কিন্তু আওয়াজ লাগাতার চলছিল বলে মেজাজ গরম হয়েই ছিল। এবার যদিও ছেলেটি রাগ সামলাতে পারেনি। ‘পেলে’ শুনেই ঘুরে গিয়ে ছাত্রটির মুখে এক ঘুঁষি! ব্যাস, তারপর যা হওয়ার তাই হল। দিনকয়েকের জন্য সাসপেন্ড করে দিল স্কুল। বাকি ছাত্ররা বুঝে গেল এটা বললেই রেগে আগুন হয়ে উঠবে ছেলেটি। সেই শুরু। বাধ্য হয়েই অপছন্দের নামটিকে মেনে নিতে হল।
advertisement
এডসন আরান্তেস ডো নাসসিমেন্টো নাম ছাপিয়ে ক্রমশ পেলে নামেই বিশ্বজুড়ে মিলল পরিচিতি। বেড়ে ওঠার দিনগুলোয় অবশ্য এডসন নামটা তাঁর কাছে ছিল গর্বের। বৈদ্যুতিক বাল্ব আবিষ্কর্তা বিজ্ঞানী টমাস আলভা এডিসনের নামের সঙ্গে মিল রেখে হয়েছিল এই নামকরণ। ১৯৪০ সালে পেলের জন্মস্থান ত্রেস কোরাকোস গ্রামে বিদ্যুৎ আসে।
সেই লগ্নেই জো রামস ডো নাসসিমেন্টোর ঘরে জন্ম। এডিসনকে শ্রদ্ধা জানিয়েই নাম শুরু হল ‘এডসন’ দিয়ে। অপছন্দের নামটি সঙ্গী হয়ে ওঠার আগেও কয়েকটি ডাক নাম ছিল পেলের। যেমন ডিকো এবং এক সঙ্গীতশিল্পীর নাম ধার করে রাখা ‘গ্যাসোলিনা’। কিন্তু স্থায়ী হল বাবার ফুটবলার বন্ধু ‘বিলে’ অনুকরণে রাখা পেলে নামটাই। বিলে কোনওভাবে অপভ্রংশে পেলে হয়ে ওঠে।
সেই নামটাই ছেনি-হাতুড়ি দিয়ে খোদাই হয়ে গেল ফুটবল ভক্তদের মনে। মৃত্যুর পরও নামটা চকমকির মতো স্ফূলিঙ্গ ছড়াচ্ছে। যতদিন দু’পায়ের এই খেলা বেঁচে থাকবে, ততদিন পর্যন্ত পেলে নামটা দাপিয়ে যাবে মাঠ। তবে শেষ দিকে পেলে মেনে নিয়েছিলেন যদি এডসন নামটা থাকত, তাহলে হয়তো তিনি বিশ্বসেরা নাও হতে পারতেন। এই একটা অপভ্রংশ নাম কিভাবে যে তার জীবনে চলার পথ বদলে দিয়েছিল সেটা নিজে বেঁচে থেকেও ব্যাখ্যা দিতে পারেননি ফুটবল সম্রাট।