Ukraine: হঠাৎ ইউক্রেন পায় হাজার-হাজার পরমাণু অস্ত্র! এখন একটিও নেই! কোথায় গেল সেই প্রচুর পরমাণু অস্ত্র? শুনে চক্ষু চড়কগাছ হয়ে যাবে
- Published by:Suman Biswas
- news18 bangla
Last Updated:
Ukraine: ইউক্রেনের প্রাক্তন প্রতিরক্ষামন্ত্রী আন্দ্রি জাহোরোদনিউকের কথায়, ''আমরা বিনা কারণে পরমাণু অস্ত্র ছেড়ে দিয়েছি।''
advertisement
1/13

স্নায়ুযুদ্ধের সমাপ্তিকালে বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম পরমাণু অস্ত্রের ভাণ্ডার না যুক্তরাজ্যের কাছে ছিল, না ফ্রান্স, না চিনের কাছে। এটি ছিল ইউক্রেনের ভূমিতে। সোভিয়েত পতনের পর সদ্য স্বাধীন ইউক্রেন প্রায় পাঁচ হাজার পারমাণবিক অস্ত্র পায়, যা মস্কো সেখানে জমা রেখেছিল। ওই সময় কেবল যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার কাছে এর চেয়ে বেশি পরমাণু অস্ত্র ছিল।
advertisement
2/13
সেই অস্ত্রগুলো ধ্বংস করে দেওয়াকে অনেক সময় নিরস্ত্রীকরণের ইতিহাসে অন্যতম সেরা ঘটনা বলে উল্লেখ করা হয়। কিন্তু ইতিহাস বলে, ওই সময় ইউক্রেন-আমেরিকা উভয় দেশের বিশেজ্ঞরাই পরমাণু অস্ত্র নিরস্ত্রীকরণের উদ্যোগ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন। অনেকের মতে, বিধ্বংসী ওই অস্ত্রগুলোই রুশ আগ্রাসন ঠেকানোর একমাত্র নির্ভরযোগ্য উপায় ছিল।
advertisement
3/13
ইউক্রেনের প্রাক্তন প্রতিরক্ষামন্ত্রী আন্দ্রি জাহোরোদনিউকের কথায়, ''আমরা বিনা কারণে পরমাণু অস্ত্র ছেড়ে দিয়েছি।'' এর বিনিময়ে পশ্চিমা দেশগুলির কাছ থেকে পাওয়া নিরাপত্তা গ্যারান্টি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ''এখন যখনই কেউ আমাদের কোনও কাগজে সই করতে বলে, তখন আমাদের প্রতিক্রিয়া হয়, আপনাকে অনেক ধন্যবাদ। অনেক আগে আমরা এমন একটা কাজ করেছিলাম।''
advertisement
4/13
বিশ্লেষকরা বলছেন, বর্তমানে ইউক্রেনের মধ্যে ফের পারমাণবিক অস্ত্রধর হওয়ার প্রবণতা রয়েছে। হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটির ইউক্রেন বিষয়ক বিশেষজ্ঞ মারিয়ানা বুডজেরিন বলেন, ''মূল কথা হল, আমাদের কাছে অস্ত্র ছিল, সেগুলো ছেড়ে দিয়েছি এবং দেখুন, এখন কী হচ্ছে।'' তিনি বলেন, ''নীতিগত পর্যায়ে হয়ত ওই সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার জন্য কোনও নড়চড় দেখছি না। তবে জনতার পর্যায়ে এটাই বাস্তব।'' ড. বুডজেরিনের মতে, ''অনুশোচনা এর একটি অংশ মাত্র। আরেকটি অংশ হল, অন্যায়ের শিকার হলে কারও মনে যে ভাবনা আসে।''
advertisement
5/13
স্বাধীনতার পর ইউক্রেন প্রথমেই তার ভূখণ্ড থেকে সোভিয়েত অস্ত্রগুলো সরাতে উদ্যত হয়। বোমা, আর্টিলারি শেল, ল্যান্ড মাইন ও স্বল্পপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্রগুলো স্থানান্তর যেমন সহজ ছিল, তেমনি সেগুলো শত্রুভাবাপন্ন কারও হাতে পড়ারও ঝুঁকি ছিল। দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্রগুলো সরানো ছিল কিছুটা কঠিন। কারণ এগুলোর কোনও কোনওটির ওজন ছিল ১০০ টন ও লম্বায় প্রায় ৯০ ফুট।
advertisement
6/13
১৯৯২ সালের জানুয়ারি মাসে সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের মাসখানেক পরে ইউক্রেনের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট এবং প্রতিরক্ষামন্ত্রী সামরিক কমান্ডার ও অধঃস্তন সেনাদের নতুন দেশের প্রতি আনুগত্য স্বীকারের নির্দেশ দেন। এই পদক্ষেপে অবশিষ্ট অস্ত্রের ওপর সরকার প্রশাসনিক নিয়ন্ত্রণ লাভ করে। তবে অনেকেই সেই আদেশ প্রত্যাখ্যান করেন এবং এতে ইউক্রেনের পারমাণবিক অস্ত্রাগারের ভাগ্য ও এর অপারেশনাল অবস্থা নিয়ে বিভ্রান্তি তৈরি হয়।
