ডিএ পাওয়া রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের অধিকার তার স্বপক্ষে যেমন একের পর এক যুক্তি পেশ হয়েছে, তেমনি লাগাতার এই দাবির বিরোধিতা করে এসেছে রাজ্য সরকার ৷ আইনি নয়, নীতিগত বাধ্যবাধকতা থেকেই সরকার ডিএ দেয় কর্মচারীদের, এই দাবিই উঠেছে রাজ্য সরকারের তরফে ৷ কিন্তু ডিএ নিয়ে রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের পক্ষে একাধিক যুক্তি পেশ করেছেন মামলাকারীদের তরফের আইনজীবীরা ৷
advertisement
এর আগের দিনই রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের স্বপক্ষে আরও আইনি যুক্তি তুলে ধরেন রাজ্যের অর্থ দফতরের কর্মী স্বপনকুমার দে'র আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য এবং ফিরদৌস শামিম ৷ তারা বলেন, ‘সংসদে ডিএ নিয়ে বিধি তৈরি হয়, ডিএ নিয়ে কমিশন গঠিত হয় এমনকি মহার্ঘভাতার পরিমাণ খতিয়ে দেখতে কনজিউমার প্রাইস ইনডেক্স বানানো হয়, সেক্ষেত্রে ডিএ যে কর্মীদের অধিকার নয় তা কিভাবে দাবি করে রাজ্য সরকার?’
আরও পড়ুন
SSC Exclusive: এসএসসি নিয়োগ নিয়ে মামলা তুলতে চাপ, হুমকি ফোন পাচ্ছেন মামলাকারীরা !
সরকারি কর্মীদের কেন ডিএ অর্থাৎ মহার্ঘভাতা পাওয়া উচিত তার স্বপক্ষে একাধিক আইনি যুক্তি আদালতের সামনে রাখেন আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য। কেন ডিএ সরকারি কর্মচারীদের অধিকার, তার স্বপক্ষে তিনি বলেন, পঞ্চম বেতন কমিশনের সুপারিশ মেনে সংবিধানের ৩০৯ ধারা অনুযায়ী, ২০০৯ সালে রিভিশন অফ পে অ্যান্ড অ্যালাউন্স আইন তৈরি করে রাজ্য সরকার। এই আইনের মধ্যেই ডিএ-র অধিকারের কথা নিহিত । তিনি একইসঙ্গে প্রশ্ন তোলেন, তবে ডিএ বা মহার্ঘ ভাতাকে কেন আইনি অধিকার বলব না?
আরও পড়ুন
দেশের ‘বেটি’দের কথা ভেবে এই স্কিমে পরিবর্তন আনল মোদি সরকার
প্রায় এক বছরের বেশি সময় ধরে চলছে এই মামলা ৷ এখন অপেক্ষা শুধু আদালতের রায় ঘোষণার ৷ জানা গিয়েছে, রাজ্য সরকারি কর্মীদের বকেয়া ডে.এ মেটানোর দাবিতে কনফেডারেশন অব স্টেট গভর্নমেন্ট এমপ্লয়িজ ফেডারেশনের সম্পাদক মলয় মুখোপাধ্যায় গত নভেম্বরে স্টেট অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ ট্রাইব্যুনালের মামলা দায়ের করলে তাদের তরফে সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়, ডিএ দেওয়া সরকারের ইচ্ছার উপর নির্ভর করে ৷ ট্রাইব্যুনালের এই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা দায়ের করেন মলয় মুখোপাধ্যায়৷
‘ডিএ কর্মীদের অধিকার নয়’, স্যাটের এই নির্দেশে ক্ষুব্ধ আদালত ৷ অ্যাডভোকেট জেনারেলর আপত্তি উড়িয়ে মামলা গ্রহণ করা হয় ৷ রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের ডিএ মামলা নিয়ে স্যাট-এর নির্দেশকে তুলোধনা করে ডিভিশন বেঞ্চ ৷
সম্প্রতি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ১৫ শতাংশ হারে ডিএ বা মহার্ঘ ভাতা দেওয়ার ঘোষণার পর কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের মধ্যে সেই বেতন ফারাক কমে ৩৯ শতাংশে এসে দাঁড়ায় ৷কিন্তু গত ৭ মার্চ আরও দুই শতাংশ হারে কেন্দ্রীয় কর্মচারীদের মহার্ঘ ভাতা বৃদ্ধির কথা ঘোষণা করে কেন্দ্র ৷ ফের ফারাক বেড়ে দাঁড়ায় ৪৯ শতাংশে ৷