হ্যাঁ এমনই এক প্রাচীন ঐতিহ্যের আবাসনের সন্ধান মিলল নদিয়ার কৃষ্ণনগরের চরশম্ভুনগর গ্রামে। জানা যায়, কয়েক যুগ আগে ওই গ্রামে বসবাস করতেন মাত্র ২০০ টি পরিবার, চলছিল ব্রিটিশ রাজত্ব। সেই সময় গোবর্ধন আগরওয়াল নামে এক জমিদার তৈরি করেছিলেন এই আবাসন। সম্ভবত ব্যবহৃত হত কারখানার কর্মীদের আবাসন হিসেবে। গ্রামের প্রবীণদের কথায়, তাঁরা বাবা ঠাকুরদাদের কাছ থেকে শুনতে পেয়েছিলেন এই আবাসনে যাতায়াত করতেন ব্রিটিশরা। সময়ের পরিবর্তনে জমিদারি ধ্বংসের পথে চলে যায় গোবর্ধন আগরওয়ালের। বাধ্য হয়েই আবাসনটি বিক্রয় করে দিয়েছিলেন, পরবর্তীতে ভারত স্বাধীন হওয়ার পরে এই আবাসনে যাতায়াত করতেন সরকারি আধিকারিকরাও, কিন্তু বর্তমানে বিলাসবহুল আবাসনটির কিছুটা ভগ্নদশা শুরু হলেও এখনও এর দর্শন পর্যটকদের কাছে অনন্য।
advertisement
গ্রামবাসীরা জানাচ্ছেন, নদিয়া জেলা নয়, গোটা পশ্চিমবাংলার মধ্যে এই ধরনের প্রাচীন জমিদারি আবাসনের দেখা মেলা বড়ই ভার। প্রত্যন্ত গ্রামের আঁকাবাঁকা পথের চারপাশে রয়েছে খেজুর গাছ, তালগাছ-সহ প্রকৃতির অনন্য সৌন্দর্য। পাশেই বয়ে যাচ্ছে কৃষ্ণনগরের জলঙ্গি নদী। পথ পেরিয়ে আবাসনে ঢুকলেই দেখা যাবে দু’পাশে রয়েছে রানি ভিক্টোরিয়ার আবক্ষ মূর্তি,, আর এটাই প্রমাণ করে দেয় ভিক্টোরিয়ার আদলের ছোঁয়া রয়েছে এই ঐতিহ্য প্রাচীন আবাসনে।
রংবেরঙের পাখিদের কিচিরমিচির ডাক, ফুলের অরণ্য, আরও কত কী! অপূর্ব সুন্দর পরিবেশের মধ্যে দিয়ে খোলা আকাশের নীচে দাঁড়িয়ে রয়েছে অতি প্রাচীন বাংলোটি। তবে লোকমুখে শোনা যায়, বাড়িটি বর্তমানে ‘কোম্পানির বাড়ি’ নামেই পরিচিত, তবে কী কারণে এই নামে পরিচিত, তা অজানা গ্রামবাসীদের কাছে। বর্তমানে চরশম্ভুনগর গ্রামে হাজার হাজার পরিবারের বসবাস। কিন্তু এখনও প্রাচীন ঐতিহ্যের ছোঁয়া রয়েছে এই অতি প্রাচীন আবাসনটিকে ঘিরে। সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়ার পর এখন প্রতিদিন লেগে থাকে পর্যটকদের আনাগোনা, এক প্রকার বলা যেতেই পারে প্রকৃতির সৌন্দর্যের মধ্যে এই আবাসন আরও যেন মনোমুগ্ধকর। ঠিক তেমনই পর্যটকদের মন কেড়ে নেয় ব্রিটিশ আমলের প্রাচীন কারুকাজ।