পরে রাজ্যের ভোটার হয়ে ফের চমক নিয়ে ফিরে আসেন 'গৌরাঙ্গ চক্রবর্তী' অর্থাৎ বাঙালির প্রিয় 'মিঠুন দা'। একদা উত্তর কলকাতায় বড় হওয়া, তৎকালীন বোম্বে গিয়ে ভাগ্য অন্বেষণ করা, আরব সাগর তীরে সেই ভাগ্যের সন্ধান পাওয়া, রিয়েলিটি শো আর তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ হয়ে শেষ বয়েস কাটানো তারকা মিঠুন এবার কোমর বেঁধে নামেন বিজেপির হয়ে প্রচারে।
advertisement
মাঝে অবশ্য তাঁকে 'মুখ্যমন্ত্রীর' পদেও তোলা হয় রাজনৈতিক জল্পনায়। যে আলোচনায় প্রত্যাশিত ভাবেই উঠে আসে তাঁর বিজেপির প্রার্থী হওয়ার গল্পও। কিন্তু তাঁকে প্রার্থীও করেনি বিজেপি। শোনা গিয়েছিল, তিনিও প্রার্থী হতে তেমন আগ্রহী ছিলেন না। এমনকি তিনি নিজেই জানান, তিনি 'স্বার্থপর' নন। তাই তিনি ভোটে দাঁড়াবেন না।
যদিও রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে জনসভা, রোড-শো একের পর এক করেই চলেছিলেন তিনি। বিজেপি-র দেওয়া হেলিকপ্টারে চষেছেন রাজ্যের এ মাথা থেকে ও মাথা। বিভিন্ন সভায় তাঁর বিখ্যাত সংলাপগুলি তারিয়ে তারিয়ে উপভোগও করেছে জনতা। অল্প সময়েই বিজেপি-র প্রচারে অন্যতম প্রধান মুখ হয়ে উঠেছিলেন তিনি। তবে শেষ দিকে সভায় লোক না হওয়ার মতো বিতর্কেও জড়াতে হয় মিঠুনকে। এমনকি নির্বাচন কমিশন বড় সভা নিয়ে নিষেধাজ্ঞা জারি করলেও তাঁর বিশাল জনসভা নিয়েও অভিযোগ উঠেছিল এই রাজ্যে।
কিন্তু রবিবার বিধানসভা নির্বাচনের ফলাফল দেখিয়ে দিল রাজ্যে ধুলিস্যাৎ বিজেপির 'আসল পরিবর্তনের' স্বপ্ন। আর সেই ফল বলে দিচ্ছে মিঠুনের সংলাপ, বাচনভঙ্গি অনেক হাততালি হয়তো পেয়েছে এই বাংলায়। কিন্তু ভোটবাক্সের রসায়ন বুঝতে বোধহয় ভুল করেছেন বাঙালি বাবুও। ভোটের ফল প্রকাশের পর মিডিয়া থেকে সোশ্যাল মিডিয়া কেউ-ই নাগাল পাচ্ছে না তাঁর। আর দেখা গেল বাংলার মানুষও 'সাপ-গোখরো-ছোবল' ভুলে সবুজ আবিরে স্বপ্ন দেখছে। তাই আবির্ভাবে রোশনাই থাকলেও কার্যত বাংলার ভোট ময়দান থেকে ট্রাজিকীয় প্রস্থানই হল মিঠুনের।