ছোটবেলায় বার বার 'ন্যাড়া' হলে কি চুল ঘন হয়? শিশুদের মাথা কামালে কী হয়? জানুন আসল সত্য!

শিশুদের মাথা কামিয়ে দেওয়া হয় চুল গজালেই। ছোটবেলায় বার বার ন্যাড়া হলে কি চুল ঘন হয়? এই ধারণার সত্যতা কী? কেন এমন ধারণার প্রচলন? জেনে নিন আসল কারণ।

অনেকের মধ্যেই এই ধারণা আছে যে, শিশুর মাথা বারবার কামালে চুল ঘন হবে। বহু পরিবার প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে এই বিশ্বাস মেনে চলে আসছে। কিন্তু এর কোনও বৈজ্ঞানিক ভিত্তি আছে কি?

ডাক্তাররা স্পষ্ট জানাচ্ছেন, শিশুর মাথা কামালে চুল ঘন হয় না। চুলের বৃদ্ধি নির্ভর করে হরমোন ও জিনগত গঠনের ওপর। শেভ করার বিষয়টি মূলত ঐতিহ্যগত কারণে করা হয়।

শিশুর চুলের বৃদ্ধি মাথার ত্বকের পরিবর্তনের ওপর নির্ভর করে না, বরং তা হরমোন ও জিনগত গঠনের ফল। চুল ছাঁটা বা কামানোর ফলে চুলের ঘনত্ব বাড়ে না। অনেক বাবা-মা মনে করেন, শেভ করার ফলে চুল আরও ঘন ও মোটা হয়ে গজায়।

কিন্তু ডাক্তারদের মতে, চুলের প্রাকৃতিক বৃদ্ধির ধরন সম্পূর্ণভাবে নির্ভর করে জিনের ওপর। নবজাতকদের মাথায় যে চুল থাকে, তা খুবই নরম ও পাতলা, যা "ভেলাস চুল" নামে পরিচিত। এই চুল স্বাভাবিকভাবেই পড়ে যায় এবং নতুন চুল গজায়।

চুল ঘন হওয়া বা মোটা হওয়ার প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ স্বাভাবিকভাবে ঘটে, যা বয়স ও হরমোনজনিত পরিবর্তনের সঙ্গে সম্পর্কিত। তবে অনেকেই ভুল ধারণা পোষণ করেন যে, মাথা কামালে এই প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত হয়। বাস্তবে, এটি মূলত ঐতিহ্যবাহী রীতি হিসেবে প্রচলিত।

অনেক পরিবারে শিশুর মাথা কামানোর বিষয়টি একটি ধর্মীয় বা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হিসেবে দেখা হয়। তবে বৈজ্ঞানিকভাবে, চুল ঘন করার জন্য শেভ করা জরুরি নয়। সাধারণত, শিশুর মাথায় নতুন চুল ৬ মাস থেকে ১২ মাসের মধ্যে গজাতে শুরু করে। কিছু শিশুর ক্ষেত্রে ১ থেকে ১.৫ বছর বয়সে চুলের ঘনত্ব বৃদ্ধি পায়।

চুল স্বাস্থ্যকর রাখতে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা ও সঠিক পুষ্টি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। মাথার তালুতে সঠিক তেল মালিশ ও পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখলে চুল স্বাস্থ্যকরভাবে গজাবে। কিন্তু ডাক্তাররা নিশ্চিত করেছেন যে, শেভ করার ফলে চুল ঘন হওয়ার কোনও বৈজ্ঞানিক প্রমাণ নেই।

কিছু বাবা-মা মনে করেন, গরমের সময় শিশুর মাথা কামালে তাদের আরাম লাগবে। এটি সত্যি হতে পারে, তবে এটি চুল ঘন করার কোনো উপায় নয়। বরং এটি শুধু মাথার ত্বককে বাতাসের সংস্পর্শে এনে ঠান্ডা রাখতে সাহায্য করতে পারে।

সুতরাং, বাবা-মায়েরা যেন এই ভুল ধারণা থেকে বেরিয়ে এসে শিশুর চুলের সঠিক যত্ন নেন, সেটাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।