Who are the Druze : ‘ড্রুজ’ কারা ? কেন তাদের রক্ষা করতে সিরিয়ায় হামলা চালাল ইজরায়েল? জনগোষ্ঠীকে জানলেই সংঘর্ষের প্রকৃতি স্পষ্ট হয়ে যাবে
- Published by:Siddhartha Sarkar
Last Updated:
Who are the Druze and why did Israel bomb Syria to protect them: ইজরায়েল বলে যে তারা সিরিয়ায় দ্রুজদের রক্ষা করার জন্য আক্রমণ করেছে, এরা সংঘর্ষের কেন্দ্রবিন্দুতে অবস্থিত এক আরব সংখ্যালঘু গোষ্ঠী।
advertisement
1/14

যুদ্ধবিরতি সম্পন্ন হয় কেবল চুক্তির স্তরে, বৈরিতা কখনই শেষ হওয়ার নাম নেয় না। কখনও তা স্বভাবজাত, কখনও তার নেপথ্যে থাকে অতি জটিল রাজনৈতিক কার্য-কারণ সমীকরণ। সিরিয়ায় ইজরায়েলের বোমা হামলায় ঠিক যে ভাবে নাম উঠে এসেছে ‘ড্রুজ’দের।
advertisement
2/14
সত্যি বলতে কী, গত ডিসেম্বরে আসাদ সরকারের পতনের পর থেকেই ইজরায়েল সিরিয়ায় হামলা চালিয়ে আসছে। তবে এই সপ্তাহে এসে একটি বড় ধরনের উত্তেজনা দেখা দেয়, যখন ইজরায়েল বলে যে তারা সিরিয়ায় Druze-দের রক্ষা করার জন্য আক্রমণ করেছে, এরা সংঘর্ষের কেন্দ্রবিন্দুতে অবস্থিত এক আরব সংখ্যালঘু গোষ্ঠী। যদিও বিশেষজ্ঞদের অভিমত এই যে ইজরায়েলের হামলার সিদ্ধান্ত সম্ভবত প্রাক্তন জিহাদি এবং রাষ্ট্রপতি আহমেদ আল-শারার নেতৃত্বাধীন বর্তমান সিরিয়ান সরকারের বিরোধিতার সঙ্গেই সম্পর্কিত, দ্রুজদের এখানে শুধু টেনে আনা হয়েছে। (Photo: AP)
advertisement
3/14
আপাতত, সিরিয়ার সরকার এবং Druze নেতারা বুধবার যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছেন। কয়েকদিনের সংঘর্ষের পর এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হল, ইতিমধ্যেই বহু মানুষ নিহত এবং শত শত আহত হয়েছেন, ফলে এ হেন পটভূমিতে দাঁড়িয়ে যুদ্ধবিরতি আদৌ স্থায়ী হবে কি না তা এখনও দেখার বিষয়। তবে, যখন নাম টেনে আনা হলই, এই ড্রুজ কারা, সে সম্পর্কে কিছু না বলা অন্যায় হবে। জেনে নেওয়া যাক বিশদে। (Photo: AP)
advertisement
4/14
Druze কারা? প্রায় দশ লক্ষ লোকের একটি আরব ধর্মীয় গোষ্ঠী, যারা মূলত সিরিয়া, লেবানন এবং ইজরায়েলে বাস করে। একাদশ শতাব্দীতে মিশরে জন্ম নেওয়া এই গোষ্ঠী অভ্যন্তরীণভাবে দুটি শাখায় বিভক্ত, এরা ইসলামের একটি মতাদর্শ অনুসরণ করে চলে যেখানে কোনও ব্যক্তিকে ধর্মান্তরিত করার অনুমতি দেওয়া না এবং এদের মধ্যে আন্তঃবিবাহের চলও নেই। সিরিয়ায় Druze সম্প্রদায় দেশটির দক্ষিণে ইজরায়েল-অধিকৃত গোলান মালভূমির কাছাকাছি তিনটি প্রধান প্রদেশে বাস করে। (Photo: AP)
advertisement
5/14
গোলান হাইটসে ২০,০০০-এরও বেশি Druze বাস করে, এটি এমন একটি কৌশলগত মালভূমি যা ১৯৬৭ সালে ছয় দিনের যুদ্ধের সময় সিরিয়ার কাছ থেকে দখল করে নেয় ইজরায়েল, ১৯৮১ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে এটিকে সংযুক্ত করে নেয় নিজের সঙ্গে। Druze-রা এর পর এই অঞ্চলে প্রায় ২৫,০০০ ইহুদিদের সঙ্গে থাকতে শুরু করে, যারা ৩০টিরও বেশি বসতিতে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে। (Photo: AP)
