব রক্তচাপ, কোলেস্টেরল ও ইনফ্ল্যামেশনের ওপর পড়ে, যা হার্টকে প্রভাবিত করে,” বলেন ডঃ গুপ্ত। ফাইবার, ফার্মেন্টেড খাবার ও কম প্রসেসড খাবার খাওয়া হার্টের জন্যও ভালো।

শেষ কথা কী? শুধু তেল-মশলা কম খাওয়া বা নিয়মিত হাঁটার মধ্যেই হার্ট কেয়ার সীমাবদ্ধ নয়। “এই বিষয়গুলো আলাদা কিছু নয়, একে অপরের সঙ্গে গভীরভাবে সংযুক্ত। স্বাস্থ্যকর হার্টের জন্য ব্যক্তিগত সচেতনতা যেমন জরুরি, তেমনই বড় পরিবর্তনও প্রয়োজন—নিরাপদ শহর, পুষ্টিকর খাবারে সহজ প্রবেশাধিকার, ভালো ঘুম, মানসিক স্বাস্থ্যের যত্ন ও ডেন্টাল কেয়ার,” বলেন ডঃ গুপ্ত।

আপনার হার্ট কেবল আপনার খাদ্যাভ্যাস বা এক্সারসাইজের উপর নির্ভর করে না, বরং দৈনন্দিন জীবনের পুরো পরিবেশের উপর নির্ভর করে।

Disclaimer: এই খবরের মধ্যে দেওয়া ওষুধ/স্বাস্থ্য সম্পর্কিত পরামর্শ বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে আলোচনা করে প্রাপ্ত। এটি সাধারণ তথ্য এবং ব্যক্তিগত পরামর্শ নয়। তাই ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া কোনও কিছু ব্যবহার না করার জন্য অনুরোধ করা হচ্ছে। নিউজ18 বাংলা কোনও ব্যবহারে ক্ষতির জন্য দায়ী থাকবে না।