বড় ছেলের মৃত্যুর ঠিক ১৩ বছর বাদে মনোবরা ঝাড়খণ্ডের পাকুড় জেলার চন্দ্রপাড়া গ্রামের এক ঝুপড়িতেই বসবাস তাঁর ৷ ৮ সন্তান নিয়ে সংগ্রামের জীবন তাঁর ৷ ছোট বাচ্চাদের সহায়তায় বিড়ি বেচেই দিন চলে তাঁদের ৷ পাঁজরের যন্ত্রণায় কাবু হয়েও পরিচারিকার কাজও আজ করতে পারেন না ৷ পারেন না কোথাও বা অস্থায়ী হিসাবে কোনও কাজে যোগ দিতে ৷
advertisement
প্রতিদিন ২৫০ করে বিড়ি বাঁধেন তিনি ৷ যখন তাঁর সন্তানেরা বিড়ি না বিক্রি করতে পারেন তখন প্রতিবেশীদের থেকে খাবার চেয়ে বাঁচতে হয় তাঁদের ৷ এমনও দিন যায় তখন অনাহারে দিন কাটে ৷ ওই গ্রামের জনসংখ্যা প্রায় ৩,০০০ ৷ বেশির ভাগই মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষ, তাঁরা বাংলা ভাষায় কথা বলে থাকেন ৷
হয়রান হওয়ার মত বিষয় এত মানুষের বসবাস সত্ত্বেও গ্রামের অর্ধেকের মানুষই রেশন ব্যবস্থার আওতায় নেই ৷ নেই কারোর রেশন কার্ড ৷ প্রশাসনের সব মহলকে বিষয়টি বারবার জানিয়েও কোনও সুরাহা হয়নি ৷ গ্রামবাসীদের দাবি ২০১১ জনগণনায় তাঁদের গণনার বাইরে রাখা হয়েছে বলেই এই অবস্থা হয়েছে ৷
প্রায় ১০০ মহিলা একত্রিত হয়ে দাবি করেছেন অনেকের কাছে আধার কার্ড থাকলেও নেই রেশন কার্ড ৷ পাশের গ্রামেই সমস্ত মানুষ রেশন ব্যবস্থার আওতায় আছেন ৷ গ্রামের বহু মানুষ প্রধানত বয়স্করা ভিক্ষাবৃত্তি করে জীবন যাপন করেন ৷ টাকা পয়সার অভাবে অনেক সময় রেশন কিনতে পারেন না তাঁরা ৷ স্থানীয় একটি মসজিদে একটি ফান্ড তৈরি করেছেন তাঁরা গ্রামের লোকেরা সেই ফান্ডে রাখা টাকা থেকে ৫ টাকা নিতে পারেন চাল, ডাল কেনার জন্য ৷
এ এক অদ্ভুত বিভাজন গ্রামের এক প্রান্তের মানু রেশন ব্যবস্থার সুবিধা পেয়ে থাকেন আর এক প্রান্তেরা মানুষেরা রেশন ব্যবস্থা শুধুই শুনেছেন দেখেননি ৷
সৌজন্যে : দেবায়ন রায়