বিশ্বের সমস্ত নির্মাণ, যন্ত্রপাতি এই দেবতার অধীন। বিশ্বকর্মা পুজোয় বিভিন্ন যন্ত্রপাতি, কারখানা এবং যানবাহনের পুজোর নিয়ম রয়েছে। পুরান মতে বিশ্বাস, প্রজাপতি ব্রহ্মার নির্দেশে এই ধরাধাম নিজের হাতে বানিয়েছিলেন বিশ্বকর্মা।
দেবাদিদেবের ত্রিশূল, বিষ্ণুর সুদর্শন চক্র বিশ্বকর্মা দেবের হাতে তৈরি বলে বিশ্বাস। শেষ নয় এখানেই। পুরাণ মতে বিশ্বাস, রাবণের সোনার লঙ্কা, দেবরাজ ইন্দ্রের স্বর্গরাজ্য বানিয়েছেন বিশ্বকর্মা। আবার জগন্নাথ দেবের মূর্তিও বিশ্বকর্মার হাতেই তৈরি বলে বিশ্বাস।
advertisement
বিশ্বকর্মা পুজোর মাধ্যমেই বাংলায় উৎসবের মরশুম শুরু হয়ে যায়। আগামী সোমবার চলতি বছরের বিশ্বকর্মা পুজো। বলা হয় এই দিন ঘরে বিশ্বকর্মা পুজো করলে বাস্তু দোষ কেটে যায়। কারণ নির্মাণের অধিপতি তিনি।
আবার ব্যবসার স্থলে বিশ্বকর্মা পুজো করলে শ্রীবৃদ্ধি হয়। কিন্তু বিশ্বকর্মা পুজোয় যানবাহনের পুজো দেওয়ার বিশেষ রীতি প্রচলিত রয়েছে। আপনার প্রিয় যানবাহনের সুস্বাস্থ্য এবং দীর্ঘায়ু চেয়ে ওই দিন করুন এই কাজগুলি। বিশ্বকর্মা পুজোর দিন অবশ্যই আপনার যানবাহন ধুয়ে মুছে পরিষ্কার করবেন।
আপনি যদি নিজে করতে না পারেন, তা হলে অন্য কাউকে দিয়ে অবশ্যই যানবাহন পরিষ্কার করাবেন। যদি অন্য কেউ আপনার যানবাহন পরিষ্কার করে দেয়, তাহলে আপনি একবার নিজে কাপড় দিয়ে বাইক অথবা গাড়িটি মুছে দেবেন।
এদিন আপনার প্রিয় যানবাহনের সামনে বিশ্বকর্মার আরাধনা করে পুজো দেবেন। ফুল, মিষ্টি, ধুপ, প্রদীপ সহযোগে বিশ্বকর্মা দেবের কাছে প্রার্থনা জানাবেন। পুজোয় অবশ্যই দেবেন সাদা মিষ্টি এবং হলুদ ফুল।
এদিন আপনার প্রিয় যানবাহনের উপর একটি মালা পরিয়ে দিন। বিশ্বাস করা হয়, যানবাহনকে উৎসর্গ করা এই মালা দেবশিল্পী বিশ্বকর্মা গ্রহন করেন। তাই এদিন বাইক, সাইকেল অথবা আপনার প্রিয় চারচাকায় একটি মালা পরিয়ে দিতে ভুলবেন না।
আরও পড়ুন- আধারের বায়োমেট্রিক ক্লোন করে মুহূর্তে টাকা গায়েব! কীভাবে লক করবেন কার্ড? জানুন
বিশ্বকর্মা পুজো শেষ হলে লাল সিঁদুরের স্বস্তিক চিহ্ন এঁকে দিন আপনার যানবাহনে। মনে করা হয়, যানবাহনের উপর স্বস্তিক চিহ্ন আঁকলে তার ওপর বিশ্বকর্মার আশীর্বাদ বজায় থাকে। ফলে তা আপনার ব্যয় বাড়ায় না। আপনাকে বিপদেও ফেলে না।
এদিন পারলে আপনার যানবাহনের সামনের এবং পিছনের চাকার নিচে দুটি পাতিলেবু রাখুন। তারপর যানবাহনটিকে একটু আগে পিছে করুন। এরপর ওই লেবুগুলি ভাসিয়ে দিন জলে। প্রার্থনা করুন বিশ্বকর্মার কাছে।
সম্ভব হলে এদিন আপনার যানবাহনকে বিশ্রাম দিন। যদি তা সম্ভব নাও হয়, পুজোর সময় অন্ততপক্ষে যানবাহনটিকে বিশ্রামে রাখবেন। তবে পুজো চলাকালীন অবশ্যই একবার গাড়ির অথবা বাইকের ইঞ্জিন চালু করবেন। প্রার্থনা করবেন যাতে আপনার যানবাহনটি আগামীদিনেও এইভাবে চলতে থাকে।
এদিন ভুল করেও কারোর হাতে আপনার আপনার যানবাহন তুলে দেবেন না। তাহলে ওই যানবাহনের প্রতি আপনার ব্যায় বাড়বে বলে ধারণা। বাড়িতে বিশ্বকর্মার মূর্তি পুজো হলে অবশ্যই তার হাতে ঘুড়ি এবং কাশফুল তুলে দেবেন।
Nayan Ghosh