মহারানি বিষণকুমারীর বর্ধমানের নবাবহাটে ১০৮ শিবমন্দির প্রতিষ্ঠা করেন। এই মন্দিরের নির্মাণ শুরু হয়েছিল ১৭৮৮ খ্রিস্টাব্দে। শেষ হয়েছিল ১৭৯০ খ্রিস্টাব্দে। সেই সময় বর্ধমান সংলগ্ন নবাবহাট এলাকায় মহামারী দেখা দিয়েছিল। বহু মানুষের মৃত্যু হয়েছিল। স্বজনদের হারিয়ে শোকে মুহ্যমান হয়ে গিয়েছিলেন এই এলাকার বাসিন্দারা। এলাকায় মন্দির গড়ে বাসিন্দাদের ঈশ্বরমুখী করে তাঁদের শোক ভোলাতে চেয়েছিলেন বর্ধমানের মহারানিমা। সেই ভাবনা থেকেই নবাবহাটে এই একশো আট শিব মন্দির গড়েন তিনি।
advertisement
আরও পড়ুন: জ্ঞান ফিরেছে, ডাকলে সাড়া দিচ্ছেন বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য! বেসরকারি হাসপাতাল থেকে স্বস্তির খবর
মহাআড়ম্বরে সেই মন্দির প্রতিষ্ঠা করা হয়। তবে তিনি স্বপ্নে এই মন্দির দেখেন। সেই মতো মন্দির নির্মাণ করান বলেও অনেকে মনে করেন। নামে একশো আট শিব মন্দির। তবে এখানে একশো ন’টি মন্দির রয়েছে। জপমালার মতো আছে একশো আটটি মন্দির। বাকি একটি একটু দূরে, গলার হারে লকেটের মতো। বর্ধমানের একশো আট মন্দিরের খ্যাতি এখন ভারত জোড়া। সারা বছর দেশের বিভিন্ন রাজ্য থেকে ভক্তরা এই মন্দিরে পুজো দিতে আসেন। বর্ধমানের নবাবহাটে প্রায় দুশো তিরিশ বছর আগে এক লক্ষ টাকা ব্যয় করে এই মন্দির গড়েছিলেন।
আরও পড়ুন: বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের শরীরে মিলেছে ‘ক্লেবশিয়েলা’ ব্যাকটেরিয়া, কী এটি? হাসপাতালের বড় আপডেট
জপমালার আদলে ১০৮টি এবং অতিরিক্ত আর একটি, মোট ১০৯টি স্থাপত্যকে গেঁথে প্রতিষ্ঠা করা হয় এই মন্দির। এই মন্দিরমালা বর্ধমানের এক অনন্য শিল্পকীর্তি। এই ১০৯ তম মন্দিরটি প্রতিষ্ঠার সময় সেখানে লক্ষ সাধুর উপস্থিতি ঘটেছিল। তাঁদের পদধূলি রাজপরিবার একটি সোনার কলসিতে সংরক্ষণ করে রেখেছিল।
মন্দিরগুলির গঠন একই রকমের। ওড়িশার বালেশ্বরের মন্দিরের আটচালার নকশার আদলে নির্মিত সেগুলি। মন্দিরগুলির অবস্থান যেমন পাশাপাশি, তেমনি প্রতিটি মন্দিরের সামনেই আছে খোলা টানা বারান্দা। প্রতিটি মন্দিরই একটি দরজার। সব মন্দিরেই রয়েছে কষ্টিপাথরের গৌরীপট্ট-সহ শিবলিঙ্গ। প্রতিষ্ঠার সময়ে সবগুলি মন্দিরের সামনেই একটি করে বেল গাছ রোপণ করা হয়েছিল। এছাড়াও স্নান করার জন্য রয়েছে দুটি পুকুর।
শরদিন্দু ঘোষ