এই পর্যন্ত শুনে আপনার মনে হচ্ছে তো। দোহার মাটিতে সেমিফাইনাল হওয়ার আগে কী করে জিতল নীল-সাদা ব্রিগেড ? লেখার ভুল। ম্যাচ না খেলে ফাইনালে ওঠা যায় নাকি। যায়...যায়, আসলে অঙ্ক তো তাই বলছে। পরিসংখ্যানের খাতা খুললেই বুঝে যাবেন সব হিসেব-নিকেশ। বলবেন, ঠিকই তো। এই হিসেবে তো এবারও ফাইনালে উঠবে আর্জেন্টিনাই।
advertisement
আসলে বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে কখনও হারে না আর্জেন্টিনা। বিশ্বকাপের হিসেবের খাতা বলছে, চার বার সেমিফাইনালে উঠে চার বারই ফাইনাল খেলেছে নীল-সাদা শিবির। সেমিতে আজ পর্যন্ত কোনও দল রুখতে পারেনি লাতিন আমেরিকার এই দেশকে। এবারও এই ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি হলেই ৬ বার কাপ জয়ের দোরগোরায় পৌঁছবে আর্জেন্টিনা শিবির।
আরও পড়ুন- বছরের শেষ সূর্য গোচরে ঝলমলিয়ে উঠবে ভাগ্য, মিলবে প্রত্যাশারও অধিক ফল, জেনে নিন কীভাবে
১৯৩০, ১৯৮৬, ১৯৯০ ও ২০১৪ বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে জিতেছিল আর্জেন্টিনা। ১৯৭৮ বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনা চ্যাম্পিয়ন হলেও সেবার টুর্নামেন্টের ফরম্যাটটা ছিল অন্য রকম। সেমিফাইনাল হয়নি। বিশ্বকাপ ফুটবলের প্রথম আসরেই সেমিফাইনালে খেলেছিল আর্জেন্টিনা। ১৯৩০ উরুগুয়ে বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে নেমেছিল আর্জেন্টিনা। সেবার টুর্নামেন্টের অন্যতম ফেভারিট আমেরিকাকে ৬-১ গোলে হারিয়ে ফাইনালে ওঠেছিল নীল-সাদা বাহিনী। তবে উরুগুয়ের কাছে হেরে রানার্স হতে হয়েছিল। বিশ্বকাপ শুরুর ৪৮ বছর পর ১৯৭৮ সালে প্রথমবার চ্যাম্পিয়ন হয় আর্জেন্টিনা। কিন্তু সেই বছর ফরম্যাট আলাদা ছিল। আর্জেন্টিনায় হওয়া সেই বিশ্বকাপে প্রথমে ১৬টা দল ৪টি গ্রুপে ভাগ হয়ে খেলেছিল। সেই চার গ্রুপ থেকে আট দল নিয়ে ২টি গ্রুপের দ্বিতীয় রাউন্ড হয়। দুই গ্রুপের সেরা দুই দল ওঠে ফাইনাল।
আরও পড়ুন- গ্রহের গোচরে বছর শেষে ধনবান হতে চলেছেন এই রাশির জাতক-জাতিকারা! কিন্তু কীভাবে আসবে অর্থ?
নকআউট ফরম্যাটে ১৯৮৬ বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে পৌঁছায় আর্জেন্টিনা। সেমিফাইনালে বেলজিয়ামের বিপক্ষে মারাদোনার দাপটে ২-০ গোলের জয় পায় নীল-সাদা শিবির। ম্যাচের ৫২ ও ৬৩ মিনিটে দুটি গোল করেছিলেন মারাদোনা। শেষপর্যন্ত আর্জেন্টিনা বিশ্বকাপও জিতেছিল। এর ঠিক চার বছর পর ফের সেমিফাইনালে ওঠে আর্জেন্টিনা। ইতালির বিপক্ষে সেমিফাইনালে ১-১ গোলে ড্র করেন মারাদোনারা। তবে ট্রাইব্রেকারে আর্জেন্টাইন গোলরক্ষক গয়কোচিয়ার দুরন্ত পারফরম্যান্সে ৪-৩ গোলের জয় পায় তারা। যদিও ৯০ বিশ্বকাপের ফাইনালে জার্মানির কাছে তাদের হারতে হয় ১-০ গোলে।
২৪ বছর পর ফের একবার সেমিতে জায়গা পাকা করে আর্জেন্টিনা শিবির। নেদারল্যান্ডসের সঙ্গে সেমিফাইনাল ১২০ মিনিট পর্যন্ত ছিল গোলশূন্য। নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে পুরো ম্যাচেই নিষ্প্রভ ছিলেন মেসি। তবে গোলরক্ষক রোমেরো সেদিন গয়কোচিয়া হয়ে উঠেছিলেন। ম্যাচে দারুণ সব সেভের পর টাইব্রেকারে ঠেকিয়ে দেন দু-দুটি শট। তাতেই খোলে ফাইনালের দরজা। তবে ১৯৯০ বিশ্বকাপের মতো সেবারও শিরোপা হাতছাড়া হয় জার্মানির কাছে হেরে। এবার ২০২২। কাতার বিশ্বকাপে ফের একবার সেমিতে আর্জেন্টিনা। কেরিয়ারের শেষ বিশ্বকাপে মেসি। ইতিহাসের পুরনাবৃ্ত্তি হলেই ফাইনাল নিশ্চিত। খবরের প্রথম লাইনগুলো সত্যি হবে। তবে কথায় বলে রেকর্ড তৈরি হয় ভাঙার জন্য। তাই প্রত্যেকবারই এই হিসেবের খাতাটা পাল্টাতে মরিয়া ক্রোট যোদ্ধরা। রেকর্ড ভেঙে নয়া ইতিহাস তৈরি করতে চান লুকা মদরিচরা।