মূল নায়িকা ইন্দ্রাণী মুখোপাধ্যায়। সম্পত্তির ভাগ নিশ্চিত করতেই প্রথম পক্ষের মেয়ে শিনা বোরাকে খুন করেন তিনি। দ্বিতীয় পক্ষের স্বামী সঞ্জীব খান্না ছাড়াও খুনে যুক্ত ছিল ইন্দ্রাণীর গাড়ির চালক শ্যাম রাই। মেয়ে হলেও শিনাকে বোন বলেই পরিচয় দিতেন ইন্দ্রাণী। খুনের জড়িত সন্দেহে ইন্দ্রাণীর বর্তমান স্বামী মিডিয়া ব্যারণ পিটারকেও গ্রেফতার করেছে পুলিশ। সেটাই এখনও পর্যন্ত রহস্যে শেষ পেরেক।
advertisement
সিবিআইয়ের পেশ করা চার্জশিটে স্পষ্ট হয়েছে অভিযুক্তদের ভূমিকা ৷ সরাসরি খুনে যোগ রয়েছে ইন্দ্রাণী, সঞ্জীব ও শ্যাম রাইয়ের ৷ খুনের ষড়যন্ত্র ও মদতের অভিযোগ পিটারের বিরুদ্ধে ৷ অপহরণ, খুন, সাক্ষ্য লোপাট, প্রতারণা, জালিয়াতির অভিযোগ রয়েছে বাকি অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ৷ আগামী জানুয়ারিতে অতিরিক্ত চার্জশিট পেশের সম্ভাবনা ৷
২০১২-র এপ্রিলে ওরলির সামনে থেকে শিনাকে গাড়ি তোলা হয় ৷ রায়গড় জঙ্গলের কাছে পেট্রোল পাম্পে পৌঁছয় ইন্দ্রাণীদের গাড়ি ৷ শ্বাসরোধ করে খুনের পর হার, লিপস্টিকে সাজানো হয় মৃতদেহ, যাতে কারোর সন্দেহ না হয় ৷ ঘটনার পরেরদিন ২৪ বছরের শিনাকে খুন করে পুঁতে দেওয়া হয় রায়গড়ের জঙ্গলে। মুম্বই থেকে ৮০ কিলোমিটার দূরে। গত অগাস্টে সেই দেহ উদ্ধার হয়। শুরু হয় ধরপাকড়। তদন্ত শুরু হতেই খুলতে থাকে একের পর এক রোমহর্ষক রহস্যের জাল। তদন্ত শেষের আগেই অবশ্য সরিয়ে দেওয়া হয় মুম্বই পুলিশ কমিশনার রাকেশ মারিয়াকে। তদন্তভার নেয় সিবিআই।
ম্যারেজ রেজিস্ট্রারের নথি বলছে, শিনা ও মিখায়েলের পিতা সিদ্ধার্থ দাসের সঙ্গে বিয়ে হয়েছিল ইন্দ্রাণীর। তবে তাদের বার্থ সার্টিফিকেটে বাবা-মায়ের জায়গায় লেখা রয়েছে ইন্দ্রাণীর বাবা-মায়ের নাম। দ্বিতীয় স্বামী সঞ্জীবের সঙ্গে ডিভোর্স হলেও নিয়মিত যোগাযোগ রাখতেন ইন্দ্রাণী। সঞ্জীব-ইন্দ্রাণীর মেয়ে বিধি আবার পিটারের অত্যন্ত প্রিয় ছিলেন। তাঁর স্বার্থ সুরক্ষিত করতেই কী সরানো হয় শিনাকে? পিটারের প্রথম পক্ষের সন্তান রাহুলের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কে ছিলেন শিনা। যা নিয়ে আপত্তি ছিল ইন্দ্রাণী-পিটারের। খুনের পিছনে কী এটাও একটা কারণ? সবমিলিয়ে ক্ষমতা আর লোভের জটিল আবর্তে ঘুরপাক খেয়েছে শিনা বোরা হত্যাকান্ড।