Knowledge News: মানুষের প্রস্রাবেই কি রয়েছে বিশ্ব বাঁচানোর চাবিকাঠি? জানুন বিস্তারিত...
- Published by:Pooja Basu
- news18 bangla
Last Updated:
ফ্রান্সে একটি গবেষণা অনুযায়ী, আগামিদিনে সারা বিশ্বের কৃষিক্ষেত্রে সার হিসেবে আমাদের মূত্রের উপর নির্ভর করতে হবে। এর জন্য নানাভাবে পরীক্ষা চলছে৷
advertisement
1/8

*মানুষের প্রস্রাবকে সার হিসেবে কি ব্যবহার করা সম্ভব? ফ্রান্সের এক শীর্ষ গবেষণা বলছে যে কৃষিক্ষেত্রে এবং আমাদের খাদ্যের সম্ভার বাঁচাতে প্রস্রাবের গুরুত্বের জুড়ি মেলা ভার! কীভাবে? জানতে, পড়ুন... ফ্রান্সের একটি গবেষণা এই সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছে যে মানুষের প্রস্রাব উদ্ভিদকে জীবন ও পুষ্টি দেওয়ার ক্ষমতা রাখে৷ এর ফলে আমরা কৃত্রিম সারের ব্যবহার কমাতে পারি। কীভাবে এটা বাস্তবায়ন করা যায়, গবেষণায় সেই সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য উঠে এসেছে৷ মানুষের প্রস্রাবকে সারে রূপান্তর করা হলে তা শুধু জৈব সার হিসেবেই কাজ করবে না, কৃষি উৎপাদনে ব্যবহৃত রাসায়নিক সারের ফলে যে পরিবেশ দূষণ হয়, তাও রোধ করবে।
advertisement
2/8
*ফ্রান্সের বিখ্যাত ওয়েবসাইট France24 এ বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য উঠে এসেছে। উদ্ভিদের প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদান হল নাইট্রোজেন, ফসফরাস এবং পটাসিয়াম। আমরা যখন খাবার খাই তখন এই তিনটি জিনিস আমাদের খাবারের মাধ্যমে আমাদের পাকস্থলীতে পৌঁছায়। আমাদের মূত্রের মাধ্যমে তা শরীর থেকে বের হয়৷
advertisement
3/8
*ফ্যাবিয়ান এসকুলিয়ার-এর অধীনে এই গবেষণা হয়েছে৷ তিনি ফ্রান্সের ওকাপাই (OCAPI research programme) প্রোগরামের হেড । ফুড সিস্টেম এবং হিউম্যান ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্ট অর্থাৎ মানব বর্জ্যের উপর যা গবেষণা করে থাকে।কারখানায় তৈরি সার সিনথেটিক নাইট্রোজেন থেকে উৎপাদন হয়৷ এই ধরণের সার কৃষিক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয়। কিন্তু দীর্ঘদিন এগুলো বেশি পরিমাণে ব্যবহারের কারণে নদী ও অন্যান্য জলের উৎসে ক্ষতি দেখা যায়৷ প্রাণীদের জীবনও বিপন্ন হয়।
advertisement
4/8
*রাষ্ট্রসংঘের মতে, কৃষিক্ষেত্রের অ্যামোনিয়া নিঃসরণ যখন যানবাহনের ধোঁয়ার সঙ্গে মিলে যায়, তখন মারাত্মক বায়ু দূষণ হয়। রাসায়নিক সার নাইট্রাস অক্সাইডের মতো গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গত করে জলবায়ু পরিবর্তন বাড়াচ্ছে। এই দূষণও তৈরি হচ্ছে কৃষিক্ষেত্র থেকেই।আধুনিক যুগে স্যানিটেশন পদ্ধতিও দূষণের বাহক হয়ে উঠছে। জলে মেলা ৮০ শতাংশ নাইট্রোজেন এবং অর্ধেকেরও বেশি ফসফরাসের জন্য দায়ী মানুষের প্রস্রাব। ফলে রাসায়নিক সার থেকে মুক্তি পেতে হলে প্রস্রাবের ব্যবহারের দিকে নজর দিতে হবে।
advertisement
5/8
