Gay Marriage: ভয় ছিল রাস্তায় ঢিল ছুড়বে না তো, তবু প্রেমের টানে আর এক পুরুষকে বিয়ে অভিষেকের
- Published by:Teesta Barman
Last Updated:
বিয়ের আগে হন্যে হয়ে পুরোহিতের সন্ধান করেছেন অভিষেক। কিন্তু কেউ রাজি হননি। কেউ বলেছেন, ''এ সব আবার কী?'' কেউ বলেছেন, ''এগুলো তো আজকালকার ছেলেমেয়েদের ফ্যাশন হয়েছে।''
advertisement
1/16

২০২০ সাল থেকে প্রেম গুরগাঁওয়ের চৈতন্য শর্মা এবং কলকাতার বিখ্যাত পোশাকশিল্পী অভিষেক রায়ের। একে অপরকে আরও ভাল করে চিনে নেওয়ার জন্য সময় দিয়েছেন তাঁরা।
advertisement
2/16
তার পরেই গত বছর শীতেই সাতপাকে ঘুরবেন বলে স্থির করেন। কিন্তু চৈতন্যর দিদি বিদেশে থাকেন বলে তাঁর দেশে ফেরার জন্য অপেক্ষা করে বিয়ে ঠিক হয় গত ৩ জুলাই, রবিবার।
advertisement
3/16
হিন্দুমতে বিয়ে করলেন দুই পুরুষ। এই প্রথম শহর সমকামী বিয়ে দেখল। নিউজ18 বাংলাকে অভিষেক তাঁর বিয়ের অনুষ্ঠানের বিস্তারিত বর্ণনা দিলেন। পোশাকশিল্পীর কথায়, ''আমাদের বিয়েতে সমস্ত কন্যাদান এবং সিঁদুরদান সমস্ত রীতি মানা হয়েছে।''
advertisement
4/16
কী কী হয়েছে? প্রথমে রথযাত্রার দিন দুই পরিবারের তরফে আশীর্বাদ অনুষ্ঠান। মারওয়াড়িদের মতে যে অনুষ্ঠানের নাম, তিলক। পরিবার এবং ঘনিষ্ঠদের উপস্থিতিতে এই অনুষ্ঠান আয়োজিত হয়।
advertisement
5/16
শনিবার বিকেলে পাঁচ তারা হোটেলে মেহেন্দি, সঙ্গীত এবং ককটেল পার্টিতে মেতেছিলেন দুই পাত্রের বন্ধুবান্ধব এবং পরিবার। রবিবার সকালে গায়ে হলুদ সেরে বিকেলে বিয়েতে বসেছিলেন চৈতন্য-অভিষেক।
advertisement
6/16
অভিষেক বললেন, ''বিয়েতে যা যা হয়, তাই করেছি আমরা। আমার এক বন্ধু ওর গাড়িটি সাজিয়ে পাঠিয়েছিল, তাতে করে আমরা হোটেলে যাই। মণ্ডপে ঢোকার আগে প্রচুর নাচানাচি হয়। তার পর ঠাকুরমশাই আমাদের বসিয়ে নারায়ণপুজো করালেন।''
advertisement
7/16
বাঙালি পাত্রের কথায় জানা গেল, প্রথমে মালাবদল করেছেন দুই প্রেমিকে। তার পরে পুজোয় বসেছেন। একে একে সাতপাকে ঘোরা, খই পোড়ানো, যোজ্ঞ সমস্ত কিছুই হয়েছে। কেবল বিয়েতে কোনও কন্যা ছিল না বলে কন্যাদান হয়নি। হয়নি সিঁদুরদানও।
advertisement
8/16
বিয়ের আগে হন্যে হয়ে পুরোহিতের সন্ধান করেছেন অভিষেক। কিন্তু কেউ রাজি হননি। কেউ বলেছেন, ''এ সব আবার কী?'' কেউ বলেছেন, ''এগুলো তো আজকালকার ছেলেমেয়েদের ফ্যাশন হয়েছে।''
advertisement
9/16
