উলুবেড়িয়ার মধ্যবর্তী গ্রাম নোনা। নোনা গ্রামের বন্দ্যোপাধ্যায় পরিবারের জ্যেষ্ঠ পুত্র যোগীন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়,তাঁর বয়স তখন ১০ বা ১২ বছর। খেলার ছলে নিজে হাতে মাটির দুর্গা প্রতিমা গড়ে পুজোর সূচনা করেছিলেন। যদিও খেলার ছলে মাটির প্রতিমা তৈরি করা, বারণ করতেন তার মা, বলতেন ঠাকুর নিয়ে খেলা করতে নেই। কিন্তু পরবর্তী সময়ে তাঁর হাতে তৈরি বিগ্রহই বাড়িতে পূজিতা হন এবং এখন তা উলুবেড়িয়ার বুকে ঐতিহ্যবাহী শতাব্দীপ্রাচীন একটি পুজো।
advertisement
শতাব্দীপ্রাচীন সেই রীতি আজও অটুট রয়েছে ব্যানার্জি বাড়ির পুজোয়। শুধু প্রতিমা রাখাই নয়, নিত্যসেবাও দেওয়া হয় এই বাড়ির পুজোয়। পাশাপাশি ব্যানার্জি বাড়ির মা দুর্গার আকর্ষণীয় প্রসাদ বা ভোগ হল বেগুনপোড়া, পটলপোড়া এবং পান্তা ভাত। বিজয় দশমীর দিন দেবী দুর্গা পান্তা এবং বেগুন ও পটল পোড়া খেয়ে কৈলাসে পাড়ি দেন। পুরনো রীতি মেনে বিজয়া দশমীতে সিঁদুর খেলার পাশাপাশি ঠাকুর দালানের সামনের উঠানে হয় কাদামাটি। নিয়ম রক্ষায় পরিবারের সমস্ত ছেলেরা ‘কাদা মাটি’ প্রথায় অংশগ্রহণ করে। এমনটাই জানান পরিবারের সদস্য সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়।
যোগীন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত ধরে পুজোর সূচনা, তার বহু বছর পরও বন্দ্যোপাধ্যায় বাড়ির সদস্যরা নিজেরা ঠাকুর গড়ে নিজেরাই পুজো করতেন। তবে এখন প্রতিমা গড়েন মৃৎশিল্পীরা, পুজো করেন ব্যানার্জি পরিবারের সদস্য। এই পুজোর বিশেষ বৈশিষ্ট্য হল দেবী দুর্গা থাকেন প্রায় সারা বছর। পুজোর ঠিক আগে শ্রাবণ মাসে হয় প্রতিমা ভাসান। এই বাড়ির দুর্গাপুজো শুধুমাত্র একটি ধর্মীয় উৎসবই নয়, বরং এটি একটি শতাব্দীপ্রাচীন ঐতিহ্য যা এই অঞ্চলের সাংস্কৃতিক ও সামাজিক জীবনে একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থান অধিকার করে আছে।