কনকনে ঠান্ডা জল। জলের স্রোত কোথাও কোথাও বিপরীতমুখী। কোথাও আবার স্বাগত জানাতে তৈরি বিশাল বিশাল গ্রে হোয়েল। এসব অভিজ্ঞতা আগেই হয়েছে। স্রোতের প্রতিকূলে জয় হাসিল করাটাই তাঁর অভ্যেস। দ্বিতীয় বাঙালি হিসেবে ক্যাটালিনা চ্যানেল জয় করেছেন পূর্ব বর্ধমানের কালনার সায়নী দাস। এবার কিউই চ্যানেল জয় করতে অনুশীলনে কোনও খামতি রাখছেন না সায়নী। পুরীর সমুদ্রে একটানা পাঁচ ঘন্টা পর্যন্ত সাঁতার কাটলেন তিনি। বললেন, ‘‘আগের ইভেন্টগুলির অনুশীলনও পুরীর সমুদ্রে করেছিলাম। এবারও সেজন্যই পুরী আসা। এখানের নুলিয়াদের সহযোগিতায় আমি আপ্লুত। আশাকরি Kaʻiwi চ্যানেল জয় করে সেখানে জাতীয় পতাকা ওড়াতে পারব।’’
advertisement
মাত্র ২১ বছর বয়সেই সায়নী জয় করে ফেলেছেন তিন-তিনটি চ্যানেল। ২০১৭ সালে জয় করেছেন ইংলিশ চ্যানেল। ২০১৮ সালে অস্ট্রেলিয়ার রটনেস্ট চ্যানেল জয় করেছেন। গত বছর এসেছে ক্যাটালিয়া জয়ের সাফল্য। তবে সায়নীর এই জয় এমনি আসেনি। অদম্য জেদ, ইচ্ছাশক্তি ও চরম প্রতিকূলতাতেও স্থির লক্ষ্যে অবিচল থাকতে পেরেছেন তিনি।
আর সায়নীর এই লড়াইয়ে সর্বদা সাহস জুগিয়েছেন তাঁর বাবা পেশায় প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষক রাধেশ্যাম দাস। ইংলিশ চ্যানেল জয়ে নামার আগে খরচ জোগাড় করতে রাধেশ্যামবাবু বাড়ি বন্ধক পর্যন্ত রেখেছিলেন। ধারদেনা করে ২০১৮ সালে রটনেস্ট চ্যানেলে নামিয়েছিলেন মেয়েকে। তিনি বললেন, সেপ্টেম্বরের প্রথম সপ্তাহে Kaʻiwi Channel-এ নামবে সায়নী। সেই লক্ষ্যেই এখন অনুশীলন চলছে। এমনিতেই সায়নী গঙ্গায় অনুশীলন করে। এছাড়াও অনুশীলন চলে কালনার সুইমিং পুলে। কিন্তু বিপদ সঙ্কুল Kaʻiwi চ্যানেলের জন্য প্রয়োজন একটানা দীর্ঘক্ষণ অনুশীলন। সেজন্য পুরীর সমুদ্রকে বেছে নেওয়া- জানালেন সায়নী। গত বছরগুলির মতো এবারও সে সাফল্য পাবে - আশাবাদী নুলিয়ারা।
Saradindu Ghosh