খরচ কমাতে নজরদারি চালাবে নবান্ন ৷ কোপ পড়ছে গাড়ি, সৌন্দর্যায়নের খরচে। নবান্নে উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকে খরচ কমানোর লক্ষ্যমাত্রাও বেঁধে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ঋণ ও কর্মীদের ডিএ বাবদ রাজ্যের ঘাড়ে চাপছে বিপুল বোঝা। সেই ধাক্কায় উন্নয়নের কাজ যাতে ব্যাহত না হয় , সেজন্যই এই উদ্যোগ বলে জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।
এদিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যে নির্দেশিকা জারি করেছেন, তা হল-
advertisement
১) যে কোন দফতরের যেকোনো বৈঠক বা সভা সরকারি অডিটোরিয়াম বা সভাঘরে করতে হবে, এক্ষেত্রে বেসরকারি কোন হোটেল বা জায়গা ভাড়া নেওয়া যাবে না।
২) বছরে ৫ লক্ষ টাকার বেশি খরচ করা যাবে না কোন দফতর বা অফিসের সৌন্দর্যকরণের কাজে।
৩) যেকোন সরকারি সভার ক্ষেত্রে সভাস্থল সাজানোর জন্য অপেক্ষাকৃত কম খরচ করতে হবে।
৪) সরকারি অনুষ্ঠানে খাবার খরচ কমাতে হবে।
৫) সরকারি অনুষ্ঠানে আপ্যায়ন খরচ কমাতে হবে তবে সরকারি অতিথি বা বিদেশি অতিথিদের ক্ষেত্রে সেটা বাড়তে পারে।।
৬) জরুরি প্রয়োজন বা পরিষেবা ছাড়া কোন দফতর নতুন কোন গাড়ি কিনতে পারবে না।
৭) সরকারি গাড়ির তেলের খরচ কমাতে হবে।
৮) একাধিক গাড়ি ব্যবহার নয়, মন্ত্রী-সচিবদের নির্দেশ মুখ্যমন্ত্রীর
৯)এসি মেশিন বসানো ও বিদ্যুৎ খরচ কমানোর উপর জোর।
১০) দিল্লি বা অন্য রাজ্যে কোন সরকরি আধিকারিকদের বা মন্ত্রীদের যাওয়ার ক্ষেত্রে একেবারেই অনুমতি ছাড়া যাওয়া যাবে না।
১১) বিদেশ যাওয়ার ক্ষেত্রে কড়াকড়ি করা হচ্ছে।
১২) বিমানে যাতায়াতের ক্ষেত্রে ইকোনমি ক্লাসের টিকিট কেটেই সফর করতে হবে।
আরও পড়ুন
ব্যয় কমাতে সবার আগে কোপ নবান্নের মেনুতে, তালিকা থেকে বাদ লোভনীয় সব পদ
সরকারি এই নির্দেশিকা শুধুমাত্র সরকারি দফতরের জন্য নয়, পাশাপাশি সরকার পোষিত সমস্ত সংস্থা যেমন, মিউনিসিপ্যালিটি, পৌরসভা পঞ্চায়েত সহ বিভিন্ন বোর্ডের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য হবে।
পদ্ধতিটা পুরনো। ১৯৩০ সাল নাগাদ বিশ্বমন্দার সময়ের। সরকারি খরচ কমিয়ে বাজেট ঘাটতি ধরে রাখার পথ দেখিয়েছিলেন ব্রিটিশ অর্থনীতিবিদ
জন মেইনার্ড কেইনস। রাজ্যের আর্থিক স্বাস্থ্য ধরে রাখতে একই পথ নিল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রশাসন।
খরচ কমাতে তৈরি হয়েছে দুটি কমিটি। সূত্রের খবর, বিভিন্ন দফতরের মধ্যে সমন্বয় না থাকাতেও অপ্রয়োজনীয় খরচ বাড়ছিল। প্রকল্পের খরচও
আয়ত্তে থাকছিল না। বৈঠকে এনিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর ক্ষোভের মুখে পড়তে হয় বেশ কয়েকজন মন্ত্রী ও সচিবকে। নতুন নির্দেশিকায় এই প্রবণতা বন্ধ
হবে বলেও আশা।