advertisement
7/13
সাবেক পারমাণবিক-ঘাঁটি কমান্ডার ও পরবর্তীতে ইউক্রেনের সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়া ভলোদিমির টোলুবকো যুক্তি দিয়েছিলেন, কিয়েভের কখনই পারমাণবিক অস্ত্র ছেড়ে দেওয়া উচিত হবে না। ১৯৯২ সালের এপ্রিলে তিনি এক সমাবেশে বলেছিলেন, ইউক্রেনের নিজেকে ‘পরমাণু অস্ত্রমুক্ত’ ঘোষণার সিদ্ধান্ত অপরিপক্ব এবং তাদের অন্তত কিছু দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র ধরে রাখা উচিত। তবে ওই সময় তার এই প্রস্তাব খুব একটা জনসমর্থন পায়নি।
advertisement
8/13
১৯৯৩ সালে শিকাগো ইউনিভার্সিটির আন্তর্জাতিক সম্পর্ক তত্ত্ববিদ জন জে. মেয়ারশেইমার পারমাণবিক অস্ত্র ইস্যুতে মুখ খোলেন। তার যুক্তি ছিল, ইউক্রেন যদি শান্তি বজায় রাখতে চায়, তাহলে পারমাণবিক অস্ত্র অবশ্যক।
advertisement
9/13
বিতর্কের মুখে ১৯৯৩ সালে কিয়েভ সরকার পারমাণবিক ক্ষেপণাস্ত্র ও বোমারু বিমানের অপারেশনাল নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার বিষয়টি বিবেচনা শুরু করে। কিন্তু সেটি কখনই বাস্তবায়িত হয়নি। পরিবর্তে দেশটি সিদ্ধান্ত নেয়, পরমাণু অস্ত্রের বদলে তাদের কঠিন নিরাপত্তা গ্যারান্টি দরকার। যার ফলশ্রুতিতে ১৯৯৪ সালের শুরুর দিকে পারমাণবিক নিরস্ত্রীকরণের চুক্তি করে ইউক্রেন।
advertisement
10/13
বুদাপেস্ট মেমোরেন্ডাম নামে পরিচিত ওই চুক্তিতে সই করেছিল রাশিয়া, ইউক্রেন, যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্র। চুক্তিতে প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল, কোনও দেশই ইউক্রেনের বিরুদ্ধে শক্তি ব্যবহার করবে না এবং সবাই দেশটির সার্বভৌমত্ব ও সীমান্তকে সম্মান জানাবে। চুক্তিতে আরও বলা ছিল, আগ্রাসন হলে ইউক্রেনকে সহায়তার জন্য চুক্তিকারীরা জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে অবিলম্বে পদক্ষেপ নেবে।
advertisement
11/13
১৯৯৬ সালের মে মাসে ইউক্রেন তাদের শেষ পরমাণু অস্ত্রটি রাশিয়ায় পাঠিয়ে দেয়। বুদাপেস্ট মেমোরেন্ডামের অন্যতম সমঝোতাকারী ও ইউক্রেনে নিযুক্ত সাবেক মার্কিন রাষ্ট্রদূত স্টিভেন পিফারের মতে, ভ্লাদিমির পুতিনের মতো একজনের উত্থানেই ওয়াশিংটন ও কিয়েভের কূটনৈতিক প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে। তিনি বলেন, ২০১৪ সালে রুশ সেনাদের ক্রিমিয়া আক্রমণ এবং পূর্ব ইউক্রেনে একটি প্রক্সি যুদ্ধ শুরু করে পুতিন কার্যত বুদাপেস্ট চুক্তিকে বাতিল ও অকার্যকর প্রমাণ করেন।
advertisement
12/13
বিশ্লেষকরা আশঙ্কা করছেন, ইউক্রেনের বর্তমান সংকট পারমাণবিক অস্ত্র নিরস্ত্রীকরণকে ঝুঁকিতে ফেলতে পারে এবং এর ফলে ইরান-সৌদি আরবের মতো দেশগুলো নিজেদের পরমাণু অস্ত্রধর করতে সচেষ্ট হতে পারে। ওয়াশিংটনের অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ সমিতির নির্বাহী পরিচালক ড্যারিল জি কিমবল বলেন, কূটনৈতিকভাবে সমাধান পাওয়া না গেলে পারমাণবিক অস্ত্রধারী রাষ্ট্রগুলো অপারমাণবিক রাষ্ট্রগুলোকে হুমকি দিতে পারে, এই ধারণা আরও শক্তিশালী হবে এবং এতে নিরস্ত্রীকরণের উৎসাহ কমে যাবে।
advertisement
13/13
পিফারের মতে, এখন বহু দেশ ইউক্রেনের পক্ষে। কিন্তু তারা পরমাণু অস্ত্রের দিকে গেলে দ্রুত সমর্থন হারাবে।