সবুজ-মেরুন জার্সিতে অসাধারণ পারফর্ম্যান্স। মাথা ঘোরানো প্রস্তাবে এটিকে-তে সই। স্প্যানিশ কোচ মোলিনার আস্থা অর্জন, গুড বুকে জায়গা করে নেওয়া। চোখ ধাঁধানো পারফর্ম্যান্স। তারপরেও ক্রমশ হারিয়ে যাওয়া। নতুন কোচ অ্যান্তোনিও লোপেজ হাবাসের পছন্দের তালিকায় জায়গা না হওয়ায় ক্রমশ পিছনের সারিতে চলে যাওয়া। পরিস্থিতি এমন হয়েছিল, একটা সময় না খেলতে পারার যন্ত্রণা থেকে এটিকে থেকেই সরে আসতে হয়েছিল দেবজিৎকে। উত্তরপাড়ার ৫ ফুট ৮ ইঞ্চি উচ্চতার গোলরক্ষক তবুও হাল ছাড়েননি, হার মানেননি।
advertisement
এবার তো আইএসএল শুরুর আগে কোন ক্লাবই ছিল না দেবজিতের। তবু মনের জোরকে সম্বল করে ফিরে আসার লড়াই চালিয়ে গিয়েছেন দেবজিৎ। কী করেননি এই সময়টা! টালিগঞ্জের ফ্ল্যাট থেকে রোজ কাকভোরে বেরিয়ে ছুটে যেতেন উত্তরপাড়ার নেতাজি ব্রিগেডের মাঠে। শুধুমাত্র নিজেকে ফিরে পাওয়ার উদ্দেশ্যে। কঠিন অনুশীলনে ডুবিয়ে রাখতেন নিজেকে। এক-দু'দিন নয়, মাসের পর মাস এভাবেই তিলে তিলে নিজেকে আবারও তৈরি করেছেন ফুটবলের মূলস্রোতে নিজেকে ফিরিয়ে নিয়ে যেতে। শুরুর দিন থেকে দেবজিতকে চিনতেন নেতাজি ব্রিগেডের কর্মকর্তা সঞ্জয় চক্রবর্তী। বলছিলেন,"ছোটবেলা থেকেই অসম্ভব মনের জোর ছেলেটার। আর তেমন জেদি। আর কেউ না মানুক, আমরা নেতাজি ব্রিগেডের সবাই অন্তত জানতাম, ও ফিরে আসবেই।"
ফিটনেস বাড়াতে নিজের খাদ্য তালিকা সম্পূর্ণ বদলে ফেলেছেন দেবজিৎ। সম্পূর্ণ নতুন খাদ্য তালিকায় শরীর থেকে ৮ কেজি ওজন ঝরিয়ে ফেলেছেন। আইএসএলে লাল-হলুদ তিন কাঠির নিচে ওর অসাধারণ রিফলেক্সের চাবিকাঠিও না কী এই বদলে যাওয়া ডায়েট চার্ট! আশৈশব ভাত খাওয়ার অভ্যাস ছেড়েই দিয়েছেন এখন। শেষ কবে ভাত খেয়েছেন, নিজেও মনে করে বলে উঠতে পারেন না ইস্টবেঙ্গল গোলরক্ষক। আউটিংয়ের সমস্যা কাটিয়ে উঠতেও হাড়-ভাঙ্গা অনুশীলন চালিয়েছেন। ফল পেয়েছেন হাতে হাতে। সাতের আইএসএলে দেবজিতের নামের পাশে একের পর এক ক্লিনশিট। প্রাক্তনদের মতে চলতি আইএসএলের সফলতম গোলকিপার বাংলার দেবজিত মজুমদার। উত্তর পাড়ার ছেলেটা দেখিয়ে দিল এভাবেও ফিরে আসা যায়!
PARADIP GHOSH