চন্দ্রযান-৩:
চন্দ্রযান ৩-এ রয়েছে ৮টি পে-লোডের একটি সেট। এর পাশাপাশি চন্দ্রযান ৩-এ একটি প্রপালশন মডিউল শেপও রয়েছে, যা বাসযোগ্য গ্রহ পৃথিবীর স্পেকট্রো পোলারিমেট্রির সংক্ষিপ্ত রূপ। প্রাণের জন্য উপযুক্ত পরিবেশের মধ্য দিয়ে যাওয়া নক্ষত্রের আলোয় যে পরিবর্তনগুলি ঘটে, তা পর্যবেক্ষণ করার জন্য শেপ ডিজাইন করা হয়েছে। আসলে পৃথিবীর মতো অন্যান্য বাসযোগ্য গ্রহের সন্ধান করে চলেছে নাসা এবং ইউরোপীয় মহাকাশ সংস্থাগুলি। তাদের সঙ্গে যোগ দেওয়াই এখন এর অন্যতম প্রধান উদ্দেশ্য।
advertisement
আরও পড়ুন: পুরসভায় নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় এবার মন্ত্রী সুজিত বসুকে তলব, নোটিস পাঠাল সিবিআই! তুমুল শোরগোল
চন্দ্রের ভূ-কম্পন নির্ণয় করবে আইএলএসএ:
চন্দ্রযান ৩-এর ল্যান্ডার মডিউল আইএলএসএ নামে একটি বিশেষ যন্ত্র বহন করেছে। এটি মূলত চাঁদের সিসমিক কার্যকলাপ নিরীক্ষণের এক বিশেষ যন্ত্র। এই যন্ত্রের কাজ হল, চাঁদের ভূ-কম্পন শনাক্ত এবং অধ্যয়ন করা। আসলে মনে করা হয় যে, চাঁদ পৃথিবীর তুলনায় ১০০০ গুণ বেশি শীতল। যখন আইএলএসএ দ্বারা এটি নিশ্চিত ভাবে বলা যাবে, তখন এটি ভবিষ্যতের আবিষ্কারের পথও খুলে দেবে। চন্দ্রযান-৩ অবতরণের পর লেজার ইন্টারফেরোমিটার গ্র্যাভিটেশনাল ওয়েভ অবজারভেটরি অর্থাৎ এলআইজিও চাঁদের পৃষ্ঠে স্থাপন করবে। আর এলআইজিও হল একটি উন্নত যন্ত্র, যা মহাকর্ষের তরঙ্গ শনাক্ত এবং অধ্যয়ন করতে ব্যবহৃত হয়।
আরও পড়ুন: যাদবপুরে শান্তি রক্ষা করতে সেনা? ভরদুপুরে চাঞ্চল্য, পড়ুয়ারা ঘিরে ধরতেই আসল রহস্য ফাঁস
রম্ভা এবং ল্যাংমুইর প্রোবও চাঁদে পাঠানো হয়েছে। এই যন্ত্রগুলি চন্দ্রপৃষ্ঠের কাছাকাছি প্লাজমা গতিবিধি অধ্যয়নের জন্য বেশ কয়েকটি পরীক্ষা চালাবে। পদার্থের একটি বিশেষ অবস্থা হল প্লাজমা। যেখানে ইলেকট্রন এবং আয়নের মতো চার্জযুক্ত কণা বিদ্যমান। আর এই গবেষণা ভবিষ্যতের চন্দ্র অভিযানের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ প্রমাণিত হতে পারে।
চন্দ্রের পৃষ্ঠের থার্মো-ফিজিক্যাল ধরন অধ্যয়ন:
চাঁদের পৃষ্ঠে থার্মো-ফিজিক্যাল এক্সপেরিমেন্ট চন্দ্রযান ৩-এর জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ পেলোড। এটি চাঁদের পৃষ্ঠের থার্মো-ফিজিক্যাল ধরন চিহ্নিত করবে। সারফেস থার্মো-ফিজিক্যাল এক্সপেরিমেন্টের মাধ্যমে চাঁদের পৃষ্ঠের তাপমাত্রার পরিবর্তনের প্রতিক্রিয়া সম্পর্কে তথ্য পাওয়া যাবে। এই তথ্য আমাদের পৃথিবীর ভূতাত্ত্বিক ইতিহাসের সঙ্গে আরও ভাল তুলনা করতেও সাহায্য করবে। এর পাশাপাশি আমরা পৃথিবীর অতীত সম্পর্কেও গভীর ধারণা পাব। সেই সঙ্গে এ-ও জানা যাবে যে, পৃথিবীতে কীভাবে পরিবর্তন ঘটতে থাকবে।
লেজার রেট্রোরিফ্লেক্টর অ্যারে চাঁদে কী করবে?
লেজার রেট্রোরিফ্লেক্টর অ্যারে হল একটি নাসা পেলোড। যা চাঁদ এবং পৃথিবীর মধ্যে রিয়েল-টাইম দূরত্ব পরিমাপের সুবিধার্থে ডিজাইন করা হয়েছে। রিয়েল-টাইম দূরত্ব পরিমাপের মাধ্যমে আমরা চাঁদের কক্ষপথের আচরণ এবং পৃথিবীতে এর প্রভাব সম্পর্কে গভীর ভাবে উপলব্ধি করতে পারব। জোয়ার-ভাটার ভবিষ্যদ্বাণী করা, সমুদ্রের স্রোত বোঝা এবং উপকূলীয় পরিবেশ সঠিক ভাবে পরিচালনার জন্য এই তথ্য অপরিহার্য। আলফা পার্টিকেল এক্স-রে স্পেকট্রোমিটার এবং লেজার ইনডিউসড ব্রেকডাউন স্পেকট্রোস্কোপ যন্ত্রগুলি চাঁদের মাটির সম্পদের অনুসন্ধান করতে সাহায্য করবে। এছাড়া চাঁদের মাটির গঠনও অধ্যয়ন করতেও সহায়ক এটি।