এর মাধ্যমে ব্যবহার করা যায় বিভিন্ন ধরনের মাল্টিমিডিয়া ফিচার, ইমোজি এবং আরও অনেক কিছু। Google এই RCS টেকনোলজি কিনে নিয়েছে এবং এটি ব্যবহার করে তারা চালু করতে পারে মেসেজ অ্যাপ। যা ব্যবহার করতে পারবেন Android ইউজাররা। সুতরাং এই RCS মেসেজিং কী, কী ভাবে সেটা ব্যবহার করতে হয় এবং কোন কোন ফোনে সেটি কাজে করবে ইত্যাদি বিষয়ে জেনে নিন সমস্ত খুঁটিনাটি।
advertisement
RCS মেসেজিং—
২০০৭ সালে পথ চলা শুরু হয়েছিল এই RCS মেসেজিং সার্ভিসের। এটি একটি পুরনো এসএমএস সার্ভিস। এই ফিচার ব্যবহার করতে। বিভিন্ন ধরনের টেলিকম অপারেটরের ইউজারদের RCS মেসেজিং নেটওয়ার্ক ব্যবহার করতে হত, যা ডেটার মাধ্যমে ব্যবহার করা যেত। কিন্তু, GSM অ্যাসোসিয়েশন সেটির দায়িত্ব নিয়ে নেওয়ার পরে RCS ব্যবহার করতে পারে সকল টেলিকম কোম্পানি, ফোন, ব্র্যান্ড এবং সফটওয়্যার কোম্পানি। কিন্তু, বর্তমানে হোয়াটসঅ্যাপ এবং আইমেসেজের ব্যবহার বেড়ে যাওয়ায় এই RCS মেসেজের ব্যবহার অনেকটাই কমে গিয়েছে।
আরও পড়ুন - সাবধান! বন্ধ হয়ে যেতে পারে আপনার Netflix অ্যাকাউন্ট! কেন জানুন
RCS মেসেজিং কী কী অফার করে—
খুব সহজ করে বললে বলা যেতে পারে RCS মেসেজিং হল Android ভার্সনের আইমেসেজ। এর কাজ অনেকটা হোয়াটসঅ্যাপের মতোই। এর মাধ্যমে ব্যবহার করা যায় মাল্টিমিডিয়া মেসেজ, রিচ টেক্সট কনটেন্ট, শেয়ার ফাইল। এর মাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের ভিডিয়ো এবং ইমেজ শেয়ার করা সম্ভব। এই ধরনের সুবিধা এসএমএসের ক্ষেত্রে পাওয়া সম্ভব নয়। এর জন্যই ব্যবহার করা হয় RCS মেসেজিং।
এ ছাড়াও এই RCS মেসেজিং সার্ভিসের মাধ্যমে আরও বেশ কিছু সুবিধা পাওয়া যায়। এর মধ্যে রয়েছে ডিজিটাল বোর্ডিং পাস। যা বিমানবন্দরের টার্মিনালে ব্যবহার করা সম্ভব। এ ছাড়া এর মাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের জিনিস কেনা সম্ভব। এর সবথেকে বড় সুবিধা হল অন্য কোনও শপিং অ্যাপ ডাউনলোড না করেই এই মেসেজিং সার্ভিসের মাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের জিনিস কেনা সম্ভব। RCS মেসেজিং সার্ভিস হল একটি ওয়ান স্টপ শপ।
RCS-এর ভবিষ্যৎ—
বাজারে নিজেকে প্রতিষ্ঠা করার জন্য RCS বেশ কয়েক বছর ধরেই চেষ্টা করে যাচ্ছিল। কিন্তু, Google সেখানে ঢুকে সব কিছু পাল্টে দিয়েছে। Google খুলেছে একটি মেসেজ অ্যাপ যা RCS সাপোর্ট যুক্ত। নিজেদের নেটওয়ার্কের মাধ্যমেই ব্যবহার করা যাবে এই সার্ভিস। Google আই/ও ২০২২ এ জানানো হয়েছে যে, RCS নেটওয়ার্কের প্রায় ৫০০ মিলিয়ন ইউজার রয়েছে। এই সার্ভিস পাওয়া যায় আমেরিকা, ব্রিটেন, ফ্রান্স, ইউরোপের কয়েকটি দেশে এবং ভারতে। রাশিয়া এবং চিন ছাড়া পৃথিবীর বেশিরভাগ জায়গায় চালু রয়েছে এই RCS সার্ভিস। গুগলের তরফে জানানো হয়েছে যে ভবিষ্যতে এই সার্ভিস আরও এগিয়ে যেতে পারে।
আরও পড়ুন - ভুলেও এই মেসেজে ক্লিক করবেন না! অনলাইন শপিংয়েও সাবধান! খালি হয়ে যাবে ব্যাঙ্কের সব টাকা!
নিজেদের ফোনে RCS মেসেজিং সক্রিয় করার উপায়—
Android ইউজারদের এ জন্য প্রথমেই যেতে মেসেজ অ্যাপের সেটিং অপশনে। এরপর সেখানে দেখতে হবে চ্যাট ফিচার অপশন রয়েছে কিনা। নিজেদের পছন্দ মতো এই সার্ভিস ম্যানুয়ালি এনাবল এবং ডিসাবল করা সম্ভব। কিন্তু একটি কথা মনে রাখা প্রয়োজন যে, এর জন্য অ্যাক্টিভ ডেটা প্যাক থাকা জরুরি। কারণ সেই ডেটা ব্যবহার করেই RCS মেসেজিং সার্ভিসের মাধ্যমে মেসেজ সেন্ড এবং রিসিভ করা যাবে।
এই সার্ভিস এনাবল না করলে মেসেজ পাঠানো যাবে না। এই ক্ষেত্রে এসএমএস রুটের মাধ্যমেও সেই মেসেজ সেন্ড হবেনা। এই ক্ষেত্রে আরেকটি বিষয়ের দিকেও নজর দিতে হবে। আপনি যাকে সেই মেসেজ সেন্ড করছেন সেই রিসিভারের ফোনে RCS মেসেজিং সার্ভিস সাপোর্ট করছে কিনা অথব রিসিভার সেই মেসেজ কি এসএমএস ফরম্যাটে পাচ্ছে। RCS মেসেজের তরফে জানানো হয়েছে এটি খুবই সুরক্ষিত। তাদের এই সার্ভিসের মাধ্যমে ইউজারদের সমস্ত তথ্য সুরক্ষিত থাকে। RCS মেসেজিং সার্ভিস ক্লায়েন্টের প্রোটোকল এনক্রিপশন স্ট্যান্ডার্ড বজায় রাখতে সাহায্য করে। RCS মেসজিং সার্ভিসের তরফে জানানো হয়েছে যে তারা হল স্প্যাম ফ্রি। কিন্তু সম্প্রতি গুগলের তরফে জোর দেওয়া হয়েছে এই ফিচার ভারতে বন্ধ করে দেওয়ার জন্য। কারণ বিভিন্ন ধরনের গ্রাহকের কাছে এই RCS মেসেজিং সার্ভিসের মাধ্যমে স্প্যাম মেসেজ পাঠানো হচ্ছে।
বাজারের অন্যান্য বিভিন্ন প্রোডাক্টের তুলনায় এই RCS মেসেজিং সার্ভিস এখনও বেশ নতুন প্রোডাক্ট। কিন্তু, মনে করা হচ্ছে Google আগামী দিনে এই RCS মেসেজিং সার্ভিসকে উন্নত প্রোডাক্ট হিসাবে গড়ে তুলতে সক্ষম হবে।