*তাহলে কী প্রস্রাবে মিলবে মুক্তি? এটা অত্যন্ত বড় প্রশ্ন। মানুষের প্রস্রাব কৃষিক্ষেত্রে কতা ব্যবহার করা যেতে পারে,সেই প্রশ্ন রয়েছে। রাষ্ট্রসংঘের সঙ্গে যুক্ত বিজ্ঞানীরা মনে করেছেন যে, যেহেতু কৃত্রিম নাইট্রোজেন উৎপাদন গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমনে বিশেষ ভূমিকা পালন করে এবং ফসফরাসের উপস্থিতি সীমিত, তাই মানুষের প্রস্রাবকে কৃষি উৎপাদনে ব্যবহার করে উপকার পাওয়া যেতে পারে৷
advertisement
6/8
*২০২০ সালে, রাষ্ট্রসংঘের একটি গবেষণায় আরও বলা হয়েছে যে বিশ্বের সমগ্র অপচয় হওয়া জলে মোট ১৩ শতাংশ নাইট্রোজেন, ফসফরাস এবং পটাসিয়াম থাকে যা কৃষির চাহিদা পূরণ করতে পারে। তাই মনে করা হচ্ছে যে প্রস্রাবকে সারে রূপান্তর করা সহজ এবং ভাল প্রমাণিত হতে পারে।এই নিয়ে ১৯৯০- থেকে সুইডেনে এই সংক্রান্ত একটি পাইলট প্রকল্প চলছে। এর জন্য কিছু ইকো-ভিলেজও বেছে নেওয়া হয়েছে।এখন একই ধরনের প্রকল্প সুইজারল্যান্ড, জার্মানি, আমেরিকা, দক্ষিণ আফ্রিকা, ইথিওপিয়া, ভারত, মেক্সিকো এবং ফ্রান্সে চলছে। যে সব সমস্যা উঠে আসছে তা এক সুইস সংস্থা তাদের প্রযুক্তি এবং ডিজাইনের মারফৎ সমাধানের চেষ্টা করছে৷
advertisement
7/8
*১৯৯০-তে সুইডেন প্রস্রাব আলাদা ভাবে ব্যবহারের জন্য একটি প্রকল্প শুরু করে। এ জন্য সেখানে বিশেষ ধরণের টয়লেট ও ট্যাঙ্ক তৈরি করা হয়েছে। মানুষের বাড়িতে এই ধরনের ট্যাঙ্ক বসানোর পরিকল্পনা ছিল, যেখানে প্রস্রাব আলাদাভাবে সংগ্রহ করা হয়। বিষয়টি নিয়ে বিশ্বে এর আগেও বহুবার আলোচনা হয়েছে। সুইডেনে, ২০০৬ সালে, ইউরিন ডাইভারশন: ওয়ান স্টেপ টুয়ার্স সাসটেইনেবল স্যানিটেশন বিষয়ে অনেক কাজ করা হয়। একটি পরিসংখ্যান অনুযায়ী, সুইডেনে প্রায় ১০হাজার বিশেষ ধরনের টয়লেট বাড়িতে স্থাপন করা হয়েছিল যেখানে প্রস্রাব আলাদাভাবে সংরক্ষণ করা যেতে পারে।
advertisement
8/8
*সারা বিশ্বে অনেক মানুষ প্রস্রাব পান করে এবং এর মাধ্যমে নিজেদের সুস্থ রাখার দাবি করে। একে স্বমূত্র চিকিৎসা বলা হয়। বিশ্বাস করা হয় যে প্রস্রাবের নিরাময় ক্ষমতা রয়েছে। এর অনেক উদাহরণও রয়েছে। রাওজি ভাই প্যাটেলের একটি বইয়ে ইউরিন থেরাপির উল্লেখ আছে। প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মোরারজিভাই দেশাই আমেরিকান সাংবাদিক ড্যান রাথারকে তাঁর প্রস্রাব পান করা এবং এর উপকারিতা নিয়ে একটি দীর্ঘ সাক্ষাৎকার দিয়েছেন। এতে তিনি বলেছিলেন, যাঁরা প্রস্রাব পান করেন তারা অসুস্থ কম হন। তিনি তখন দেশের দরিদ্রদের সম্পর্কে বলেছিলেন যে যারা ব্যয়বহুল ওষুধ কিনতে পারেন না তাদের জন্য প্রস্রাব পান করা একটি ভাল বিকল্প হতে পারে। তিনি আরও দাবি করেন, যারা প্রস্রাব দিয়ে চোখ ধোন তাদের কখনও ছানি পড়ে না। এছাড়াও বিখ্যাত আমেরিকান গায়িকা ম্যাডোনাও পায়ের উপর প্রস্রাব করতেন বলে জানা গিয়েছে। তিনি বিশ্বাস করতেন যে এটি করার ফলে তার ত্বকের সমস্যা কম হত। একইভাবে, অভিনেত্রী সারাহ মাইলি, বেসবল খেলোয়াড় মাওইস রোজাস আলাউ, মার্শাল আর্ট শিল্পী লিওটো মাচিদা এবং বিখ্যাত আমেরিকান গায়ক জেডি সালিঙ্গারও তাদের প্রস্রাব নানা প্রকারে ব্যবহার করেন বলে জানা যায়৷