TRENDING:

লেকটাউন থেকে রাজকোট পাড়ি! রঞ্জি ফাইনালে বাংলার 'এক' সমর্থক

Last Updated:

অনেক সময় দেশ ছাড়িয়ে বিদেশের মাটিতে সমর্থকদের উড়ে যেতে দেখা যায়। কিন্তু যদি বলা হয় বাংলা ক্রিকেট দলের সমর্থক দেশের এ প্রান্ত থেকে ও প্রান্ত ছুটে গেলেন খেলা দেখবেন বলে! তাহলে হয়তো একটু অবাকই লাগবে।

impactshort
ইমপ্যাক্ট শর্টসলেটেস্ট খবরের জন্য
advertisement
ফুটবল মাঠে হামেশাই দেখা যায়। দলকে সমর্থন করতে দেশের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে ছুটে যাচ্ছেন সমর্থকরা। ভারতীয় ক্রিকেট দলের ক্ষেত্রেও এরকম সমর্থকের দেখা মেলে। সুধীর গৌতম, রাম বাবুরা তেরঙ্গা হাতে টিম ইন্ডিয়া কে সমর্থন করতে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে পৌঁছে যান।
advertisement

অনেক সময় দেশ ছাড়িয়ে বিদেশের মাটিতে সমর্থকদের উড়ে যেতে দেখা যায়। কিন্তু যদি বলা হয় বাংলা ক্রিকেট দলের সমর্থক দেশের এ প্রান্ত থেকে ও প্রান্ত ছুটে গেলেন খেলা দেখবেন বলে! তাহলে হয়তো একটু অবাকই লাগবে।

কিন্তু ঘটনাটা সত্যি। কলকাতার লেকটাউন থেকে গুজরাতের রাজকোটে চলে এসেছেন অমিত বন্দ্যোপাধ্যায়। শুধুমাত্র রঞ্জি ফাইনালে বাংলার খেলা দেখবেন বলে। ৬৭ বছরের অমিতবাবু সৌরাষ্ট্র বনাম বাংলা ম্যাচে প্রথম দিন থেকে গ্যালারিতে বসে খেলা দেখছেন। দীর্ঘদিনের স্বপ্ন বাংলাকে রঞ্জি ট্রফি চ্যাম্পিয়ন হতে দেখবেন। নিজের ছেলে এক সময় বিভিন্ন বয়স ভিত্তিক দলে ক্রিকেট খেলেছে। ৩০ বছরে বাংলা যে বার শেষ চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল রঞ্জি ট্রফি। ইডেনে বসে সেই ম্যাচ দেখা হয়নি অমিত বন্দ্যোপাধ্যায়ের। তখন চাকরি সূত্রে গ্যাংটকে ছিলেন। তারপর থেকেই ইচ্ছে ছিল বাংলাকে ফাইনালে দেখবেন।

advertisement

২০০৬ ও ২০০৭ মরশুমে বাংলা রঞ্জি খেলে। সেই দু'বছরও ফাইনাল ম্যাচ দেখতে যাওয়া হয় সেই চাকরির কারণে। তবে বছর সাতেক আগে অবসর নিয়েছেন। ১৩ বছর পর বাংলা রঞ্জি উঠেছে। এই সুযোগ আর হাতছাড়া করতে চাননি অমিত বন্দ্যোপাধ্যায়। ছেলে বিমানের টিকিট কেটে রাজকোটে হোটেল বুক করে দিয়েছেন। দীর্ঘদিনের শখ ছেলে পূরণ করায় গর্বিত বাবা অমিতবাবু।

advertisement

সৌরাষ্ট্র ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনের স্টেডিয়ামে এমনিতে হাতেগোনা কয়েক দর্শক। হাইওয়ের উপরে স্টেডিয়াম। বাসে করে কয়েকশো স্কুল স্টুডেন্ট নিয়ে এসেছেন কর্তারা। প্রত্যেকেই সারাদিন গলা ফাটাচ্ছেন পূজারাদের জন্য। তবে সেই ভিড়ে একজন বাংলা সমর্থক রয়েছেন। অমিত বন্দ্যোপাধ্যায় হয়তো একমাত্র ব্যক্তি যিনি গ্যালারিতে মনোজদের জন্য প্রার্থনা করে চলেছেন। প্রথম ইনিংসে সৌরাষ্ট্রের ৪২৫ রান তাড়া করতে নেমে তৃতীয় দিনের শেষে বাংলা ৩ উইকেটে ১৩৪। প্রথম ইনিংসে লিড পাওয়া ক্রমশ কঠিন হচ্ছে বাংলা দলের কাছে।

