তা বলে ইমারসন রডকে অবহেলা করা যাবে না। ইমারসন রড খুবই বাজেট-ফ্রেন্ডলি এক গ্যাজেট। ইমারসন রডের দাম ৩০০ টাকা থেকে শুরু হয়ে থাকে। ১৫০০ টাকা পর্যন্তও তা যেতে পারে, বিষয়টা কোন ব্র্যান্ডের কেনা হবে তার উপরে নির্ভর করছে। বিশেষ করে ছাত্রছাত্রী বা ছোট পরিবারগুলির জন্য ইমারসন রড আদর্শ। সাধারণত ১.৫ থেকে ২.০ কিলোওয়াট বিদ্যুৎ খরচ হয়। ঘণ্টা হিসেবে ধরলে ১.৫ ইউনিট। ফলে, অতিরিক্ত বিদ্যুতের বিল আসার ভয়ে কাঁপতে হয় না, গিজার বা হিটার এই সুবিধা দেয় না।
advertisement
ইমারসন রডের আরও একটা বড় সুবিধা হল এই যে, এটা পোর্টেবল- যে কোনও জায়গায় খুব সহজেই নিয়ে যাওয়া যায়। যে সব পড়ুয়ারা মেসে থাকেন তাঁদের জন্য সুবিধাজনক। কিংবা সপরিবারে বেড়াতে গেলেও স্বচ্ছন্দে ব্যাগে ঢুকিয়ে নেওয়া যায়। ওজনেও খুব হালকা। জল গরম হতে ১৫ থেকে ২০ মিনিট সময় লাগে। তবে জলে সঠিকভাবে ডোবাতে হবে। সমস্যা হল, ইমারসন ব্যবহারের সময় সতর্ক থাকতে হবে। একটু এদিক ওদিক হলেই কারেন্ট লাগতে পারে। যেমনটা হয়েছে সম্প্রতি উত্তরপ্রদেশের বিজনোরে। ঘটনা মর্মান্তিক, সন্দেহ নেই। তবে গ্যাজেট ঠিক ভাবে ব্যবহার করতে জানলে কিন্তু সমস্যা হওয়ার কথা নয়।
আরও পড়ুনঃ আর লাগবে না দুধ-চিনি, সস্তার মশলার ‘স্পেশ্যাল চা’-খেলেই হবে কামাল! সর্দি-কাশি পালাবে বাপ বাপ বলে…
সবার আগে আসা যাক সতর্কতার প্রসঙ্গে। ইমারসন রড ব্যবহারের সময়ে এই ১০ বিষয় নিয়ে বিশেষ ভাবে সচেতন থাকার প্রয়োজন রয়েছে:
১. ইমারসন রডের জন্য একটি 16 amp পাওয়ার সাপ্লাই সকেট ব্যবহার করা উচিত।
২. ব্যবহার করার আগে তারের ওয়্যারিং এবং বিল্ড কোয়ালিটি চেক করা খুবই দরকার।
৩. জল গরম করার জন্য স্টিল বা লোহার মতো ধাতুর বালতি নয়, প্লাস্টিকের বালতি ব্যবহার করা উচিত, ধাতু বিদ্যুৎ পরিবাহী, ফলে ইলেকট্রিক শক লাগার সম্ভাবনা বেড়ে যায়।
৪. জলের বালতি শুকনো জায়গায় রাখতে হবে।
৫. ইমারসন রড ব্যবহার করার সময়ে খালি পায়ে থাকা চলবে না, জুতো বা চপ্পল পরতে হবে, বিশেষ করে যদি ভেজা বাথরুমে জল গরম করা হয়।
৬. রডটি জলে রাখার পরেই কেবল সুইচ অন করা উচিত, আগে কোনও ভাবেই নয়।
৭. ঠিক তেমনই রডটি জল থেকে বের করার আগে সুইচ অফ করতে হবে।
৮. জল গরম করার সময় বালতিতে হাত দেওয়া চলবে না।
৯. শিশু এবং পোষ্য প্রাণীদের রড আর বালতি থেকে দূরে রাখতে হবে।
১০. ব্যবহারের পরে ইলেকট্রিক বোর্ড থেকে ইমারসন রডের প্লাগটি খুলে তা অন্য জায়গায় শুকনো করে মুছে রেখে দিতে হবে।
আরও পড়ুনঃ গাদা গাদা ড্রাই ফ্রুট খাচ্ছেন? ‘এঁদের’ জন্য যমের সমান…! শীতে দফারফা করে দেবে শরীর
এ তো গেল ব্যবহার করার সময়ে সচেতন থাকার বিষয়। এর বাইরে কোনও ইমারসন রড কেনার আগেও আমাদের ৫টি বিষয় খতিয়ে দেখে নেওয়া প্রয়োজন। সেগুলো কী, সেটা এবার এক ঝলকে দেখে নেওয়া যাক!
১. রডের কোয়ালিটি পরীক্ষা: বাজারে অনেক স্থানীয় ব্র্যান্ডের ইমারসন রড পাওয়া যায় যেগুলো সস্তা, কিন্তু তাদের মান ভাল নয়। ইমারসন রডের তার এবং স্টিলের গুণমান ভাল এবং টেকসই হতে হবে। কভার অর্থাৎ রডের উপরের ভাগ যদি প্লাস্টিকের হয় তবে তাও মজবুত হওয়া উচিত।
২. ISI মার্ক: কেনার সময়ে ISI মার্ক ব্যুরো অফ ইন্ডিয়ান স্ট্যান্ডার্ডস (BIS) দ্বারা ভেরিফায়েড কি না দেখে নিতে হবে। আসলে, ISI মার্ক ভাল গুণমানের গ্যারান্টি দেয়। তা থাকলে ইণারসন রড দ্রুত নষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা কমে যায়।
৩. দাম এবং ওয়ারেন্টি: কেনার আগে বিভিন্ন কোম্পানির ইমারসন রডের দাম তুলনা করা উচিত। কত মাসের ওয়ারেন্টি বা গ্যারান্টি আছে তাও জেনে নিতে হবে। যাতে কোনও ধরনের ত্রুটি দেখা দিলে তা সহজেই বদলানো যায়।
৪. পাওয়ার রেটিং পরখ: ইমারসন রডের পাওয়ার রেটিং পরখ করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। যদি বাড়ির তার ইমারসন রডের পাওয়ারের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ না হয়, তাহলে কম পাওয়ারের একটা রড কেনা উচিত হবে- এতে শর্ট সার্কিটের ঝুঁকি থাকবে না।
৫. কাস্টমার রেটিং: ইমারসন রড ভাল কোনও ব্র্যান্ডেরই কেনা উচিত। তা হলেও এর কাস্টমার রেটিংস দেখে নিতে হবে। তাহলেই বোঝা যাবে তা কতটা ভাল! রিভিউ দেখতে সংশ্লিষ্ট ব্র্যান্ডের ওয়েবসাইট এবং নানা শপিং অ্যাপের সাহায্য নেওয়া যায়।