এরই মধ্যে এলাকার এক যুবকের সাথে প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পরে বৈশাখী | এরপর এলাকায় দুজনকে একাধিকবার একসঙ্গে দেখাও যায় | কয়েকদিন আগে এলাকার সেই যুবক বিফল মণ্ডলকে বৈশাখীর ঘরেই দেখতে পায় এলাকার বাসিন্দারা | এভাবে ধরা পড়ে গিয়ে চক্ষুলজ্জার কারণে এলাকা থেকে গা ঢাকা দেন বিফল | এরপর স্থানীয় বাসিন্দাদের জিজ্ঞাসাবাদে বৈশাখী দেবী বিফল বাবুর সাথে প্রেমের সম্পর্কের বিষয়টি স্বীকার করে নেন | তারপর স্থানীয় মানিকপুর থানায় পুরো বিষয়টা জানান স্থানীয়রা| বেশ কিছু গ্রামবাসীরা মহিলার এই কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে সরব হতে থাকে | আসলে সমাজ এখনও বিধবা মহিলাদের নিজের মতো জীবন যাপন মেনে নিতে পারেনা | উল্টোদিকে বিফল বাবুর পরিবারের তরফেও আসে বাধা কারণ তাদের প্রশ্ন ছিল পরিবারের নববধূ হবে কিনা একজন বিধবা ? শুধু কি বিধবাও নয়, সে তো আবার এক কন্যার মা, তাহলে উপায় ?
advertisement
কিন্তু ভালোবাসা তো আর এই সব মানে না তাই আগে পিছু না ভেবেই বৈশাখী ও বিফল এগিয়ে চলে তাদের পথে | কিন্তু পরিস্থিতি আরও বিপাকে যায় যখন তাঁদের সম্পর্ক সকলেই জেনে যান৷ মহিলার ও নিজের সম্মান বাঁচাতে এলাকা থেকে গা ঢাকা দেয় বিফল | খবর পেয়ে আসরে নামে পুলিশ | বিফল বাবুর খোঁজ শুরু করে | মোবাইল টাওয়ার ট্র্যাক করে পুলিশ | অবশেষে রবিবার থানায় এসেই যোগাযোগ করে বিফল বাবু বৈশাখীকে বিয়ে করার কোথাও জানান |
কিন্তু তাঁদেরর একটাই ভয় সমাজ কি বলবে ? সমাজ কি তাদের এই সম্পর্ক মেনে নেবে ? অবশেষে সোমবার রাতে বিফল মণ্ডল ও বৈশাখী মণ্ডলকে ছাদনা তলায় বসার ব্যবস্থা করা থেকে শুরু করে পুলিশরা৷ কন্যাদান থেকে শুরু হিন্দুরীতিতে বিয়ের সব নিয়মই পালন করেন পুলিশ কর্মীরা | স্থানীয়দেরও করা হয় নিমন্ত্রণ | নতুন করে সংসার বাঁধার আনন্দের মধ্যেও নিজের মাতৃত্বের কোন ত্রুটি হতে দেয়নি বৈশাখী দেবী | মেয়েকে পাশে বসিয়েই সারেন সামাজিক রীতিনীতি | বিফলবাবুর সাথে নতুন সংসার বাঁধলেও তার একটাই আবেদন ছিল যেখানেই থাকবেন তারা সেখানেই ঠাঁই দিতে হবে তাঁর আগের শাশুড়ি ও তাঁর কন্যাকে | সেই আবেদনে সাড়া দেন বিফল বাবুও | পুলিশের তত্বাবধানে বিয়ের পর পাত পেরে খাওয়াদাওয়ারও ব্যবস্থা করে পুলিশ |
Debasish Chakraborty