Nuclear Bomb: বিমান দুর্ঘটনার জের, স্পেনের বুকে আছড়ে পড়ে চার-চারটি মার্কিন পরমাণু বোমা! তারপর যা ঘটে, শিউরে উঠবেন শুনে
- Written by:Trending Desk
- Published by:Suman Biswas
Last Updated:
Nuclear Bomb: অপারেশন ক্রোম ডোম এবং মাঝ আকাশে দুর্ঘটনা: আসলে এটা ছিল অপারেশন ক্রোম ডোমের ফলাফল।
advertisement
1/9

টানা ৮০ দিন ধরে খানাতল্লাশি চালানোর পর অবশেষে ১৯৬৬ সালের ৭ এপ্রিল মার্কিন সেনাবাহিনী ভূমধ্যসাগরের গভীর তলদেশ থেকে একটি নিখোঁজ হাইড্রোজেন বোমা উদ্ধার করেছিল। যে পারমাণবিক বোমা হিরোশিমায় ফেলা হয়েছিল, তার তুলনায় ১০০ গুণ বেশি ছিল এর শক্তি। ভূপৃষ্ঠের প্রায় ২৮৫০ ফুট নীচ থেকে সন্তর্পণে উত্তোলন করা হয়েছিল বোমাটিকে।
advertisement
2/9
এরপর সেটি সাবধানে চাপানো হয়েছিল ইউএসএস পেট্রেলে।নিরাপদে সেটিকে ডেকে তোলার পর অফিসাররা নিষ্ক্রিয়করণের জন্য এর থার্মোনিউক্লিয়ার ডিভাইসটি অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে নিষ্ক্রিয় করেন। তারপরেই উদ্ধারকারী দলটি একপ্রকার স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলে। আসলে এটাই ছিল স্পেনের মাটিতে দুর্ঘটনাক্রমে পড়া চারটি হাইড্রোজেন বোমার মধ্যে শেষ বোমাটি।
advertisement
3/9
অপারেশন ক্রোম ডোম এবং মাঝ আকাশে দুর্ঘটনা: আসলে এটা ছিল অপারেশন ক্রোম ডোমের ফলাফল। এই অভিযানের সময় পারমাণবিক সশস্ত্র বি-৫২ বোমারু বিমান সারাক্ষণ ধরে আকাশে চক্কর কাটত। যে কোনও মুহূর্তেই মস্কোর উপর আঘাত হানার জন্য প্রস্তুত থাকত। তবে দীর্ঘ রাস্তার কারণে এই এয়ারক্র্যাফ্টগুলিকে হামেশাই মাঝ আকাশে জ্বালানি ভরতে হত।
advertisement
4/9
১৯৬৬ সালের ১৭ জানুয়ারি দক্ষিণ স্পেনের আলমেরিয়া অঞ্চলের ৩১০০০ ফুট উপর দিয়ে উড়ছিল এমনই একটি বি-৫২ বিমান। একটি কেসি-১৩৫ ট্যাঙ্কার রিফুয়েল করার চেষ্টা চলছি। আর মাঝ আকাশে নিয়মমাফিক রিফুয়েলিং প্রক্রিয়া চলাকালীনই ওই বোমারু বিমান এবং ট্যাঙ্কারের সংঘর্ষ হয়। যার জেরে দুই এয়ারক্র্যাফ্টের ১১ বিমানকর্মীর মধ্যে ৭ জনের মৃত্যু হয়।
advertisement
5/9
এদিকে বি-৫২-এর মধ্যে ছিল ৪টি B28FI Mod 2 Y1 থার্মোনিউক্লিয়ার বোমা। আর মাঝ আকাশের দুর্ঘটনায় চারটি বোমাই বেরিয়ে আসে এবং পৃথিবীর বুকে আছড়ে পড়ে। দক্ষিণ স্পেনের পালোমেয়ারে জেলেদের ছোট্ট গ্রামে গিয়ে পড়ে তিনটি শক্তিশালী বোমা। আঘাত হানার পর দুটি বোমার মধ্যে থাকা বিস্ফোরকে বিস্ফোরণ ঘটে। ফলে প্রায় ০.৭৭ বর্গমাইল (২ বর্গকিলোমিটার) জমি জুড়ে তেজস্ক্রিয় প্লুটোনিয়াম ছড়িয়ে পড়ে। অন্যদিকে চতুর্থ বোমাটি গিয়ে পড়ে ভূমধ্যসাগরে। এরপর সেটির সন্ধানে চলতে থাকে খানাতল্লাশি। দীর্ঘ আড়াই মাসের প্রয়াসের পর অক্ষত অবস্থায় সন্ধান মেলে চতুর্থ বোমাটির।