advertisement

তবে অমিত বন্দ্যোপাধ্যায় হাল ছাড়ছেন না। গ্যালারিতে বসে প্রার্থনা করতে করতেই জানান,  "বিশ্বাস রাখছি ভগবানের প্রতি। বিশ্বাস আছে ঋদ্ধিমান, অনুষ্টুপদের ওপর। বাংলা ঠিক রঞ্জি চাম্পিয়ন হবে।"

ছোটবেলায় ইচ্ছে ছিল নিজে ক্রিকেটের হবেন। সেই ইচ্ছে পূরণ হয়নি। ছেলে শুভজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় সিকিমের হয়ে খেলেছেন। কলকাতা ক্লাব ক্রিকেটেও সুযোগ পেয়েছিলেন। তবে ছেলে বাংলার হয়ে কোনদিনও না খেলায় আক্ষেপ রয়েছে অমিত বন্দ্যোপাধ্যায়ের। ইডেনে ভারত-পাকিস্তান ম্যাচে একবার ক্রিকেটারদের খুব কাছ থেকে দেখার সুযোগ হয়েছিল অমিত বাবুর। ম্যাচ টিকিটের সই করিয়ে দিয়েছিলেন ভারতীয় ক্রিকেটারদের। সেই টিকিট আজও লেকটাউনের বাড়িতে রয়েছে।

advertisement

কর্ণাটকের বিরুদ্ধে সেমিফাইনাল ম্যাচের সময় ইডেনে ছিলেন অমিত বন্দ্যোপাধ্যায়। ম্যাচ শেষে অরুনলালকে জড়িয়ে নিজের স্বপ্নের কথা জানিয়েছিলেন। লালজি বলেন রাজকোটে এসে সমর্থন করার জন্য। ব্যাস তারপরে বিমানের টিকিট কাটার সিদ্ধান্ত নিয়ে নেন ছেলের সঙ্গে আলোচনা করে। রাজকোটের হোটেলে সকালে ব্রেকফাস্ট করে মাঠে চলে যাচ্ছেন অমিত বন্দ্যোপাধ্যায়। দুপুরে কিছু খাওয়া হচ্ছে না কারণ স্টেডিয়াম চত্বরে কোনও দোকান না থাকায়। হাতে একটা ঝোলা প্লাস্টিকে জলের বোতল আর একটা তোয়ালে। সৌরাষ্ট্র ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনের এক কর্তা একদিন খাওয়ার জন্য বলেছিলেন।

অমিতবাবু আপ্যায়ন গ্রহণ করেও না করে দেন৷ কারণ বিপক্ষ দলের তরফ থেকে কিছু খেতে চান না। তবে অমিত বন্দ্যোপাধ্যায়ের একটা আক্ষেপ রয়েছে। বাংলাকে সমর্থন করার জন্য আরো কয়েকজনের কলকাতা থেকে আসা উচিত ছিল বলে মনে করেন তিনি। কারণ সমর্থন পেলে হয়তো বাংলা ক্রিকেটাররা আরও ভালো খেলত। ম্যাচের শেষ দিন দুপুরে বিমানে কলকাতা ফিরবেন অমিত বন্দ্যোপাধ্যায়। কারণ অমিতবাবু নিশ্চিত বৃহস্পতিবারই ম্যাচের চ্যাম্পিয়ন দল একপ্রকার নির্ধারিত হয়ে যাবে।

সেরা ভিডিও

আরও দেখুন
লালগোলাতে রাজরাজেশ্বরী রূপে পূজিতা হন মা কালী! দেওয়া হয় ইলিশের ভোগ
আরও দেখুন

ERON ROY BURMAN

বাংলা খবর/ খবর/খেলা/
লেকটাউন থেকে রাজকোট পাড়ি! রঞ্জি ফাইনালে বাংলার 'এক' সমর্থক
Open in App
হোম
খবর
ফটো
লোকাল