উত্তর প্রদেশের গোরখপুর জেলার খোরাবার থানা এলাকার অযোধ্যা গ্রামের ছেলে বিশাল নিশাদের উত্থান আলাদা করে নজর কেড়েছে। মাত্র চার বছর আগে যে তরুণ পেশাদার ক্রিকেটের স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছিলেন, আজ তিনি দেশের অন্যতম বড় ক্রিকেট মঞ্চে নিজের নাম প্রতিষ্ঠা করেছেন। তার এই যাত্রা বহু সংগ্রাম ও আত্মত্যাগের গল্প বহন করে।
advertisement
বিশালের ক্রিকেটজীবনের শুরু কোনো আধুনিক একাডেমিতে নয়। গ্রামের মাঠ, খেত ও খোলা জায়গাই ছিল তার প্রথম প্রশিক্ষণকেন্দ্র। বন্ধুদের সঙ্গে মাটিতে খেলতে খেলতেই সে ব্যাট-বল হাতে ক্রিকেটের প্রাথমিক শিক্ষা নেয়। সুযোগ-সুবিধার অভাব থাকলেও তার ইচ্ছাশক্তি ও অধ্যবসায় ছিল দৃঢ়।
পারিবারিক পরিস্থিতিও ছিল কঠিন। বিশালের বাবা উমেশ নিশাদ একজন হৃদরোগী এবং পেশায় রাজমিস্ত্রি। সংসারের চাপ সামলাতে বিশাল অল্প বয়সেই বাবার সঙ্গে কাজ করেছে। পরিবারের তিন ছেলে ও এক মেয়ের মধ্যে সে সবচেয়ে ছোট হলেও দায়িত্ব পালনে কখনো পিছপা হয়নি।
জীবনের মোড় ঘুরে যায় যখন বিশাল ইউপি টি-২০ লিগে নির্বাচিত হয়। সেখানে তার দুর্দান্ত পারফরম্যান্স নির্বাচকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে। এরই ফলস্বরূপ আইপিএল নিলামে পঞ্জাব দল তাকে ৩০ লক্ষ টাকায় দলে নেয়। এই সাফল্যে গ্রাম থেকে শহর সর্বত্র আনন্দের সাড়া পড়ে। বাড়িতে এখন উৎসবের পরিবেশ।
আরও পড়ুনঃ Sourav Ganguly: ফের চমক সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের! ক্রিকেট লিগে নতুন দলের মালিক ও মেন্টর হলেন দাদা
বিশালের সাফল্যের পেছনে কোচ কল্যাণের অবদানও উল্লেখযোগ্য। কোচের মতে, বিশালের মিস্ট্রি স্পিন ব্যতিক্রমী এবং অনেক অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যানও তার বল পড়তে ব্যর্থ হন। বিনা পারিশ্রমিকে প্রশিক্ষণ দিয়ে কোচ তার প্রতিভা গড়ে তুলেছেন।
আজ বিশাল নিশাদের লক্ষ্য আরও উচ্চতর—ভারতীয় জাতীয় দলের হয়ে খেলা। গ্রামের খেত থেকে আইপিএলের আলোঝলমলে মঞ্চে পৌঁছে তার গল্প প্রমাণ করে, প্রতিকূল পরিস্থিতিতেও কঠোর পরিশ্রম ও আত্মবিশ্বাস থাকলে সাফল্য অনিবার্য।
