বোকাবাক্সের সামনে থেকে ছেলে-মেয়েকে সরিয়ে আনতে অন্য পন্থা নিয়েছিলেন রমেশবাবু। একদিন অফিস থেকে ফেরার পথে প্রজ্ঞা ও বৈশালীর জন্য তিনি কিনে এনেছিলেন দাবার বোর্ড। আর সেটাই প্রজ্ঞা-বৈশালীর জীবনের মোড় ঘুরিয়ে দেয়। বিশ্বের একনম্বর ম্যাগনাস কার্লসেনকে হারানোর পর চেন্নাইয়ের ১৬ বছরের দাবাড়ুকে নিয়ে চলছে জোর চর্চা।
advertisement
অভিনন্দনের বন্যায় ভেসে বেড়াচ্ছেন বিস্ময় বালক। প্রজ্ঞার কীর্তিতে ভীষণ খুশি বাবা রমেশবাবু ও মা নাগালক্ষ্মী। আবেগতাড়িত কণ্ঠে রমেশবাবু বলেছেন, একটা সময় ছেলে-মেয়েকে নিয়ে খুবই চিন্তায় ছিলাম। কারণ, দিন-রাত ওরা টিভিতে বুঁদ হয়ে থাকত। শেষ পর্যন্ত দাবা খেলাই সমস্যার সমাধান করে। বৈশালীকে ভর্তি করে দিয়েছিলাম দাবা ও ড্রয়িং ক্লাসে। তাই দেখে প্রাগ্গু (পরিবারের আদরের নাম) দিদির পিছু নেয়।
১৯ বছর বয়সে বৈশালী মহিলা গ্র্যান্ডমাস্টার নর্ম পায়। দিদির সাফল্য দেখে দাবার প্রতি আরও আকৃষ্ট হয়ে পড়ে প্রজ্ঞানন্দ। তবে কখনও ভাবিনি আমার ছেলে এত বড় সাফল্য পাবে। ভাইয়ের কৃতিত্বে গর্বিত দিদি বৈশালী। মঙ্গলবার তিনি বলেন, আমাকে দেখে প্রাগ্গু দাবা খেলা শুরু করে। কিন্তু বাবা-মা’র উৎসাহ না থাকলে আমরা এই জায়গায় পৌঁছতে পারতাম না।
এদিকে, এয়ারথিংস মাস্টার্স দাবায় জয়ের ধারা অব্যাহত প্রজ্ঞানন্দর। মঙ্গলবার প্রতিযোগিতার দশম রাউন্ডে ১৬ বছর বয়সি এই দাবাড়ু পরাজিত করে আন্দ্রে এসিপেঙ্কোকে। দ্বাদশ রাউন্ডে ভারতীয় দাবাড়ু হারান আলেকজান্ডার কস্টেনিয়াককে। ড্র নডিরবেক আবদুসাতোরভের বিরুদ্ধে। সবমিলিয়ে এই অনলাইন র্যাপিড টুর্নামেন্টে প্রজ্ঞানন্দর ঝুলিতে আপাতত রয়েছে মোট চারটি জয়।
কার্লসেনের আগে সে হারিয়েছে লেভন অ্যারোনিয়নকে। একাদশ রাউন্ডে প্রজ্ঞানন্দ হেরে যান রাশিয়ান গ্র্যান্ডমাস্টার ইয়ান নেপোমনিয়াচির কাছে। ১৫ পয়েন্ট সংগ্রহ করে দ্বাদশ স্থানে অবস্থান করছে প্রজ্ঞানন্দ। কয়েক মাস আগে বিশ্ব দাবায় কার্লসেনের কাছে পরাজিত হওয়া নেপোমনিয়াচি এই প্রতিযোগিতায় ২৭ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে রয়েছেন।