লক্ষ্মীরতন শুক্লা পাঁচ বছর আগেই রাজনীতির জুতোয় পা গলিয়েছিলেন। ক্রিকেটকে বিদায় জানিয়ে যোগ দিয়েছিলেন তৃণমূল কংগ্রেসে। ২০১৬ বিধানসভা ভোটে হাওড়া উত্তর কেন্দ্র থেকে জিতে প্রথমবার বিধানসভায় প্রবেশ তাঁর। বিজেপির হেভিওয়েট প্রার্থী রূপা গঙ্গোপাধ্যায়কে হারানোর সুবাদে পুরস্কার হিসেবে লক্ষ্মীকে মন্ত্রীও করেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজ্য ক্রীড়াদপ্তরের প্রতিমন্ত্রী হিসেবে নিযুক্ত হন প্রাক্তন ভারতীয় অলরাউন্ডার।
advertisement
তারপর বয়ে গিয়েছে অনেক জল। পেরিয়ে গিয়েছে প্রায় সাড়ে চার বছর। ফের বঙ্গে বিধানসভা ভোট। এবার ভোটে লক্ষ্মীর দুই বন্ধু লড়াইয়ে নামছেন। মনোজ তিওয়ারি তৃণমূলের হয়ে আর অশোক দিন্দা বিজেপির হয়ে। বঙ্গ দলের দুই সতীর্থ যখন ভোটের ময়দানে ঠিক সেই সময়ে রাজনীতি থেকে শত হাত দূরে লক্ষ্মীরতন শুক্লা। কিছুদিন আগেই রাজনীতি থেকে মোহভঙ্গ হয়েছে বলে জানিয়েছিলেন লক্ষ্মী। মন্ত্রীর দায়িত্বও ছেড়ে দেন।
বিধায়ক হিসেবে থাকলেও আগামী দিনে ভোটে দাঁড়াবেন না বলেই স্থির করে নিয়েছেন। রাজনীতির মঞ্চে নিজেকে সেভাবে মানিয়ে নিতে পারছেন না বলেই ঘনিষ্ঠমহলে জানিয়েছেন তিনি। মনোজ দিন্দা যখন ভোটের প্রস্তুতি নিয়ে চরম ব্যস্ত তখন লক্ষ্মী নিজের অ্যাকাডেমিতে সময় কাটাচ্ছেন দিনরাত। ভবিষ্যতে ক্রিকেটার তৈরি করতে বিনা পয়সায় হাওড়ায় ক্রিকেট অ্যাকাডেমি তৈরি করেছিলেন লক্ষ্মীরতন শুক্লা। মন্ত্রী থাকাকালীন ব্যস্ততার মাঝেও নিজেরেই অ্যাকাডেমিতে সময় দিতেন লক্ষ্মী। তবে এখন আরও বেশি করে সময় দিচ্ছেন।
নিজের হাতে খুঁদে ক্রিকেটারদের অনুশীলন করাচ্ছেন। হাওড়া থেকে যখন রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়, বৈশালী ডালমিয়াদের মতো বিধায়ক তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগদান করে লক্ষ্মীরতন শুক্লা প্রায় একই সময়ে মন্ত্রিত্ব ছেড়ে দেন। লক্ষ্মীরতন শুক্লাকে ঘিরে জল্পনা তৈরি হয় তিনি নাকি বিজেপিতে যোগদান করবেন। তবে সেই রাস্তায় পা বাড়াননি লক্ষ্মী। আপাতত পরিবারকে সময় দিচ্ছেন।
বিধায়ক হিসেবে এখনও যেটুকু কাজ বাকি, সেটাই শুধু করছেন। বাংলার ২ সতীর্থর রাজনীতিতে যোগদান প্রসঙ্গে মুখে কিছু বলতে নারাজ লক্ষ্মী। এমনকি কোন টিপস দিতেও রাজি নন তিনি। তবে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। এখন দেখা আগামী দিনে এভাবেই নিজেকে রাজনীতিতে সরিয়ে রাখেন লক্ষ্মীরতন শুক্লা নাকি অন্য কোনও সিদ্ধান্ত নেন। তবে লক্ষ্মীরতন শুক্লার ঘনিষ্ঠমহল সূত্রে খবর, রাজনীতিতে আর সেই আনন্দ পাচ্ছেন না লক্ষ্মী। আপাতত ক্রিকেট নিয়ে কাজ করতে চান।
ভবিষ্যতে ক্রিকেট প্রশাসক হিসেবেও লক্ষ্মীরতন শুক্লাকে দেখা যেতে পারে। তবে এর মধ্যেই একটা প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে, লক্ষ্মীরতন শুক্লার কেন্দ্র থেকে যদি ক্রিকেটার মনোজ তিওয়ারি তৃণমূলের প্রার্থী হন সেক্ষেত্রে লক্ষ্মী তাঁকে সাহায্য করবেন কিনা বিদায়ী বিধায়ক হিসেবে। তবে লক্ষ্মী কোনও টিপস দিতে না চাইলেও মনোজ তিওয়ারি, অশোক দিন্দা দুজনেই লক্ষ্মীর থেকে পরামর্শ নিতে চান বলে নিউজ18 বাংলাকে ইতিমধ্যেই জানিয়েছেন। এখন দেখার লক্ষ্মী কী করেন।
Eron Roy Burman