মিল্ক ফিশ সমুদ্রের মাছ। এই মাছ ১৫ বছর বয়স অবধি বাঁচে। পুরুষ মাছ ১.৮ মিটার এবং স্ত্রী মাছ ১.২৪ মিটার অবধি লম্বা হতে পারে। একটি পরিণত মাছের ওজন ১৪ কেজি পর্যন্ত হয়। উপকূলের নোনা জলে এরা স্বচ্ছন্দ। আমাদের দেশে দক্ষিণ ভারতের রাজ্যগুলোয় সমুদ্র উপকূলে মিল্ক ফিশ পাওয়া যায়। আগে পশ্চিমবঙ্গ এবং ওড়িশার উপকূলেও দেখা যেত। এখন এই মাছকে বাণিজ্যিকভাবে চাষ করার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। তবে বলা বাহুল্য, সেইসব উদ্যোগ নোনা জলকে ঘিরেই। তার মানে নদী মোহনা বা খাঁড়ি সংলগ্ন এলাকায়, যেখানে নোনাজল ঢোকানো বা বের করা যায়, সেইসব ভেড়িতে, ঘেড়িতে। সেন্ট্রাল ইন্সটিটিউট অফ ব্র্যাকিশওয়াটার অ্যাকোয়াকালচারের প্রধান কার্যালয় চেন্নাইয়ে এই মাছের বাচ্চা উৎপাদন করা হচ্ছে এবং এই সংস্থার বিজ্ঞানীদের প্রযুক্তিগত পরামর্শে চাষ করা হচ্ছে।
advertisement
স্বাদে দরকার বৈচিত্র। তাই নোনাজলের সীমিত পরিসর থেকে বের করে আনার চেষ্টা বিজ্ঞানীদের। স্বাদু জলে (নোনা নয় এমন জলে), মানে উপকূল এলাকার বাইরে রাজ্যের অন্যান্য এলাকার পুকুর-জলাশয়ে যদি এর চাষ ছড়িয়ে দেওয়া যায়, তাহলেই এই মাছের উৎপাদন বাড়ানো সম্ভব, মাছটিকে জনপ্রিয় করা সম্ভব। সেরকমই একটা উদ্যোগ দেখা গেল হুগলি জেলার খামারগাছিতে অমলেশ মিশ্রের পুকুরে। সেন্ট্রাল ইন্সটিটিউট অফ ব্র্যাকিশওয়াটার অ্যাকোয়াকালচার থেকে এখানে চারা সরবরাহ করা হয়েছে এবং এই সংস্থার কাকদ্বীপ গবেষণা কেন্দ্রের বিজ্ঞানীদের পরামর্শে মিল্ক ফিস চাষ করা হচ্ছে। মাস ছ’য়েক সময়ের মধ্যে একেকটি চারা মাছ ৪০০ গ্রাম ওজনের হয়েছে, যা এক বছরে ৮০০-৯০০ গ্রাম হবে। বিজ্ঞানীদের ধরণা, আগামীদিনে এই মাছ জনপ্রিয়তা পাবে। দাম রুই-মৃগেলের চেয়ে দুই বা আড়াই গুণ। মাছটি খেতে যখন সুস্বাদু, তখন ধরে নেওয়া যেতে পারে তা বাঙালির হেঁসেলে নিশ্চিত ঠাঁই করে নেবে।