সোশ্যাল মিডিয়ায় যে কাহিনী চর্চা হচ্ছে সেটা একবার জেনে নেওয়া প্রয়োজন। সোশ্যাল মিডিয়া অনুসারে, ১৮৬০ সাল নাগাদ বর্ধমান থেকে সাহেবগঞ্জ পর্যন্ত বেশ কয়েকটি স্টেশন এবং প্ল্যাটফর্ম তৈরি হয়। তারই মধ্যে উল্লেখযোগ্য দুটি স্টেশনের নাম রাখা হয় “ঝাপটের ঢাল”, এবং “পিচকুড়ির ঢাল”। তবে এই দুটি স্টেশন সহ বাকি স্টেশনের নামকরণ হয়ে গেলেও বাকি থেকে যায় শুধুমাত্র একটি স্টেশন। সেই সময় দেশীয় এক কর্মচারী এক ইংরেজ সাহেবের কাছে স্টেশনের নাম কী রাখা হবে সেটা জানতে যান। যেহেতু দুটি স্টেশনের নাম ঢাল দিয়ে হয়েছে, সেকারণে ইংরেজ সাহেব ওই কর্মচারীকে বলেন পুট এনিথিং বাট “নো আদার ঢাল”। ওই কর্মচারী ইংরেজ সাহেবের কথা শুনে চলে যান। কিছুদিন পর ওই স্টেশনের নামকরণ হয় ‘নোয়াদার ঢাল’। তাই অনেকেই মনে করেন “নো আদার ঢাল” থেকে হয়েছে নোয়াদার ঢাল। তবে এই কাহিনীর আসল সত্যতা কী ?
advertisement
আরও পড়ুন: গরিব ছাত্রের জীবনে ত্রাতা হয়ে দাঁড়ালেন মুখ্যমন্ত্রী! চুঁচুড়ার কিশোর বাড়ি ফিরল নতুন জীবন নিয়ে
এই প্রসঙ্গে নোয়াদা গ্রামের বাসিন্দা অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক সুকুমার দাস বৈরাগ্য জানিয়েছেন, “এই কাহিনী সত্য নয়, এটা মজার ছলে অনেকেই বলে। এটা ঠিক নয় আমার বয়স এখন ৭০ বছর। আমার যখন ১০ বছর বয়স ছিল তখন এই স্টেশন হয়েছিল,সম্ভবত ১৯৬৫ সাল। সেই সময় বিকেলে আমরা স্কুল থেকে এসে সহপাঠীদের সঙ্গে স্টেশন তৈরি হওয়া দেখতে যেতাম। আমাদের গ্রামের মধুসূদন কর্মকার স্টেশন বিল্ডিং এবং কোয়াটারের দরজা, জানালা তৈরি করেছিলেন। তিনি এখনও বেঁচে রয়েছেন এবং বয়স প্রায় ৯০ বছর। সম্ভবত ১৯৬৫ সালে স্টেশনের উদ্বোধন হয়েছে।”
সুকুমার বাবুর কথায়, একই সময়ে তিনটি স্টেশন হয়েছিল ঝাপটের ঢাল, পিচকুড়ির ঢাল এবং নোয়াদার ঢাল। নোয়াদা গ্রামের কাছে বলেই এই স্টেশনের নাম নোয়াদার ঢাল হয়েছে। তবে সুকুমার বাবু আরও জানিয়েছেন, ঢাল কথার অর্থ নিচু জায়গা। এবং এই স্টেশন নোয়াদা গ্রাম থেকে অনেকটা নিচু। গ্রাম উঁচু জায়গায় রয়েছে, কখনও বন্যা হয়নি। তাই হয়তো স্টেশন নিচু বলে নোয়াদার সঙ্গে ঢাল জুড়ে হয়েছিল “নোয়াদার ঢাল”। সুকুমার বাবুর মতে এটাই হয়তো ঠিক। তবে নোয়াদার ঢালের “ঢাল” সম্পর্কে তিনি বিশদ বিবরণ দিতে পারবেন না বলেই জানিয়েছেন। কিন্তু তিনি এটা স্পষ্ট করে দিয়েছেন যে সোশ্যাল মিডিয়ায় চর্চিত কাহিনী সম্পূর্ণ গুজব, একটা গল্পকাহিনী।
বনোয়ারীলাল চৌধুরী