advertisement
6/14
মজার ব্যাপার এই যে গোলানে বসবাসকারী বেশিরভাগ Druze নিজেদেরকে সিরিয়ান বলে পরিচয় দেয় এবং ইজরায়েল যখন এই অঞ্চলটি দখল করে নেয় তখন তারা ইজরায়েলি নাগরিকত্বের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে। যারা প্রত্যাখ্যান করেছিল, তাদের ইজরায়েলি আবাসিক কার্ড দেওয়া হয়েছিল, কিন্তু তাদের ইজরায়েলি নাগরিক হিসেবে বিবেচনা করা হয় না। এরই বিপরীতে ইজরায়েলের সীমান্তের মধ্যে বসবাসকারী Druze-রা মূলত রাষ্ট্রের প্রতি অনুগত, এদের কেউ কেউ আবার ইজরায়েলি সামরিক বাহিনীতে উচ্চপদস্থ পদে কর্মরতও রয়েছেন। দক্ষিণ সিরিয়ায়, যেখানে সুওয়াইদা প্রদেশে Druze-রা সংখ্যাগরিষ্ঠ, সিরিয়ার দশ বছরের গৃহযুদ্ধের সময় এই সম্প্রদায়টি মাঝে মাঝে প্রাক্তন আসাদ সরকারের বাহিনী এবং চরমপন্থী গোষ্ঠীগুলোর মধ্যে আটকে পড়েছিল। (Photo: AP)
advertisement
7/14
কেন সিরিয়ার বাহিনী তাদের সঙ্গে সংঘর্ষে লিপ্ত হচ্ছে? দীর্ঘদিনের স্বৈরশাসক বাশার আল-আসাদকে উৎখাত করার পর আল-শারা অন্তর্ভুক্তির প্রতিশ্রুতি দেয় এবং সিরিয়ার সমস্ত বৈচিত্র্যময় সম্প্রদায়কে রক্ষা করার প্রতিশ্রুতি দেয়। কিন্তু Druze-রা নতুন রাষ্ট্রপতির ব্যাপারে সতর্কতামূলক নীতি নিয়ে চলছে। তারা আল-শারার জাতীয় সংলাপ থেকে তাদের কিছু নেতার বাদ পড়া এবং নতুন সরকারে সীমিত প্রতিনিধিত্বের বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে, যার মধ্যে মাত্র একজন Druze মন্ত্রী রয়েছেন। শুধু তা-ই নয়, রাষ্ট্রপতির উগ্রপন্থী বাহিনী এই ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের উপর সহিংস আক্রমণও চালিয়ে যাচ্ছে। (Photo: AP)
advertisement
8/14
মার্চ মাসে পশ্চিমাঞ্চলীয় শহর লাতাকিয়ায় আসাদ যে আলাউইত সম্প্রদায়ের সদস্য, তাদের বিরুদ্ধে অভিযানের সময় শত শত মানুষ নিহত হয় এবং এপ্রিল মাসে সরকারপন্থী সশস্ত্র বাহিনী এবং Druze মিলিশিয়াদের মধ্যে সংঘর্ষে কমপক্ষে ১০০ জন নিহত হয়। Druze এবং স্থানীয় বেদুইন উপজাতিদের মধ্যে হামলার পর সিরিয়ার সরকারি বাহিনী হস্তক্ষেপ করলে সপ্তাহান্তে সর্বশেষ সংঘর্ষ শুরু হয়। সিরিয়ান নেটওয়ার্ক ফর হিউম্যান রাইটস জানিয়েছে, ক্রমবর্ধমান সহিংসতার মধ্যে রয়েছে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড, কামান হামলা এবং ইজরায়েলি বাহিনীর বিমান হামলা। এর ফলে, ইজরায়েলি বিমান হামলা নতুন করে শুরু হয়, কেন না ইজরায়েল দ্রুজদের রক্ষা করার জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। এ হেন পরিস্থিতিতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে টেনে এনে আলোচনার পর সিরিয়ার সরকার তার সৈন্য প্রত্যাহারে সম্মত হয়েছে এবং বুধবার Druze মিলিশিয়াদের সঙ্গে নতুন করে যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করেছে। (Photo: AP)