অনেক কটূক্তি শোনার পর অভিষেক নিজের বাড়ির পুরোহিত মশাইকে ডাকেন। যিনি বহু বছর ধরে তাঁদের বাড়ির পুজো করছেন। প্রথমে তাঁকে মিথ্যা বলেন অভিষেক। বলেন, তাঁর তুতো ভাই এক ছেলেকে বিয়ে করতে চান। তিনি সেই বিয়ে দিতে রাজি কি? পুরোহিত মশাইয়ের উত্তরে চমকে যান অভিষেক।
advertisement
10/16
তিনি বলেন, ''না দেওয়ার কী আছে? বিয়ে মানে তো দুই মনের মিলন। আমাদের গ্রামে কত ছেলেময়ে আছে, যাঁরা সমকামী। কিন্তু লোকে জানতে পারলে বাঁশবাগানে নিয়ে গিয়ে গলা কেটে দেবে।''
advertisement
11/16
তখন সাহস পেয়ে অভিষেক বলেন, ''ঠাকুরমশাই বিয়েটা আমি করব। আমার তুতো ভাই নয়।'' পুরোহিত যেন আরও খুশি হয়ে যান। বলেন, ''আপনারা পড়াশোনা ককরা মানুষ। এখনই তো নিজেদের বিদ্যা কাজে লাগাতে পারবেন। আপনারা না করলে কেউ সাহস করে পা বাড়াবে না।''
advertisement
12/16
সেই পুরোহিত মন্ত্র পড়ার সময়ে প্রত্যেক শব্দের অর্থ বুঝিয়েছেন দুই বরকে। মনের আনন্দে বিয়ে দিয়েছেন দুই মনের। জয়গান গেয়েছেন প্রেমের।
advertisement
13/16
অভিষেকের মা-বাবা দু'জনেই প্রয়াত। মা প্রায় ২০ বছর আগে চলে গিয়েছেন। তখনও নিজেই ভাল করে বুঝে উঠতে না পারায় মাকে কিছু বলেননি অভিষেক। কিন্ত বাবা চলে যান ২০১৮ সালে। তত দিনে বাবা খুব ভাল করে জানতেন ছেলের যৌন পরিচয় সম্পর্কে।ছ কোনও দিন ছেলেকে নিয়ে কোনও সমস্যা হয়নি তাঁর।
advertisement
14/16
চৈতন্যর বাড়িতে বিয়েতে রাজি করাতে খানিক সময়ে লেগেছে বটে। কিন্তু আজ তাঁর বাড়িতে জামাই আদর হয় অভিষেকের। চৈতন্যের মা এই বিয়েতে ছিলেন। সঙ্গে ছিলেন তাঁদের রাজস্থানের আত্মীয়রাও। সবাই নেচে, গেয়ে, পেটপুজো করে, ছবি তুলে আনন্দে মেতেছিলেন।
advertisement
15/16
অভিষেক জানালেন, এ দেশে সমকামী বিয়ে এখনও আইনসম্মত নয় বলে তাঁরা রেজিস্ট্রি করতে পারেননি। কিন্তু ২০১৮ সালে ৩৭৭ ধারা তুলে দেওয়ার পর থেকে দেশে সমকামিতা অপরাধ বলে গণ্য করা হয় না। তাই তাঁরা আনুষ্ঠানিক বিয়ে করেছেন কেবল। আইনি স্বীকৃতি হয়তো নেই, কিন্তু প্রেম এবং মনের সাহসে ভর করেই সংসার পাতবেন তাঁরা।
advertisement
16/16
অভিষেকের কথায় জানা গেল, একটু একটু ভয় হচ্ছিল তাঁর। কী জানি, রাস্তায় বেরোলে যদি কেউ ঢিল ছোড়ে? কিন্তু গতকাল বিয়ে করার পর থেকে আর একটুও ভয় হচ্ছে না তাঁর। কারণ দেশ-বিদেশ থেকে সোশ্যাল মিডিয়ায় তাঁকে যে ভাবে সমর্থন জানানো হয়েছে, তিনি বুঝেছেন, তাঁদের পাশে অনেক মানুষ আছেন। সর্বোপরি তাঁদের পরিবার এবং আত্মীয়রা আছে। তাই আজ নবদম্পতি সুখে শান্তিতে ঘর করার অঙ্গীকার নিয়েছেন রামধনু রঙের নেশায়।