ভারতীয় দলের অবস্থান ছিল স্পষ্ট—তারা মহসিন নকভির কাছ থেকে ট্রফি নেবে না, কারণ তিনি ভারতের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে বিরূপ মন্তব্য করে এসেছেন এবং ভারতীয় সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধেও বিতর্কিত মন্তব্য করেছেন। পহেলগাঁওতে সন্ত্রাসী হামলার পরে সূর্যকুমার যাদব যখন ভারতীয় সেনার প্রতি সংহতি প্রকাশ করেন, তখন নকভি তাকে আইসিসির কাছে লেভেল ৪ অপরাধে অভিযুক্ত করার দাবি জানান। এমনকি, ‘অপারেশন সিঁদুর’ নামে পাকিস্তানের দাবি করা একটি ভিডিও পোস্ট করে ছয়টি ভারতীয় যুদ্ধবিমান ধ্বংসের কথা উল্লেখ করেন তিনি।
advertisement
এই অবস্থানের ফলে ম্যাচ-পরবর্তী ট্রফি বিতরণী অনুষ্ঠান বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে। প্রায় এক ঘণ্টা মঞ্চ ফাঁকা থাকলেও পাকিস্তানি খেলোয়াড়দের দেখা যায়নি। ভারতীয় দল জানিয়ে দেয়, তারা মঞ্চে উঠবে না যতক্ষণ না নকভি সরে দাঁড়ান। বিসিসিআই জানায়, যদি জোর করে ট্রফি দেওয়ার চেষ্টা করা হতো, তবে তারা আনুষ্ঠানিক প্রতিবাদ জানাত। দুবাই স্পোর্টস সিটির কর্তা খালিদ আল জরউনি উপস্থিত থাকলেও ভারত তার হাত থেকেও ট্রফি নিতে রাজি হয়নি, যদি নকভি মঞ্চে থাকেন।
এই পরিস্থিতিতে উপস্থাপক সাইমন ডুল শুধুমাত্র ব্যক্তিগত পুরস্কারগুলির ঘোষণা করেন এবং পাকিস্তান দলের সদস্যরা বাংলাদেশের ক্রিকেট বোর্ডের প্রেসিডেন্ট আমিনুল ইসলাম বুলবুলের কাছ থেকে পুরস্কার গ্রহণ করেন। এরপর ডুল ঘোষণা করেন যে ভারতীয় দল দলগত পুরস্কার নেবে না এবং এর মাধ্যমেই পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান সমাপ্ত হয়। মঞ্চ ছেড়ে চলে যাওয়ার সময় মহসিন নকভির সঙ্গে এসিসির স্টাফরাও ট্রফি ও ভারতীয় দলের মেডেল নিয়ে বেরিয়ে যান, যা আরও বিতর্ক সৃষ্টি করে।
পরবর্তীতে বিসিসিআই-এর সচিব দেবজিত সাইকিয়া স্পষ্ট জানান, “আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি যে, পাকিস্তানের অন্যতম শীর্ষ নেতা এবং বর্তমান এসিসি চেয়ারম্যানের কাছ থেকে আমরা এশিয়া কাপ ২০২৫ ট্রফি নেব না।” তিনি আরও বলেন, “কিন্তু এর মানে এই না যে, ঐ ভদ্রলোক ট্রফি এবং মেডেলগুলো নিয়ে চলে যাবেন। এটি অত্যন্ত দুঃখজনক এবং আমরা আশা করি ট্রফি ও মেডেলগুলো দ্রুত ভারতের কাছে ফেরত পাঠানো হবে।” এই মন্তব্যের মাধ্যমে বোঝা যায়, বিসিসিআই এই ইস্যুতে আনুষ্ঠানিক পদক্ষেপ নেবে।
আরও পড়ুনঃ IND vs PAK: একেই বলে বদলা! মাঠেই রউফে তার স্টাইলেই যোগ্য জবাব দিলেন বুমরাহ, ভাইরাল ভিডিও
পাকিস্তান অধিনায়ক সলমান আলি আঘা অবশ্য তার বোর্ড চেয়ারম্যানের পক্ষে বক্তব্য রাখেন। তিনি বলেন, “তিনি এসিসি চেয়ারম্যান। ট্রফি দেওয়ার অধিকার তার আছে।” এদিকে ভারতীয় দলের উদযাপন হয় শুধুমাত্র খেলোয়াড় ও তাদের পরিবারের মধ্যে সীমাবদ্ধ, মঞ্চ ও ট্রফি ছাড়াই। এ ঘটনাকে ঘিরে ক্রিকেট বিশ্বে এক নজিরবিহীন বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে এবং রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটেও এই ঘটনার প্রভাব পড়তে শুরু করেছে।