শেষ কয়েক বছর শুধু হতাশাই সাঙ্গ ছিল ময়দানের লাল-হলুদ তাবু ও ইস্টবেঙ্গলের লক্ষ লক্ষ সমর্থকদের। স্পনসর বদল, দল বদল, কোচ বদল সব কিছু করেও কিছুতেই ভাগ্য দেবতা সহায় হচ্ছিল না। মশালের লাল টগ-বগে আগুনটার আঁচও যেন স্তিমিত হয়ে আসছিল। এবার কার্লেস কুয়াদ্রাতকে কোচ করে আনার পরও দল নিয়ে খুব একটা বড় স্বপ্ন দেখার সাহসও পাচ্ছিল না ফ্যানেরা। তারউপর ডুরান্ডের প্রথম ম্যাচে ২ এগিয়ে থেকেও ড্র করে মাঠ ছাড়ায় সকলেই ধরে নিয়েছিল এবারও বিগত বছরগুলির পুনরাবৃত্তি।
advertisement
কিন্তু না। পরের ম্যাচেই ডার্বিতে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বি মোহনবাগানের বিরুদ্ধে জয় পাল্টে দিল গোটা চিত্রটা। কুয়াদ্রাত যেন বার্তা দিলেন, ‘পিকচার আভি ভি বাকি হ্যায় মেরে দোস্ত’। যে দলটা টানা ৮ ডার্বিতে জয়ের স্বাদ পায়নি, নন্দকুমারের একটি গোল, বোরহা হেরেরা, সিভেরিও, এলসে, ক্রেসপো, পার্দো লুকাস, মন্দার, খাবড়া, গিলদের লড়াকু ফুটবল, সেই হার না মানা মনোভাব মশালের আগুনে বারুদের মত কাজ করে গেল। একে একে লড়াই করে সব ম্যাচ জিতে আজ দলটা ফাইনালে। কঠিন লড়াই হলেও ১৯ বছর আগের ডুরান্ড কাপের ফাইনালের পুনরাবৃত্তির আশায় ইস্টবেঙ্গল ফ্যানেরা।
অপরদিকে, সম্পূর্ণ আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে মরশুম শুরু করেছিল মোহনবাগান। ডুরান্ড কাপকে এএফসি-র প্রস্তুতি হিসেবেই দেখছিলেন কোচ হুয়ান ফেরান্দো। কিন্তু ডার্বিতে প্রথম সাক্ষাতে হার নাড়িয়ে দিয়ে যায় তাকেও। ধাক্কা সামলে নিয়ে ডার্বি হারের ধাক্কা কাটিয়ে পুরনো ছন্দে ফেরে সবুজ-মেরুণ ব্রিগেড। সব ম্যাচ জিতে যুবভারতীতে আজ ‘চিরশত্রু’-দের হারিয়ে ট্রফি জয়ের সুযোগ। মুখে না বললেও শুধু ফ্যানেরা নয়, বদলার আগুনে জ্বলছে বুমোস, কামিংস, বিশাল, পেত্রাতোসরা।
আরও পড়ুনঃ ODI World Cup 2023: বিশ্বকাপের জন্য ঘোষিত ভারতীয় দল, ১৫ জনের দলে জায়গা হল না ২ তারকার
১৯ বছরের আগে ডুরান্ড কাপের ফাইনালে ইস্টবেঙ্গলের বিরুদ্ধে হারতে হয়েছিল মোহবাগানকে। এবার গ্রুপ পর্বে হার। ফলে সবদিক থেকেই আজকের ম্যাচ বদলার ম্যাচ মোহনবাগানের কাছে। ৭০ কোটির দল, ধারে-ভারে প্রতিপক্ষের থেকে অনেক এগিয়ে এসব বিষয়ে গুরুত্ব না দিয়ে আজ সেরাটা উজার করে দেওয়ার মন্ত্রই ফুটবলারদের দিয়েছে ফেরান্দো। সব মিলিয়ে ২০২৩ ডুরান্ড ফাইনাল জিতে নিজেদের ক্ষততে প্রলেপ লাগাতে চাইবে মোহনবাগান। তবে শেষ হাসি কা হাসবে, তার উত্তর মিলবে আজ যুবভারতীতে।