advertisement
9/14
সিরিয়ার নেতা আহমেদ আল-শারা আজ বলেছেন যে তিনি তাঁর জনগণকে বিশৃঙ্খলা ও ধ্বংসের উর্ধ্বে রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন এবং Druze-দের রক্ষা করার অঙ্গীকার করেছেন। ইজরায়েল কেন হস্তক্ষেপ করেছিল? ইজরায়েল যখন হস্তক্ষেপ করে, তখন প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু বলেছিলেন যে তাঁর দেশ "ইজরায়েলে আমাদের Druze নাগরিকদের সঙ্গে গভীর ভ্রাতৃত্বপূর্ণ সম্পর্ক এবং সিরিয়ার ড্রুজদের সঙ্গে তাদের পারিবারিক ও ঐতিহাসিক সম্পর্কের কারণে সিরিয়ায় ড্রুজদের ক্ষতি প্রতিরোধে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।" কিন্তু অন্যান্য কারণও রয়েছে, কারণ সিরিয়ায় সামরিক উপস্থিতি সম্প্রসারণের পাশাপাশিই ইজরায়েল তার সীমান্ত রক্ষা করতেও আগ্রহী। (Photo: AP)
advertisement
10/14
ভুলে গেলে চলবে না যে নেতানিয়াহু এর আগে দামাস্কাসের নতুন সরকারকে ‘চরমপন্থী ইসলামি শাসনব্যবস্থা’ এবং ইজরায়েল রাষ্ট্রের জন্য হুমকি হিসেবে উল্লেখ করেছিলেন। মে মাসে একজন ইজরায়েলি কর্মকর্তা সিএনএনকে বলেছিলেন যে প্রধানমন্ত্রী মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে সিরিয়ার উপর থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার না করার জন্য অনুরোধ করেছিলেন, তিনি আশঙ্কা করেছিলেন যে এর ফলে ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবরের ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটবে, যখন হামাস-নেতৃত্বাধীন জঙ্গিরা ইজরায়েলে আক্রমণ করেছিল। ইজরায়েলি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মতে, ইজরায়েলি সরকার একতরফাভাবে সিরিয়ায় একটি অসামরিকীকরণ অঞ্চল ঘোষণা করেছে যা ‘দক্ষিণ সিরিয়ায় সেনা ও অস্ত্র প্রবেশ নিষিদ্ধ করে’। (Photo: AP)
advertisement
11/14
এদিকে, সিরিয়ার সরকার ইজরায়েলের এই অসামরিক অঞ্চল ঘোষণা প্রত্যাখ্যান করেছে এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সঙ্গে মিলে বার বার ইজরায়েলকে তার সার্বভৌমত্ব লঙ্ঘনকারী সামরিক পদক্ষেপ বন্ধ করার আহ্বান জানিয়েছে। ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে আসাদ সরকারের পতনের পর থেকে ইজরায়েল সিরিয়ার আরও বেশি অঞ্চল দখল করেছে এবং বার বার দেশটিতে হামলা চালিয়েছে, যার লক্ষ্য সিরিয়ার সামরিক সক্ষমতার পুনর্গঠন রোধ করা এবং এর নিরাপত্তার জন্য হুমকিস্বরূপ জঙ্গিবাদ নির্মূল করা। ইজরায়েলের হামলা অব্যাহত রয়েছে, যদিও তার নিকটতম মিত্র মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সিরিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার