খবরের কাগজের মাধ্যমে এরকম বহু ঘটনা আমরা দেখেছি যেখানে একজন মেধাবী ছাত্র বা ছাত্রী এবং সম্ভাবনাময় খেলোয়াড়রা অসীম দারিদ্র্যের সঙ্গে লড়ছেন। কেউ চা বিক্রি করছেন আবার কেউ পেটের দায়ে অন্যের বাড়িতে কাজ করছেন এরকম মর্মান্তিক ছবিও দেখা গিয়েছে। সম্প্রতি এরকমই একটি দুঃখজনক ঘটনা আবার উঠে এল শিরোনামে।
ধানবাদের মমতা টুডু (Mamata Tuddu) একজন জাতীয় স্তরের ধনুর্ধর বা আর্চার। ২০১০ ও ২০১৪ সালে জুনিয়র ও সাব জুনিয়র স্তরে সোনার পদক জিতেছিলেন মমতা। কিন্তু এখন নিজের গ্রাম দামোদরপুরে সংসার চালাতে ভাজাভুজি খাবার বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন তিনি। ২৩ বছরের মমতা রাঁচি আরচারি কেন্দ্রে প্রশিক্ষণ নিচ্ছিলেন। মমতার বাবা ভারত কুকিং কোল এর একজন অবসরপ্রাপ্ত কর্মী। লকডাউন চলাকালীন মমতা বাড়ি ফিরে আসেন নিজের অ্যাকাডেমি থেকে। কিন্তু পরিবারের আর্থিক অবস্থার কথা চিন্তা করে তিনি আর ফিরে যাননি।
advertisement
পরিবারের মুখ চেয়ে মুদির দোকানের জিনিসপত্র বিক্রি করতে বাধ্য হয়েছেন তিনি। সাত ভাই, বোনের মধ্যে সবচেয়ে বড় মমতা। তাই এই মুহূর্তে তাঁর রোজগার করা অর্থ দিয়েই সংসার চলছে। ফলে মমতার পক্ষে এখনই এই কাজ ত্যাগ করা সম্ভব নয়। মমতার বাবার পেনশন এখনও চালু হয়নি আর ছোট ছোট ভাই বোনেদের পক্ষে কোনও কাজ করাও সম্ভব নয়। আপাতত রাস্তার ধারে একটি অস্থায়ী দোকান তৈরি করে সেখানে ছোলা সেদ্ধ, পকোড়া, মুড়ি, চিঁড়ে এই সব বিক্রি করছেন স্বর্ণপদক জয়ী ধনুর্ধর।
২০১৮ সাল থেকে রাঁচির সেন্টার অফ এক্সিলেন্সে প্রশিক্ষণ নিচ্ছিলেন মমতা। সংবাদমাধ্যমকে মমতা জানিয়েছেন যে এই অবস্থায় প্রশিক্ষণ কেন্দ্র থেকে কোনও সাহায্য তিনি পাননি। তিনি এও বলেছেন যে চরম দারিদ্র্যের সময়ে তাঁর যে অর্থসাহায্য পাওয়ার কথা ছিল, সেটা লাল ফিতের ফাঁসে আটকে গিয়েছে। পরে অবশ্য সংবাদমাধ্যমে এই খবর এলে ধানবাদ আর্চারি অ্যাসোসিয়েশন থেকে মমতাকে সাহায্য করার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়।
