দেশ জুড়ে ৩ থেকে শুরু করে ৫ বছরের শিশুদের বেছে নেওয়ার জন্য বিশেষ স্পটার নিয়োগ করা হয়। সেই শুরু। এইসব বাচ্চাদের ট্রেনিং দিয়ে গড়ে তোলার জন্য শুরু হয় দেশ জুড়ে স্পোর্টস আকাদেমি। দশ বছর আগে যার সংখ্যা ছিল ৩০০, এখন গোটা চিন জুড়ে এই স্পোর্টস আকাদেমির সংখ্যা দাঁড়িয়েছে দু হাজার। সেন্ট্রালাইজড ট্রেনিং প্রোগ্রাম শুরু হয় দেশ জুড়ে। বিশাল পরিমাণ আর্থিক ফান্ড ব্যয় করে সরকার।
advertisement
ছোট থেকেই অ্যাথলিটদের সবরকম দায়িত্ব সরকার নিয়ে নেয়। ব্যক্তিগত কোচ থেকে শুরু করে বিদেশে ট্রেনিং, আধুনিক যন্ত্রপাতি - এক পয়সাও খরচ নেই অ্যাথলিটদের। বিশ্বে কোনও দেশে অ্যাথলিটদের ২০০ দিনের বেশি ট্রেনিং প্রয়োজন পড়ে না। কিন্তু চিন একমাত্র দেশ যেখানে অলিম্পিকে অংশগ্রহণকারী প্রতিটি অ্যাথলিটকে ৩৫০ দিন বাধ্যতামূলক ট্রেনিং করতে হয়। চিনের কনফুসিয়াস বিশ্বাসকে সম্মান দিতেই এমনটা করা বাধ্যতামূলক। এটাকে বলা হয় স্ট্রাকচার্ড ট্রেনিং মেথড।
চিন সোনা জয়ী অ্যাথলিটদের যে গুরুত্ব দেয়, রূপো বা ব্রোঞ্জ জয়ীদের সেই গুরুত্ব দেওয়া হয় না। সরকারের লক্ষ্য থাকে যত বেশি সংখ্যক সোনা আনা যায় দেশে। এর ফলে বহির্বিশ্বকে বার্তা দেওয়া যায় জাতি হিসেবে চিন কতটা এগিয়ে এবং দেশের জিডিপি তৈরির ক্ষেত্রে সোনা জয়ী অ্যাথলিটদের গুরুত্ব থাকে। চিনা সরকার মনে করে দেশ হিসেবে সুপারপাওয়ার হয়ে উঠতে গেলে বেশি সংখ্যক পদক জয় প্রয়োজন।
আর অবশ্যই আমেরিকা, জাপান, গ্রেট ব্রিটেনের আধিপত্য খর্ব করার ইচ্ছা বরাবর রয়েছে তাঁদের। সম্প্রতি কয়েকজন অস্ট্রেলিয়ান সাঁতারের কোচ জানিয়েছেন চিনা সাঁতারুদের ট্রেনিং দেওয়ার জন্য তাঁদের যে পরিমাণ অর্থ প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল, তা বাকি দেশের তুলনায় তিনগুণ। ব্যাডমিন্টন, টেবল টেনিস, জিমনাস্টিক - এই তিনটি ডিসিপ্লিনে চিন বরাবর এগিয়ে।
কিন্তু এবার অবাক করে দিয়ে সাঁতার, ভারোত্তোলন, ফেন্সিং এবং রোয়িং চমক দিয়েছে চিন। দেশের হয়ে স্বর্ণপদক আনা অ্যাথলিটদের সারা জীবন সরকার দেখাশোনা করে। মোটা অংকের অর্থ ছাড়াও বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হয়।