ঠাকুরবাড়ির রবি খেলাধূলার সঙ্গে খুব বেশি যুক্ত না থেকেও নিজের ছাপ রেখে গিয়েছেন। বিশ্ব কবির কলমে উঠে এসেছে ফুটবলের কথা, মোহনবাগানের কথা। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘মাস্টারমশাই’ (১৯০৭) গল্পে রয়েছে ফুটবলের উল্লেখ- পাড়ার ফুটবল ক্লাবের নাছোড়বান্দা ছেলেরাও বহু চেষ্টায় তাঁহার তহবিলে দন্তস্ফুট করিতে পারে নাই। কথাটি লিখেছিলেন অর্থবান, হিসেবে অধর মজুমদার সম্পর্কে।
advertisement
রবীন্দ্রনাথের লেখায় মোহনবাগানের নাম খুঁজতে হলে এগিয়ে আসতে হবে কয়েকটা বছর। ১৯৩৩ সাল, ‘দুই বোন’। তাতে তিনি লিখলেন, “শশাঙ্ক আসে মোহনবাগান ফুটবল ম্যাচের প্রলোভন নিয়ে, ব্যর্থ হয়।” ঠাকুর যখন এই এই উপন্যাস লিখছিলেন তখন ইস্টবেঙ্গল, উয়াড়ি, এরিয়েন্স, স্পোর্টিং ইউনিয়নের পথ চলা শুরু হয়ে গিয়েছিল। তবু গুরুদেবের কলমে মোহনবাগান। রবীন্দ্র সাহিত্যে মোহনবাগানের উল্লেখ আরও রয়েছে।
১৯৩৬ সালে প্রকাশিত হয়েছিল ‘সে’। রচনার এক জায়গায় তিনি মজা করে লিখেছিলেন, “মোহনবাগানের ফুটবল-ম্যাচ দেখতে গিয়েছিল, পকেট থেকে সাড়ে তিন আনা পয়সা কে নেয় তুলে…।” এরপর ‘কুচো চিংড়ির’ কথাও পাওয়া যায় রচনায়। মোহনবাগানের বড় ভক্ত ছিলেন মহানায়ক উত্তম কুমার। উত্তর কলকাতার আহিরিটোলায় জন্মে ছোটবেলা থেকেই সবুজ মেরুনের ভক্ত ছিলেন উত্তম।
বহুবার মাঠেও গিয়েছিলেন মোহনবাগানের ম্যাচ দেখতে। উত্তমের প্রবল শখ ছিল একজন ফুটবলারের বায়োপিকে অভিনয় করা। সেটি আর হয়ে ওঠেনি। কারণ তেমন চরিত্র পাননি মহানায়ক। যদিও চুনী গোস্বামীর খেলার প্রবল অনুরাগী ছিলেন উত্তম। এছাড়া পৃথিবীর উচ্চতম পর্বত শৃঙ্গ মাউন্ট এভারেস্টেও উড়েছে মোহনবাগানের পতাকা। ক্লাবের দুই সমর্থক দেবরাজ দত্ত এবং শাহাবুদ্দিন এই ঝুঁকিপূর্ণ কাজ করে দেখিয়েছিলেন।