বাঙালি আধুনিক হয়েছেন। বাঙালি ডিজিটাল হয়েছেন। তবুও প্রতিটি বাঙালি নিজেদের ঐতিহ্য ধরে রাখতে ভালোবাসেন। বছরের দুটি দিনে বাঙালিকে খাঁটি বাঙালি হিসেবে পাওয়া যায়।
দুর্গাপুর, পশ্চিম বর্ধমান : বাঙালি আধুনিক হয়েছেন। বাঙালি ডিজিটাল হয়েছেন। তবুও প্রতিটি বাঙালি নিজেদের ঐতিহ্য ধরে রাখতে ভালোবাসেন। বছরের দুটি দিনে বাঙালিকে খাঁটি বাঙালি হিসেবে পাওয়া যায়। এক দুর্গা পুজোর অষ্টমী তিথিতে, আর দ্বিতীয় বাংলা নববর্ষের দিনে। এই দুটি দিনে বাঙালির 'বাঙালি' সাজতে মনে কোনও দ্বিধা-দ্বন্দ্ব দেখা যায় না। বাঙালির নববর্ষের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত হালখাতা। মোটামুটিভাবে দেড় দশক পিছিয়ে গেলেই, নববর্ষের দিন হালখাতাকে বাঙালি কেন্দ্র করে উৎসাহ, উদ্দীপনার ছবি চোখে পড়বে। যদিও এখন স্মার্টফোনে অভ্যস্ত হয়েছে বাঙালি। হালখাতার সেই উতসাহ-উদ্দীপনা এখন অনেকটাই মলীন। তবুও ঐতিহ্যকে ধরে রাখতে এখনও চোখে পড়ে নববর্ষে হালখাতা করানোর ছবি। কলকাতার কালীঘাট মন্দিরে নববর্ষের সকালে হালখাতা করতে ভিড় করেন বহু ব্যবসায়ী। তেমনি দুর্গাপুরের 'কালীঘাট' ভিরিঙ্গি কালী মন্দিরে দেখা গিয়েছে একই ছবি। নববর্ষের দিন সকাল থেকে ব্যবসায়ীদের ভিড় ছিল মন্দির চত্বরে। সেখানে লক্ষ্মী গণেশের চরণে প্রণাম জানিয়ে, দেবী কালীকার কাছে প্রার্থনা করে হালখাতা করেছেন তারা। প্রার্থনা করেছেন যেন সারা বছর তাদের ব্যবসায় লক্ষ্মী, গণেশের কৃপা দৃষ্টি বর্ষণ হয়। সিদ্ধি এবং সমৃদ্ধির আশায় পুজো পাঠ করেছেন তারা। করিয়েছেন নতুন হালখাতা। হয়তো এই সমস্ত ব্যবসায়ীরা তাদের হিসাব রক্ষা করবে ডিজিটাল উপায়ে। কিন্তু ওই হালখাতা করার ছবি ফিরিয়ে দিয়েছে নস্টালজিয়া। নববর্ষের সকালে ভিরিঙ্গি কালী মন্দিরে দেখা গিয়েছে, ব্যবসায়ী এবং তাদের পরিবারের সদস্যরা হালখাতা করাতে ভিড় করেছিলেন। কেউ কেউ এনেছিলেন লক্ষ্মী, গণেশের মূর্তি। ভগবানের উদ্দেশ্যে পুজো দেওয়ার পর, পুরোহিতের কাছে হালখাতা করাতে দেখা গিয়েছে ওই সব ব্যবসায়ীদের। পুরোহিত খাতায় স্বস্তিক চিহ্ন এঁকে সিদ্ধি, সমৃদ্ধির প্রার্থনা করেছেন। বছরের প্রথম দিন সেই পুরনো দিনের মতো করে কাটাতে পেরে খুশি ওই সমস্ত ব্যবসায়ীরাও।