শুধু ভারতেই নয়, পশ্চিম এশিয়ার দেশগুলিকে, গ্রিস, তুরস্কতেও এই প্রচলিত বিশ্বাস রয়েছে। ভারতে সাধারণত এই নজর লেগে যাওয়া থেকে বাঁচতে নানা রকম প্রচলিত এবং ধর্মীয় প্রতিকার পালন করা হয়। এর মধ্যে অন্যতম হল – কালো তিলক লাগানো, লেবু-লঙ্কা ঝোলানো, শুকনো লঙ্কা পোড়ানো, লাল-কালো সুতো বাঁধা অথবা তাবিজ বাঁধা ইত্যাদি।
সময়ের সঙ্গে সঙ্গে প্রতিকারের উপায়ও বদলেছে। আজকাল নীল-সাদা চোখের মতো কাচের ডিস্ক বেশ জনপ্রিয়তা লাভ করেছে। প্রচলিত বিশ্বাস অনুযায়ী, এটি কুনজর থেকে বাঁচাতে পারে। নীল এই চোখটিকে ইভিল আই বলা হয়। ব্রিটানিকা অনুযায়ী, লেভ্যান্ট, আফগানিস্তান, দক্ষিণ স্পেন এবং মেক্সিকোয় মানুষকে ইভিল আই তাবিজ উপহার দেওয়া চল রয়েছে।
advertisement
আরও পড়ুন- ১৬০০ কোটি পাসওয়ার্ড ফাঁস! আপনারটা নেই তো? বিরাট আশঙ্কায় কী পরামর্শ Google-এর? সতর্ক হন
অনেকেই আজকাল ইভিল আই ব্রেসলেট পরছেন, বাড়ির ভিতরে ও বাইরে ইভিল আই-এর অ্যাকসেসরি রাখছেন। এই ধারণা পুরনো হলেও বর্তমানে সেলিব্রিটি, ফ্যাশন ডিজাইনার এবং গহনা নির্মাতারা এটিকে জনপ্রিয়তা দিয়েছে।
ইভিল আই: গ্রিক ইভিল আই গ্রিস তথা সারা বিশ্বে সবথেকে প্রচলিত প্রতীক। প্রচলিত ইভিল আই-এ থাকে একটি নীল চোখ, যার মধ্যে থাকে কালো রঙের তারা। আর সাদা রঙের আইরিস। বিশ্বের সবথেকে পুরনো কুসংস্কার বলে গণ্য করা হয় এটিকে। এমনকী গ্রিক এবং রোমান পাণ্ডুলিপিতেও এর উল্লেখ রয়েছে। সেই বিশ্বাসই পরে ছড়িয়ে পড়েছিল পশ্চিম এশিয়া, পশ্চিম আফ্রিকা, মধ্য আমেরিকা ও মেক্সিকো, মধ্য এশিয়া এবং ইউরোপের বিস্তীর্ণ অংশ বিশেষ করে ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চলে।
ফ্যাশনে ইভিল আই-এর প্রবেশ: এটি প্রচলিত সংস্কৃতি এবং গহনার ডিজাইনেও ঢুকে পড়েছে। ফলে ইভিল আই আজ ট্রেন্ডি সিম্বল হয়ে উঠেছে। অনেকেই ফ্যাশনেবল অ্যাকসেসরি হিসেবেও এটি ব্যবহার করে থাকেন। সমস্ত ধরনের গহনা, নেকলেস, ব্রেসলেট থেকে শুরু করে কানের দুল এবং আঙটিতেও এটি ব্যবহার করা হয়। শুধু তা-ই নয়, আজকাল জামাকাপড়, গৃহসজ্জা, ফোন কেস এমনকী ট্যাটুতেও এর প্রচলন রয়েছে।
৫০০০ বছরের পুরনো ইতিহাস: বিবিসি জানাচ্ছে যে, সিরিয়ার টেল ব্রাকের খননকার্যের সময় জিপসাম অ্যালাবাস্টারের তৈরি আই স্কাল্পচার পাওয়া গিয়েছিল। মনে করা হয় যে, খ্রিস্ট পূর্ব ৩৫০০ বছরের পুরনো এটি। হামজা হল হাতের তালুর মতো আকারের একটি তাবিজ। যার মাঝখানে রয়েছে একটি চোখ।
কীভাবে কাজ করে ইভিল আই? প্রচলিত বিশ্বাস অনুযায়ী, গ্রিক ইভিল আই সমস্ত কুনজর বা নেতিবাচক এনার্জি শুষে নিতে সক্ষম। যে ব্যক্তি এটি ধারণ করেন, তাঁকে খারাপ নজর বা খারাপ জিনিস থেকে রক্ষা করে এটি।