এই সমীক্ষাতে ১৬০০ জন মহিলা অংশগ্রহণ করেন। যার মধ্যে ৯২ শতাংশ মহিলার বক্তব্য, এই পরিস্থিতিতে সব কিছু সামলে উঠতে সরকারের হস্তক্ষেপ ও সাহায্য অত্যন্ত জরুরি। অনেকেই বলছেন, করোনা-পরবর্তী পরিস্থিতিতে তাঁদের আর্থিক অবস্থা আগের থেকে অনেক খারাপ হয়েছে। এই পরিস্থিতি থেকে বের হতে তাঁরা সকলেই মহিলাকেন্দ্রিক প্রকল্প, বাচ্চাদের দেখাশোনা ও বাড়ির কাজ সামলানোর জন্য অতিরিক্ত ছাড়ের কথা বলেছেন।
advertisement
কাজের জায়গা নিয়ে সমস্যা
এই পরিস্থিতিতে কাজের জায়গা নিয়ে সমস্যায় পড়েছেন অনেকেই। কারণ বাড়িতে কাজের ফলে বাড়ির আওয়াজ, বাচ্চাদের দেখভাল বা বাড়িতে অন্যান্য সমস্যা লেগে রয়েছে। এর মধ্যেই অনেক অফিস আর্থিক পরিস্থিতি সামলাতে কর্মচারীদের দিয়ে বাড়তি সময় পর্যন্ত কাজ করাচ্ছে। তাতে বাড়িতে অশান্তি, ঝামেলা বাড়ছে।
এর সঙ্গেই মহিলারা বেশি করে বাড়িতে থাকা শুরু করায় গার্হস্থ্য হিংসাও বাড়ছে। ফলে বেশ কয়েকজন বলছেন, বিভিন্ন সংস্থা যে বাড়তি সময় পর্যন্ত কাজ করাচ্ছে, তাতে এমনটা একেবারেই ঠিক নয় যে তারা বেশি ও ভালো কাজ পাচ্ছে। এটা কোথাও বলা নেই বেশি সময় ধরে কাজ করলে বেশি কাজ করা যায়।
তাঁদের আবেদন, সরকার যদি নির্দিষ্ট কোনও সময় সীমা বেধে দেয়, তা হলে এই সমস্যা আর হয় না।
ডবল ডিউটি
যেহেতু এখনও ওয়ার্ক ফ্রম হোম চলছে, তাই প্রায় সকলেই বাড়িতে। যারা রাজ্যের বাইরে থাকত, তারাও বাড়িতে। এই সবের ফলে বাড়ির কাজ অনেকটাই বেড়েছে। এখন কিছু মহিলাদের এই বাড়ির কাজ এবং অফিসের কাজ দু'টোই সামলাতে হচ্ছে। যার ফলে তাদের উপরে অনেকটা বেশি চাপ পড়ছে। সমীক্ষায় অনেকেই বলেছেন, যদি কাজ পরিবারের সকলে ভাগ করে নিত, তা হলে এই চাপ কমত। আবার অনেকে বলেছেন, যদি সংস্থার তরফে পুরো বিষয়টা মাথায় রেখে একটু ছাড় দেওয়া হত, তাহলে ভালো হত।
মহিলা ও শিশুদের উপরে অপরাধমূলক অত্যাচার বেড়েছে
লকডাউন এবং তার পরবর্তী পর্যায়ে মহিলা ও শিশুদের উপর অত্যাচারের পরিমাণ বেড়েছে। কোথাও না কোথাও চার জন মহিলার মধ্যে অন্তত একজন নিজেদের সুরক্ষিত মনে করছে না। বেশ কিছু রিপোর্ট বলছে, লকডাউনে ১৩ হাজারেরও এমন অভিযোগ জমা পড়েছে দেশে।
এই বিষয়ে বেঙ্গালুরুর একটি মহিলা বলছেন, এটা বন্ধ হওয়া দরকার। এমনি তে তো বাড়ির বাইরে মহিলারা নিজেদের সুরক্ষিত মনেই করেন না। এবার যদি বাড়িও সুরক্ষিত না হয়, তাহলে এর থেকে লজ্জার আর কিছু হবে না।
চাকরি চলে যাওয়ার ভয়
লকডাউনে ও পরবর্তী সময়ে অনেক মহিলারই চাকরি চলে গিয়েছে। সমীক্ষায় অংশগ্রহণ করা ১২ শতাংশ মহিলা এই সময়ে চাকরি হারিয়েছেন। এক্ষেত্রে যাঁরা একা নিজের সন্তানকে বড় করছেন, তাঁদের জন্য ভাতার ব্যবস্থা করার কথা বলছেন সকলে। কারণ এর জন্য মা ও বাচ্চা দু'জনেই প্রভাবিত হচ্ছে।
বাচ্চার জন্য অন্তত ভাতা জরুরি, বাচ্চার দেখভালের জন্য
করোনা পরিস্থিতি ধীরে ধীরে স্বাভাবিকি হলেও মহিলাদের স্ট্রাগলে কোনও পরিবর্তন তেমন আসেনি। ফলে এই জায়গায় সরকার ও সংস্থাগুলির হস্তক্ষেপের প্রয়োজন বলে মনে করছেন সকলে।