জন্য ইজরায়েলের উপর চাপ দিচ্ছে, কারণ এখন এটি একটি নতুন সরকারের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। আমেরিকা এই অঞ্চলের দেশগুলিকে ভিন্ন পথে পরিচালিত করার চেষ্টা করছে এবং সিরিয়াকে আব্রাহাম চুক্তিতে স্বাক্ষর করানোর পরিকল্পনা করছে, এটি আদতে ইজরায়েল এবং বেশ কয়েকটি আরব দেশের মধ্যে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার জন্য চুক্তির একটি সিরিজ। (Photo: AP)
advertisement
12/14
প্রশাসনের একজন উর্ধ্বতন কর্মকর্তা গত মাসে সিএনএনকে বলেছিলেন যে "ইজরায়েলের দিকে ঝুঁকে পড়াই সিরিয়ার জন্য লাভজনক।" মে মাসে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সৌদি আরবের রিয়াদে শারা'র সঙ্গে একটি বৈঠকও করেন। কয়েক দশকের মধ্যে এটি ছিল প্রথম উচ্চ-স্তরের মার্কিন-সিরিয়া বৈঠক। অন্য দিকে, ইজরায়েল এই চুক্তিগুলি সম্প্রসারণের প্রবণতার ইঙ্গিত দিয়েছে। ইরানের সঙ্গে তাদের মারাত্মক সংঘাতের পর নেতানিয়াহু বলেন যে ইজরায়েল বিজয় শান্তি চুক্তির নাটকীয় সম্প্রসারণের পথ প্রশস্ত করেছে এবং আরও বলেন যে ইজরায়েল এই লক্ষ্যে পুরোদমে কাজ করছে।" Photo: AP
advertisement
13/14
ইজরায়েল নতুন সিরিয়ার সরকারের সঙ্গে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে আলোচনা করেছে, যা আসাদ সরকারের পতনের পর থেকে পূর্ববর্তী শত্রুদের মধ্যে পরিবর্তনশীল এক আচরণের কথাই তুলে ধরে। কিন্তু সিরিয়ার ভূখণ্ডে ইজরায়েলের বার বার আক্রমণ এবং দেশে তাদের বর্ধিত সামরিক উপস্থিতি তাদের উচ্চাকাঙ্ক্ষাকে জটিল করে তুলতে পারে। এখন কী হবে?- যুদ্ধবিরতি বহাল আছে বলেই মনে করা হচ্ছে, কেন না ভিডিও ফুটেজে দেখা যাচ্ছে সিরিয়ার সরকার তার প্রতিশ্রুতি পালন করছে এবং সুওয়াইদা থেকে সেনা প্রত্যাহার করছে। কিন্তু এটি কতদিন স্থায়ী হবে তা এখনও অনিশ্চিত, কারণ একজন বিশিষ্ট দ্রুজ নেতা নতুন চুক্তি প্রত্যাখ্যান করেছেন। Photo: AP
advertisement
14/14
বৃহস্পতিবার ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু যুদ্ধবিরতিকে তাৎপর্যপূর্ণ বলে প্রশংসা করেছেন, একই সঙ্গে সতর্কও করে দিয়েছেন যে ইজরায়েল প্রয়োজনে কাজ চালিয়ে যাবে। এই সহিংস নীতি বস্তুত সিরিয়ার উপর কর্তৃত্ব সুসংহত করার চেষ্টায় আল-শারা যে চ্যালেঞ্জগুলোর মুখোমুখি হচ্ছে তা-ই তুলে ধরে, এক দশকেরও বেশি সময় ধরে গৃহযুদ্ধের পর সিরিয়া এবার ধীরে ধীরে শান্ত হচ্ছে বলা চলে। তবে, সিরিয়ার দীর্ঘ আন্তর্জাতিক বিচ্ছিন্নতার অবসান ঘটাতে তাকে সিরিয়ার বিভিন্ন নৈতিক ও ধর্মীয় গোষ্ঠীর মধ্যে গভীর অবিশ্বাস কাটিয়ে ওঠার একটি উপায় খুঁজে বের করতে হবে। এ হেন প্রেক্ষাপটে যদি ইজরায়েল তার হামলা চালিয়ে যায়, তাহলে সেই প্রচেষ্টা আরও জটিল হয়ে উঠবে, এ বিষয়ে সন্দেহ প্রকাশ করার কোনও জায়গাই নেই! Photo: AP