advertisement
6/9
পালোমেয়ারের পরিস্থিতি: প্রায় ৬০ বছর পরেও এই দুর্ঘটনার ক্ষত পুরোপুরি মুছে যায়নি। ব্যাপক ভাবে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করা সত্ত্বেও সমস্ত আক্রান্ত এলাকা কিন্তু সঠিক ভাবে আগের মতো করা যায়নি। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং স্পেনের মধ্যে চুক্তি হয়। আর সেই চুক্তি অনুযায়ী, পালোমেয়ারের বাসিন্দাদের প্রতি বছর স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয় এবং সেখানকার মাটি, হাওয়া, জল এবং ফসলের উপরেও কড়া নজর রাখা হয়।
advertisement
7/9
তেজস্ক্রিয় দূষণের জেরে এখনও সেখানকার প্রায় ১০০ একর জমি ঘিরে রাখা হয়েছে। ২০০৪ সালে একটি গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে, পালোমেয়ারের আশপাশের নির্দিষ্ট কিছু অঞ্চলে উল্লেখযোগ্য তেজস্ক্রিয় দূষণ এখনও রয়ে গিয়েছে। এর জবাবে স্প্যানিশ সরকার এমন বেশ কিছু জমি বাজেয়াপ্ত করে, যা কৃষিকাজ বা আবাসন তৈরির জন্য ব্যবহার করার কথা ছিল।
advertisement
8/9
২০০৬ সালের ১১ অক্টোবর রয়টার্সের তরফে জানানো হয় যে, স্থানীয় শামুক এবং অন্যান্য বন্যপ্রাণীদের মধ্যে উচ্চ মাত্রার বিকিরণ শনাক্ত করা হয়েছে। আর বিপজ্জনক পরিমাণে তেজস্ক্রিয় পদার্থ এখনও ভূগর্ভে উপস্থিত থাকতে পারে বলেই ইঙ্গিত দিচ্ছে এটি। কোনও বোমাতেই বিস্ফোরণ না হলেও দুটি বোমার প্লুটোনিয়ামে ভরপুর ডিটোনেটর বেরিয়ে এসেছিল। যার জেরে পালোমেয়ার জুড়ে প্রায় কয়েক কিলোগ্রাম উচ্চ মাত্রায় তেজস্ক্রিয় প্লুটোনিয়াম ছড়িয়ে পড়েছিল।
advertisement
9/9
২০১৫ সালে স্পেন এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে একটি অভিপ্রায়ের বিবৃতিতে স্বাক্ষর হয়। মূলত এই বিবৃতিতে পালোমেয়ার্সের এলাকাটিকে পুনরুদ্ধার ও তেজস্ক্রিয় দূষণ মুক্ত করার জন্য এবং দূষিত মাটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের একটি উপযুক্ত স্থানে অপসারণের ব্যবস্থা করার জন্য একটি বাধ্যতামূলক চুক্তির উল্লেখ করা হয়েছিল। যদিও দুই দেশ এই চুক্তির বিবৃতিতে স্বাক্ষর করার পরেও সেই প্রতিশ্রুতি কিন্তু আজও অপূর্ণই রয়ে গিয়েছে।