১৯৮৬ সালে মারাদোনার নেতৃত্বে বিশ্বকাপ জয় নীল-সাদা ব্রিগেডের। ১৯৯৪ সালে মারাদোনা অধ্যায় শেষের পর আরও একটা মহাতারকার খোঁজ করছিল বিশ্ব জুড়ে আর্জেন্টাইন সমর্থকরা। স্বপ্ন তৃতীয়বার বিশ্বজয়। তারপর মাঝে কেটে যায় ১০ বছর। ২০০৪ সালে বার্সোলোনার জার্সিতে আবির্ভাব হয় এক বিস্ময় বালকের। তার পায়ের জাদু নাকি মারাদোনার মত। শারীরিক প্রতিবন্ধকাতে জয় করে নাকি ওই শান্ত দুই চোখে রয়েছে বিশ্ব জয় করার জেদ। তারপরেরটা ইতিহাস।
advertisement
মাঝে দুটি বছর বার্সার জার্সিতে নিজের জাত চিনিয়ে দিয়েছিলেন মেসি। মেসির স্কিলের 'এলএম' দেখে রোনাল্ডিনহো বলেছিলেন ফুটবল শিল্পের আগামির ব্যাটন মেসির হাতেই থাকবে। তবে দেশের জার্সিতে তখনও ম্যাজিক দেখানো বাকি তার। ২০০৬ সালে জার্মানিতে প্রথম বিশ্বকাপ খেলেছিলেন মেসি। পরিবর্ত হিসেবে মাঠে নামলেও ঝাকরা চুলের ওই তরুণ ঝলকেই বুঝিয়ে দিয়েছিলেন বিশ্ব ফুটবলকে শাসন করতে আবির্ভাব হয়ে গিয়েছে নতুন মহাতারকার।
ব্যর্থতা-সাফল্য, লড়াই, হার না মানা জেদ এইভাবেই চলতে থাকে মেসির ফুটবল যাত্রা। ২০১৪ সালে ফাইনালে উঠলেও ট্রফি ও ঠোটের মধ্যে তফাৎটা থেকেই গিয়েছিল মেসির। ক্লাব ফুটবলে সবকিছুই প্রাপ্তি হয়ে গিয়েছিল তার। দেশের জার্সিতে কোপা আমেরিকা জয় করে আর্জেন্টিনার আন্তর্জাতিক ট্রফি জয়ের খরাও কাটে মেসির হাত ধরেই। তারপর ফিনালিসামা জয়। শুধু বাকি ছিল মেসির মারাদোনা হয়ে ওঠার।
আরও পড়ুনঃ 'আমি অবসর নিচ্ছি না এখনই', বিশ্বকাপ জিতে বিরাট ঘোষণা মেসির
মারাদোনা যাকে নিজের যোগ্য উত্তরসূরী বলেছিলেন সেই মেসি দিয়াগো হয়ে উঠলেন ২০২২ বিশ্বকাপে। ৩৬ বছরের অপেক্ষার অবসান ঘটিয়ে মেসির হাত ধরেই এল তৃতীয় বিশ্বকাপ। ফাইনালে জোড়া গোল করলেন। বিশ্বকাপের ইতিহাসের প্রথম প্লেয়ার হিসেবে জোড়া সোনার বল জিতলেন, এক বিশ্বকাপে প্রথম প্লেয়ার হিসেবে ৫টি ম্যান অফ দ্য ম্যাচ নির্বাচিত হলেন। মেসির ক্যাবিনেটে ট্রফির সম্ভার যা কারও নেই। অধিনায়ক হিসেবে পরপর তিনটি আন্তর্জাতিক ট্রফি জয়ের হ্যাটট্রিক। ফলে শুধুই কী মারাদোনা হয়ে উঠলেন মেসি? পরিসংখ্যান ও সাফল্যের বিচারে সর্বকালের সেরা বললেও খুব একটা ভুল হবে না।