গ্রুপে ক্রোয়েশিয়াকে আটকে, বেলজিয়াম ও কানাডাকে হারিয়ে নক আউটে উঠেছিলেন হাকিমিরা। প্রথমে ষোলো এবং তারপর শেষ আটে স্পেন, পর্তুগালের মতো ফুটবলের মহাশক্তিধর দেশকে একের পর এক হারিয়ে সেমিফাইনালে উঠেছিল মরক্কো। তৈরি হয়েছিল ইতিহাস। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ফরাসি বাঁধা টোপকে ফাইনালে ওঠা হল না ওয়ালিদ রেগ্রাগুইয়ের ছেলেদের। দিনের শেষে স্কোর লাইন ফরাসিদের পক্ষে ২-০। গোলদাতা হার্নান্ডেজ ও মুয়ানি।
advertisement
আরও পড়ুন- মরক্কো মিরাকেল শেষ করে ফের বিশ্বকাপ ফাইনালে ফ্রান্স! অপেক্ষায় আর্জেন্টিনা
যদিও শুধু স্কোরবোর্ড দেখলে বোঝা যাবে না, সেমিফাইনালে ফরাসিদের বিরুদ্ধে মরক্কোর অসামান্য লড়াইয়ের ইতিহাস। মরক্কোর আক্রমণ সামলাতে একেক সময় ৮-৯ জন ফুটবলারকে নিজেদের বক্সে নামিয়ে আনতে বাধ্য হচ্ছিলেন ফরাসি কোচ দিদিয়ের দেশঁ। ভাগ্য একটু সহায় হলে স্কোরলাইন অন্যরকম হলেও হতে পারতো। তবে কাতার বিশ্বকাপে সেমিফাইনালের আগে পর্যন্ত বিপক্ষ দলের কাছে একটাও গোল না খাওয়া মরক্কোর ডিফেন্স এদিন শুরুতেই কিছু বোঝার আগে গোল খেয়ে বসল। খেলা শুরু পাঁচ মিনিটের মধ্যেই হার্নান্দেজের অসামান্য হাফ ভলিতে ঘেঁটে গেল মরক্কোর হিসাব-নিকেশ। আসলে ইংল্যান্ডের পর মরক্কোর বিরুদ্ধেও একই স্ট্র্যাটেজি নিয়ে শুরু করেছিল বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ফ্রান্স। মরোক্কান ডিফেন্স সঙ্ঘবদ্ধ হওয়ার আগেই গোল করার লক্ষ্যে মাঠে নেমেছিলেন এমবাপেরা।
সফল সেই কৌশল। তবে ৪৪ মিনিটের মাথায় গোলের সুযোগ এসেছিল মরক্কোর কাছে। হাকিম জিয়েচের কর্নার ফ্রান্সের রক্ষণ ক্লিয়ার করে দেওয়ার পর ব্যাক ভলি মেরেছিলেন মরক্কোর জাওয়াদ এল ইয়ামিক। তা পোস্টে লেগে না ফিরলে বিরতির আগেই স্কোরলাইন সমান সমান হয়ে যেত। প্রথমার্ধে ১-০ গোলে পিছিয়ে থাকার পর দ্বিতীয়ার্ধে মরিয়া লড়াই শুরু করেছিল মরক্কো। তবে অ্যাটলাস সিংহদের যাবতীয় তর্জন গর্জন ফ্রান্স ডিফেন্সে আটকে গেল। উল্টে খেলা শেষ হওয়ার মিনিট দশেক আগে কাউন্টার অ্যাটাক থেকে দ্বিতীয় গোল তুলে নিল ফ্রান্স। মরক্কো বক্সে তিনজনকে কাটিয়ে এমবাপের নিখুঁত পাশ থেকে গোল করে ফ্রান্সের জয় সুনিশ্চিত করে দিলেন কোলো মুয়ানির। তবে ম্যাচ হারলেও ফুটবল প্রেমীদের মনে জায়গা করে নিল মরক্কোর মরিয়া লড়াই।
শনিবার ক্রোয়েশিয়ার বিরুদ্ধে তৃতীয় হওয়ার লড়াইয়ে নামবে আফ্রিকার দেশটি। অন্যদিকে ব্যাক টু ব্যাক বিশ্বকাপ ফাইনালে উঠে নজির গড়ল ফ্রান্স। রবিবার রাতে মেসি বনাম এমবাপের মহারণ। বিশ্বকাপ ফাইনালে লাতিন আমেরিকা বনাম ইউরোপের মেগা ডুয়েল। আমনে সামনে আর্জেন্টিনা-ফ্রান্স। তৃতীয়বার বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হতে মাঠে নামবে দুই দেশ।